বাংলা একাডেমিতে সাত দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা শুরু হয়েছে। দেশি কাঁচামালে তৈরি ও দেশের কারিগরদের হাতে বানানো পণ্য মেলায় স্থান পেয়েছে। কাপড়, চামড়া, বাঁশ ও বেতের তৈরি পণ্যের মধ্যে রয়েছে পোশাক, ব্যাগ, জুতা, শতরঞ্জিসহ ঘর সাজানোর নানা জিনিস। আছে মাটির টেপা পুতুলও।
সোমবার ‘বৈশাখী মেলা-১৪৩২’-এর উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।
বৈশাখী মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, “পাহাড় থেকে সমতল, সারা দেশে আজ নববর্ষের আমেজ। বাংলাদেশের মানুষ আজ এক হয়ে পালন করছে নববর্ষ। সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা চলছে সারা দেশে। আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে ফ্যাসিবাদোত্তর বাংলাদেশে দাঁড়িয়েছি। আমরা এই উৎসব ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে চাই।”
উপদেষ্টা আরো বলেন, “বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, হস্তশিল্প, খাদ্যজাত পণ্যের বিদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। উদ্যোক্তারা এই মেলার মাধ্যমে এসকল পণ্য বিদেশে রপ্তানিযোগ্য করে তুলবে। উদ্যোক্তারা যেভাবে ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তাতে আরেকটি শিল্প বিপ্লবের দিকে এগিয়ে যাবে দেশ।”
বৃহস্পতিবার ছিল মেলার ৪র্থ দিন। এদিন বিকেলে মেলা ঘুরে মোটামুটি ভিড় চোখে পড়ে। ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ মেলায় আসেন। মেট্রোরেল থাকায় দূরদূরান্তের মানুষের বেশ সুবিধা হয়েছে।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) ও বাংলা একাডেমির যৌথ উদ্যোগে শুরু হওয়া এ মেলায় কুটির ও কারুশিল্পের পাশাপাশি স্থান পেয়েছে লোকজ বিনোদন। পুকুরপাড়ে শিশুদের জন্য তৈরি হয়েছে কাঠের নাগরদোলা আর স্লিপার। এ জায়গায় ভিড় একটু বেশি।
পাশেই রয়েছে কিছু খাবারের দোকান। সেখানে পরিবার নিয়ে দাঁড়িয়ে সবার জন্য ডাবের পুডিং অর্ডার করেছিলেন আবদুল বাসেত। জানালেন, গরমের জন্য সব খাবারের মধ্যে এটিই তাঁদের পছন্দ হয়েছে।
মেলায় বাংলা একাডেমি মুদ্রিত বইয়ের বিশেষ মূল্যহ্রাসে বিক্রির দোকানও আছে। সেখানে ২০০০ সালের আগে প্রকাশিত বই ৭০ শতাংশ, ২০০১—২০১০ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত বই ৫০ শতাংশ ও ২০১১ থেকে বর্তমান পর্যন্ত প্রকাশিত বই ২৫ শতাংশ ছাড়ে বিক্রি করা হচ্ছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মেলায় এবার সব মিলিয়ে ৯৮টি স্টল রয়েছে। সোমবার পয়লা বৈশাখে মেলা শুরু হয়েছে। চলবে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে।