আজীবন সম্মাননা পেলেন মতিয়া চৌধুরী

0

বেগম মতিয়া চৌধুরী ১৯৪২ সালের ৩০ জুন জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ১০ বছর বয়সে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে নিজেকে ছাত্র রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করেন। ১৯৬২ সালে শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৭ সালে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানসহ সকল প্রগতিশীল ও ছাত্র অধিকার আন্দোলনে সরাসরি অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব প্রদান করে তিনি “অগ্নিকন্যা” খেতাবে ভূষিত হন। ১৯৬৪-১৯৬৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এর নির্বাচিত সাধারন সম্পাদক ছিলেন।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে নিরলস ভাবে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু-কে হত্যার প্রতিবাদ করে তিনি প্রতিবাদ কর্মী হিসেবে এতদসংশ্লিষ্ট কর্মসূচি ও আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন এবং পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রাজনীতির সুষ্ঠু ধারা এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার সকল আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনা ও পরামর্শে বেগম মতিয়া চৌধুরীর উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের কৃষিখাতে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়েছে। কৃষিখাতের এই উন্নয়নের প্রভাবে অর্থনীতির ভিত্তি শক্তিশালী হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়ন ও জাতীয় অর্থনীতির ভিত্তি শক্তিশালী হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়ন ও জাতীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিক বৃদ্ধিতে কার্যকরভাবে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।

১৯৯৬ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-এর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পায়। তিনি ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদের জন্য বেগম মতিয়া চৌধুরীকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব অর্পণ করেন। বেগম মতিয়া চৌধুরী কৃষি খাতকে একটি মজবুত ভিত্তি দেয়ার লক্ষ্যে কার্যকরী ও বাস্তবধর্মী পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ফলশ্রুতিতে সকল কৃষি পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ধান উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে এবং এর স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (এফএও) মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে Ceres Award- এ ভূষিত করে।

বেগম মতিয়া চৌধুরী কৃষকদের মাঝে গুণগত মানসম্পন্ন বীজ সরবরাহ, সারের মূল্য হ্রাস এবং দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সময়মতো কৃষকদের কাছে সার পৌঁছিয়ে দিয়ে এক অনন্য দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন। অতি সাবধানতা ও নিয়ন্ত্রিতভাবে হাই-ব্রীড ও জিএমও প্রযুক্তি গ্রহণপূর্বক কৃষি গবেষণাকে উৎসাহিত করে বহু উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা ছিল তাঁর বড় অবদান।

বেগম মতিয়া চৌধুরী অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ গতিশীল হয়েছে। ডিজিটাল কৃষি ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে “কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্র” স্থাপন করে কৃষকদের ফসল উৎপাদন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দেয়া হচ্ছে, ফলে আজ লক্ষ লক্ষ বেকার যুবক-যুবমহিলা আকৃষ্ট হয়েছে ফসল উৎপাদনে, সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন কর্ম-সংস্থান। এছাড়া তিনি দেশের কৃষকদের মাঝে কৃষি কার্ড প্রবর্তন করে কৃষকদের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ এবং সরকারের সেবা, প্রণোদনা ও আর্থিক সুবিধাদি প্রদানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছেন। কৃষকদের জন্য তাঁর আরও একটি অবদানঃ মাত্র দশ টাকার বিনিময়ে ব্যাংক হিসাব খোলার ব্যবস্থা করা। এতে অতিদরিদ্র কৃষকগণ ব্যাংকিং সেবা গ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন।

কৃষি এখন লাভজনক অভিজাত পেশা হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, কৃষি পেশাতে গ্রামীণ শিক্ষিত যুবক ও নারী উদ্যোক্তা আকৃষ্ট হচ্ছে। কৃষিবান্ধব নীতি, সরকার প্রদত্ত ভর্তুকি, উন্নত মানের ও ঘাত-সহিষ্ণু বীজ সরবরাহ, প্রযুক্তি সহায়তা এবং তা সম্প্রসারণের মাধ্যমে সনাতন কৃষি এখন বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরিত হয়েছে। এসবের সবটাই সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক-নির্দেশনায় ও বেগম মতিয়া চৌধুরীর উদ্যোগে।

দারিদ্র্য বিমোচনের এ আন্দোলনে প্রথম সারির একজন হিসেবে আমরা সবসময় পেয়েছি তাঁকে। পিকেএসএফ আয়োজিত উন্নয়ন মেলা ২০১৯ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পিকেএসএফ এর পক্ষে বেগম মতিয়া চৌধুরীকে দারিদ্র্য বিমোচনে অসামান্য অবদানের জন্য আজীবন সম্মাননা, চেক ও ক্রেস্ট প্রদান করেন।

 

ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here