দেশে প্রথম বারের মতো আয়োজিত ‘ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো-২০১৯’এর পর্দা নামলো। বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে টানা তিন দিনের এ আয়োজন শেষ হল।
বুধবার রাতে রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে অ্যাওয়ার্ড নাইটের মধ্য দিয়ে শেষ হয় আয়োজন।
অনুষ্ঠানে প্রথম বারের মতো ১০ টি স্টার্টআপকে দেওয়া হয় ‘বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট’। বিভিন্ন আবেদন থেকে ৩০ টিকে প্রাথমিক ভাবে পিচিংয়ের জন্য বাছাই করা হয়। সেখানে থেকে শীর্ষ ১০টি স্টার্টআপের প্রতিটিকে দেওয়া হয় ১০ লাখ টাকা করে অনুদান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথীর বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের এক ব্যবসায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রশ্ন করলেন যে- বাংলাদেশতো অর্থনৈতিকভাবে তৈরি পোশাকের ওপর নির্ভরশীল। এরপর কী থাকবে? প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় উত্তর দিয়ে বললেন, আইসিটি। আইসিটিতে আসলেই যে সফলতা আমরা দেখছি তার মাঝে সামনের দিনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় দেখছি। আইসিটির ওপর আস্থা রেখে আমরা বলতে পারি, লক্ষ্য মাত্রার আগেই আমরা এসডিজি অর্জন করব।
সভাপতির বক্তব্যে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, দেশে প্রতিবছর পাঁচ কোটি স্মার্টফোন এবং চার লাখ ল্যাপটপ আমদানি করতে হয়। আমাদের এখানেই পাঁচ কোটি মধ্যবিত্ত গ্রাহক শ্রেণী রয়েছে যা একটি বিশাল মার্কেট। এমন অবস্থায় আমরা শুধু আমদানীকারক দেশ হিসেবে থাকতে চাই না। নিজেদের দেশে এসব ডিভাইস প্রস্তুত করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করতে চাই। আমরা হতে চাই রপ্তানিকারক দেশ, ছড়িয়ে দিতে চাই ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’।
তিনি বলেন, এজন্য যে সব খাতে কাজ করা দরকার সরকারি নীতি সেভাবেই প্রণয়ন করে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। যুব উদ্যোক্তাদের সব স্বপ্ন পূরণ করতে চাই। এ লক্ষ্যে স্টার্টআপের জন্য ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত বরাদ্দ রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে সম্পর্কিত ইমার্জিং টেকনোলজি নিয়ে গবেষণার জন্য প্রধানমন্ত্রী রেখেছেন ৫০ কোটি টাকা।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মাঝে আরও উপস্থিত ছিলেন এক্সপোর সহ-আয়োজক বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হোসনে আরা বেগম, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি শাহীদ-উল-মুনীর, আইসিটি বিভাগের সচিব এনএম জিয়াউল আলমসহ এ খাত সংশ্লিষ্ট শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
এর আগে প্রদশর্নীর শেষ দিনে ছিল নানা ধরণের কর্মসূচি। অনুষ্ঠিত হয়েছে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং চারটি সেমিনার। ৪ টি সেমিনারই অনুষ্ঠিত হয় উইন্ডি টাউন হল রুমে।
সমাপনী দিনের শুরুতেই অনুষ্ঠিত হয় ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি রিস্ক অ্যান্ড অপরচুনিটি’ সেমিনার। ডিজিটাল নিরাপত্তা ঝুঁকি এবং সমাধান নিয়ে এই সেমিনারে প্রধান বক্তা ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম। কি-নোট উপস্থাপন করেন আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রাশেদুল ইসলাম। ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের প্রধান ড. সাইদ আকতার হোসেনের মডারেশনে এতে বক্তব্য রাখেন ৮ জন প্যানেল বক্তা।
বিকেলের সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। এতে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস এবং ঢাকা-২০ (ধামরাই) আসনের সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদ। গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক জাফর ইকবাল। ডেভোটেক টেকনোলজি পার্কের চেয়ারম্যান রায়হান শামসির মডারেশনে কি-নোট স্পিচ দেন ‘সোনালি ব্যাগ’ এর আবিষ্কারক ড. মুবারক আহমেদ খান। বিজিএমইএ’র সভাপতি রুবানা হকসহ আরো পাঁচ জন বক্তা বক্তব্য রাখেন এবং সর্বশেষ সেমিনার মেড ইন বাংলাদেশ -ওয়ে ফরওয়ার্ড অনুষ্ঠিত হয়।অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
সাদিয়া রশ্নি সূচনা ও খাদিজা ইসলাম স্বপ্না