রপ্তানি বাজারে বাংলাদেশের চামড়া শিল্পের বিপুল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হবে বলে জানিয়ে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন অচিরেই চামড়া শিল্পখাতে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে ‘চামড়া শিল্পনগরী, ঢাকায় ট্যানারি কারখানার চামড়া উৎপাদন পরিস্থিতি ও টেকসই উন্নয়নে প্রস্তাবনা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা জানান।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, সম্পূর্ণ দেশিয় কাঁচামালনির্ভর চামড়া শিল্পের অপার সম্ভাবনা থাকলেও এখনও তা পুরোপুরি কাজে লাগানো যায়নি। আওয়ামী লীগ সরকার ইতোমধ্যে হাজারীবাগ থেকে সাভারের পরিবেশবান্ধব শিল্পনগরীতে ট্যানারি স্থানান্তরে সক্ষম হয়েছে।
চামড়া শিল্পনগরীতে সিইটিপি স্থাপন, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্তের আলোকে অবশিষ্ট কাজগুলোও বাস্তবায়ন করা হবে। এ লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে টিমওয়ার্কের ভিত্তিতে কাজ করছে। অচিরেই চামড়া শিল্পখাতে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
চামড়া শিল্পখাতে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে উল্লেখ করে এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ অগ্রগতির ধারাকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিতে হবে। বিশেষ করে, পাদুকা ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির বিশাল সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। এজন্য টাস্কফোর্স গঠনের পাশাপাশি দেশিয় চামড়া কাজে লাগাতে রাজশাহী ও চট্টগ্রামে দু’টি চামড়া শিল্পনগরি স্থাপনের বিষয়ে সরকার কাজ করছে। তিনি চামড়া শিল্পখাতে বহুমুখী পণ্য উৎপাদন এবং রপ্তানি প্রবৃদ্ধির জন্য দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেন।
বক্তারা বলেন, বর্তমানে বিশ্ববাজারে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের ২২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজার থাকলেও বাংলাদেশ এখাতে মাত্র ১ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করে থাকে। বাংলাদেশ এ শিল্পের কাঁচামালে সমৃদ্ধ উল্লেখ করে তারা রপ্তানি বাড়াতে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী চামড়া শিল্পের উন্নয়নের তাগিদ দেন। এর মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যেই চামড়া শিল্পখাতে ৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির পাশাপাশি এ শিল্পখাতে ৫০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান তৈরি হবে বলে তারা মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) এবং লেদার সেক্টর বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (এলএসবিপিসি) যৌথভাবে সেমিনারের আয়োজন করে। বিটিএ’র চেয়ারম্যান মো. শাহীন আহমেদের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ এবং শিল্পসচিব মো. আবদুল হালিম।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. এ.কে.এম রফিক আহমেদ, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের ( সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য সুলতান আহমেদ ইকবাল, বিল্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম, চামড়া শিল্প উদ্যোক্তা ইঞ্জিনিয়ার মো. আবু তাহের ও টিপু সুলতান আলোচনায় অংশ নেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম. আবু ইউসুফ।