ছাত্রাবস্থায় চিন্তা করেছিলেন কিছু একটা করবেন কিন্তু পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে হয়ে উঠেনি। চাকরিরত অবস্থায় বিয়ে হয়ে যাওয়ায় চাকরি করা হয়নি। বসে থাকতে ভালো লাগছিলো না তাই তখন ভাবলেন কিছু একটা করা উচিত কিন্তু ব্যবসা তো দূরের কথা চাকরি করতেও দেবে না স্বামীর পরিবার। কিন্তু বাধা অতিক্রম করে শুরু করলেন ব্যবসা। নিজের ব্যবসার প্রয়োজনে বিক্রি করলেন বিয়ের গহনা। এতোসব প্রতিকূলতার মাঝেও লাকি আমান হয়েছেন একজন সফল উদ্যোক্তা।
২০১১ সালে লাকি আমান একাই শুরু করেন ব্যবসা। প্রথম দিকে নিজের ডিজাইন করা ড্রেস দিয়ে শুরু করেন। বিভিন্ন মেলায় অংশগ্রহণ করে শুরু করেন ব্যবসা এবং সাড়াও ভালো পান। প্রথম মেলায় সাড়া পাওয়ার পর পরিবারের লোকজন একটু নমনীয়তা দেখান এই উদ্যোক্তার কাজে। সবাই তখন বলেছিলেন যে, ওর যখন ইচ্ছা, কাজও পাচ্ছে তখন ও করুক নিজের মতো করে। কিন্তু নানাবিধ কারণে ব্যবসা বন্ধ করে দেন।
হঠাৎ করে লাকী আমান’র স্বামীর চাকরি চলে যায় এবং লাকী তখন এক বছর পর আবার নতুন করে ব্যবসা শুরু করেন। পুঁজি বলতে নিজের বিয়ের গহনা বিক্রির টাকা দিয়ে শুরু করেন “লাকি’স কালেকশন”। দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে এই উদ্যোক্তার কর্মযজ্ঞ।
শুরুর দিকে পাশে কাউকে না পেলেও এখন পাশে পাচ্ছেন স্বামীকে যিনি অর্থনৈতিক, মানসিক সব রকমভাবে সহায়তা করে যাচ্ছেন। মেলায় নিয়ে যাওয়া নিয়ে আসা থেকে শুরু করে মাঝে মাঝে সাংসারিক দিকটাও সামলান এই উদ্যোক্তার স্বামী এবং এইগুলো করেন চাকরি করার পাশাপাশি। তাছাড়া পাশে পাচ্ছেন বাবা-মা ও বোনকে।
উদ্যোক্তা হবার পরও প্রতিবন্ধকতার শেষ ছিল না জানিয়ে লাকি আমান উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, মেয়ে মানুষ হয়ে কেনো ব্যবসা করতে হবে স্বামী কি দেখে না? নাকি হাত খরচ দেয়না ইত্যাদি রকম কথা শুনতে হয়েছে।
লাকি আমানের স্বপ্নের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমার স্বপ্ন একটা বুটিক শপ থাকবে, ব্যবসায় লাভ-ক্ষতি আছে কিন্তু বুটিকস শপ করতেই হবে এবং আগামী এক বছরের মধ্যেই হবে ইন-শা-আল্লাহ।”
লাকি’স কালেকশনে পাওয়া যায় ড্রেস, ব্যাগ, বেডশিট এবং দেশি, বিদেশী ড্রেস। বেডশিট একদম দেশি এবং নিজের ডিজাইন করা। ব্যাগগুলো বিদেশী প্রোডাক্ট।
ড্রেসের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন মূল্য ৫০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫০০০ থেকে ৭০০০ টাকা। ব্যাগ ৮০০ থেকে ৩০০০ টাকা। বেডশিট ১০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা।
খাদিজা ইসলাম স্বপ্না