বুয়েটের তৈরি ব্যাটারিচালিত রিকশা শুরুতে ঢাকার দুই সিটি (ঢাকা দক্ষিণ ও ঢাকা উত্তর) করপোরেশনের পল্টন, ধানমন্ডি ও উত্তরা এলাকায় চালানোর অনুমতি দেওয়া হবে। এর আগে রিকশাচালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পরে চালকেরা লাইসেন্স পাবেন। এরপর তাঁরা ব্যাটারিচালিত রিকশা কিনে নির্ধারিত এলাকার সড়কে চালাতে পারবেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এ কথা জানিয়েছেন। শনিবার ২৮ জুন, দুপুরে গুলশানে ঢাকা উত্তর সিটির নগর ভবনে রিকশাচালকদের প্রশিক্ষণ দিতে প্রশিক্ষক (মাস্টার ট্রেইনার) তৈরির কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
ব্যাটারিচালিত এ রিকশা চালানোর প্রশিক্ষণ দিতে ৩০০ প্রশিক্ষক তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপে শুরু হওয়া তিন দিনের এ প্রশিক্ষণে ২০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
প্রশিক্ষক হতে বাছাই করা ব্যক্তিদের বেশির ভাগই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত থাকা শিক্ষার্থী।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, এখন অবৈধ বলে রিকশাচালকদের যে নিপীড়ন করা হয়, ঘুষ চাওয়া হয়, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তা আর থাকবে না। যারা নতুন রিকশা
(অনুমোদিত) নেবেন, তাঁরা নির্ধারিত রাস্তায় সম্পূর্ণ অধিকার নিয়ে চালাতে পারবেন। কেউ হয়রানি করতে পারবে না।
রিকশাচালকদের জুলাই অভ্যুত্থানের অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আন্দোলনকারীরা যখন আহত হচ্ছিলেন, তাঁদের যথাস্থানে পৌঁছে দেওয়া, হাসপাতালে নেওয়া—এসব
ক্ষেত্রে রিকশাচালকেরা জীবন বাজি রেখে বন্দুকের গুলির সামনে ছিলেন। রিকশাচালকদের প্রতি শ্রদ্ধা হিসেবেই তাঁদের নাগরিক অধিকার দিতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিন এলাকায়
নির্দিষ্টসংখ্যক রিকশার অনুমতি দেওয়া হবে এবং সেগুলো শুধু নির্ধারিত সড়কেই চালানো যাবে।
অনুষ্ঠান থেকে জানানো হয়, ই-রিকশা চলাচলের জন্য নীতিমালা তৈরি হয়েছে; যা সিটি করপোরেশন এলাকায় তিন চাকার স্বল্পগতির ব্যাটারিচালিত রিকশা (ই-রিকশা) চলাচল প্রবিধান, ২০২৫’ নামে পরিচিত হবে। এই নীতিমালায় বিভিন্ন ধারা উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে ই-রিকশা চলাচলে সাধারণ সড়ক ব্যবহার ও যাত্রী পরিবহন নিয়মাবলিতে বলা হয়–তিন চাকার স্বল্পগতির ব্যাটারিচালিত রিকশা (ই-রিকশা) শুধু সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন ও ট্রাফিক পুলিশ বিভাগ নির্ধারিত রাস্তায় চলাচল করবে।
এছাড়া হাইওয়ে, এক্সপ্রেসওয়ে বা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও বাস চলাচলের সড়কে এই ই-রিকশা চলাচল করবে না। সিটি করপোরেশন ও সংশ্লিষ্ট ট্রাফিক পুলিশ বিভাগ অনুমোদিত নয় এমন সড়কে চলাচল করবে না। ফুটপাতে চলাচল কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
ই-রিকশার চালকরা সর্বদা বাম লেনে চলাচল করবে এবং যানজট সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকবে। চালকদের ড্রাইভিং করার সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং জরিমানাযোগ্য অপরাধ।
সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত এলাকার বাইরে ই-রিকশা চলাচল করবে না। দুই জনের বেশি যাত্রী বহন কিংবা অতিরিক্ত ভার বহন করবে না। নিয়ম বহির্ভূতভাবে ওভারটেক এবং লেন পরিবর্তন
করবে না। ই-রিকশায় উচ্চ শব্দের হর্ন বিশেষ করে ৪০ ডেসিবেলের ওপরে হর্ন বাজানো যাবে না।