অদম্য ইচ্ছা শক্তি আর স্বপ্নযাত্রার নাম ‘যোহা ফ্যাশন’

0

রুনা আহমেদ দোলা বিয়ের প্রথম থেকেই চাকরি করতেন কিন্তু কর্মস্থল দূরে এবং সন্তান হওয়ার কারণে চাকরিটা চালিয়ে যেতে পারেন নি।

চাকরি ছেড়ে দেওয়ার ২ থেকে ৩ বছরের মাথায় এসে স্বামীর বুদ্ধি ও ইচ্ছাতে শুরু করেন অনলাইন বিজনেস। প্রথম দিকে বাসাতেই বসেই কাজ করতেন টুকিটাকি। নিজস্ব কাস্টমার গুলো আসতো কিনতো।

তখন এই উদ্যোক্তার মনে হলো ঘরের মানুষ তো নিবেই আমাকে বাহিরের কাস্টমারের কাছে আমার পণ্য পৌঁছাতে হবে এবং পরে নিজ এলাকায় মিরপুরে একটা রুম নিয়ে কাজ করেন প্রায় এক বছর।

পরিচিতি পাওয়ার পর আর পিছন ফিরে বা হতাশায় পরতে হয়নি এই উদ্যোক্তাকে। ব্যবসা শুরু করেন ২০১৪ সালে মাত্র ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে। বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করেছেন কিন্তু কোথাও থেকে পাননি। তারপরও ব্যবসা থেমে থাকেনি। অদম্য ইচ্ছা শক্তি এবং প্রিয় মানুষের সহযোগিতা সাফল্যের মুখ দেখেছেন রুনা আহমেদ দোলা।

এই ছোট্ট ব্যবসা এখন মিরপুর রংধনু মার্কেটে শো-রুম নিয়ে “যোহা ফ্যাশন হাউজ” এবং যিনি একসময় চাকরি করতেন এখন তিনি চাকরি দেন। শো-রুমে বর্তমানে ৫জন কর্মী কাজ করছেন। আছে নিজস্ব ব্লক ফ্যাক্টরি।

যোহা ফ্যাশন হাউজ এখন অনলাইন, শো-রুম দুটোই একসাথে চালিয়ে যাচ্ছেন। যোহা ফ্যাশন হাউজে মূলত বেবি ড্রেস ও তরুণদের ড্রেস গুলো পাওয়া যায়। যা উদ্যোক্তা নিজেই তৈরি করেন।

কোন বাধার সম্মুখীন হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, ” হ্যাঁ বাধার সম্মুখীন হয়েছি। ব্যাপারটা এমন যে আমি ব্যবসা করবো ঠিক আছে কিন্তু আমি শো-রুমে যেতে পারবো না।বাইরে যেতে পারবোনা।যখন ট্রেনিং করতাম তখন সারাদিন বাইরে থাকা লাগতো সেইটা পরিবারের অনেকের পছন্দ হতো না। পুরো বিষয়টা মেয়ে মানুষ কেন ঘরের বাইরে কাজ করবে এমন।”

কিন্তু এসব বাধা পেরিয়ে এখন রুনা একজন সফল উদ্যোক্তা। বিয়ের পর যৌথ পরিবারে থেকেও যে এমন সফলতা পাওয়া যায় তার উদাহরণ রুনা আহমেদ দোলা।

যোহা ফ্যাশন হাউজে বেবি ড্রেসের সর্বনিম্ন মূল্য ৩০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ মূল্য ১২০০থেকে ১৫০০ টাকা। কিছু ড্রেস আছে যা দুই হাজার টাকা। এবং তরুণদের সর্বনিম্ন পাঁচ’শ টাকা থেকে সর্বোচ্চ দুই তিন হাজার টাকা পর্যন্ত।

তিনি বলেন, ‘‘সাড়া পাচ্ছি ভালোই, কিন্তু আমি যদি ঋণ পেতাম তাহলে ব্যবসাটা গুছিয়ে আর একটু ভালো করে করতে পারতাম। ’’

সব মিলিয়ে রুনা আহমেদ দোলার চাকুরির জীবন আর এখনকার জীবনের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য সবটায় সম্ভব হয়েছে তার স্বামীর জন্য। দু’জন মিলে মিশে কাজ করছেন।সপ্তাহে দু’দিন স্বামীর ছুটি থাকে এবং এই দু’দিন তিনি শো-রুমে বসেন।

যোহা ফ্যাশনকে নিয়ে অনেক দূর এগিয়ে যেতে চান এই উদ্যোক্তা।

বিশ ত্রিশ হাজার টাকাটা এখন ৫ লাখে এসে দাঁড়িয়েছে। স্বপ্ন, ইচ্ছাশক্তি এবং সহযোগিতায় পারেই একটা মানুষের স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতে এমনটাই হয়েছে রুনা আহমেদ দোলার।

খাদিজা ইসলাম স্বপ্না

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here