করোনার অবসরে কানিজ ফাতেমার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা

0
উদ্যোক্তা কানিজ ফাতেমা

করোনাকালীন সময়ে অবসরে শুয়ে বসে না কাটিয়ে নারায়ণগঞ্জের হ্যান্ডলুম জামদানী শাড়ি, থ্রিপিস এবং টাংগাইলের শাড়ি অনলাইনে বিক্রি করে সফলতা লাভ করেছেন উদ্যোক্তা কানিজ ফাতেমা এবং তার বড় বোন রুকসানা পারভীন।

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী এলাকার কন্যা রুকসানা পারভীন এবং কানিজ ফাতেমা। বড় বোন রুকসানা পারভীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে বর্তমানে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজিতে(আইইউবিএটি) সিনিয়র লেকচারার হিসেবে কর্মরত। ছোট বোন কানিজ ফাতেমা আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে অর্নাসে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছেন।

করোনা মহামারীর মধ্যেই ২০২১-এর শুরুতে উদ্যোক্তা জীবনে পা বাড়ান কানিজ ফাতেমা।

কোন স্পৃহা আপনাকে উদ্যোক্তা হতে সাহায্য করলো এমন প্রশ্নের জবাবে কানিজ ফাতেমা উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, ‘কোভিড সিচুয়েশনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়াই হাতে অঢেল সময় ছিল,শুয়ে-বসে কাটানো ছাড়া কোন কাজ ছিল না। আমার বাবা যেহেতু ব্যবসায়ী ছিলেন করোনা পরিস্থিতির জন্য তার ব্যবসাও খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না অন্যান্য সময়ের মতো।তখন চিন্তা করি উদ্যোক্তা হবো এতে করে

নিজে তো স্বাবলম্বী হতে পারবো পাশাপাশি এই ফাঁকা সময়ের যথোপযুক্ত ব্যবহারও হবে।এই স্পৃহা থেকেই মূলত উদ্যোক্তা হওয়া।’

কী কী পণ্য নিয়ে কাজ করছেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার এবং বড় আপার দুটি পেজ। একটি মাহানূর এবং অপরটি মাহাদ মার্ট। মাহানূরে নারায়ণগঞ্জের হ্যান্ডলুম জামদানী শাড়ি, থ্রিপিস এবং টাংগাইলের শাড়ি নিয়ে কাজ করছি।জামদানি শাড়ি আমাদের দেশের ঐতিহ্য বহন করে এটি চিন্তা করেই মূলত পণ্য হিসেবে এটি বাছাই করেছি।আমরা নিজেরা নারায়ণগঞ্জের তাঁতিদের কাছে যেয়ে এগুলো তৈরি করে আনি। অল্প সময়েই সারা দেশ থেকে জামদানির ব্যাপক শাড়া পেতে থাকি। এতে আমার আত্নবিশ্বাস আরো বেড়ে যায়। বড় আপার পরামর্শে অল্প সময়ের মধ্যে মাহাদ মার্ট নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আরও একটি পেজ চালু করি আমরা।

যেখানে কাঠের ঘাঁনিতে ভাঙানো সরিষার তেল, কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, তুলশীমালা চাল এবং সব ধরনের গুড়া মশলা পাওয়া যায় যা আমার বোন নিজ হাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজ বাসায় তৈরি করেন।

পুঁজি কতটা গুরুত্বপূর্ণ বলে আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নে কানিজের চটপটে উত্তর ‘পুঁজি অবশ্যই প্রয়োজন তবে সেটির পরিমান অনেক বেশি হতে হবে এটার পক্ষে আমি নই। বরং আমি মনে করি যে কাজ করতে যাচ্ছি তা সম্পর্কে জ্ঞান এবং দক্ষতায় সফল হওয়ার মূল হাতিয়ার। এই দুইটি কাজে লাগিয়ে মাত্র পাঁচ মাসের ব্যবধানে ৩৫ হাজার পুঁজি নিয়ে শুরু উদ্যোগ লাখ টাকা ছাড়িয়েছে।’

দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ কতটা গুরুত্বপূর্ণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রশিক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি নিজেই দক্ষতা বাড়াতে বর্তমানে উই এর মাষ্টার ক্লাসে অংশ নিচ্ছি।এতে আমি উপকৃত হচ্ছি। যাদের সুযোগ আছে তারা যেন অবশ্যই প্রশিক্ষণ নেন এটাই বলবো।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে তিনি জানান “আমার এ উদ্যোগকে বৃহৎ পরিসরে রুপ দিয়ে দেশ এবং দেশের বাইরে দেশের ঐতিহ্য ছড়িয়ে দিতে চায় এবং অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চায়।

যারা ইতোমধ্যে উদ্যোক্তা হয়েছেন বা হতে চাচ্ছেন সে সকল তরুণদের উদ্দেশ্যে কানিজ ফাতেমা বলেন, ‘‘পুঁজি কম থাকলেও থেমে না যেয়ে এগিয়ে যান, শ্রম দিয়ে যান, এতে আস্তে আস্তে আপনি দক্ষ হয়ে উঠবেন আপনার জ্ঞানের ভান্ডার সমৃদ্ধ হবে যার ফলস্বরূপ আপনি সফল হতে পারবেন।’’

তামান্না ইমাম
রাজশাহী ডেস্ক, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here