নারী পরিচালিত প্রতিষ্ঠান শান্তিবাড়ির গ্যালারি ‘ফ্রিদা কাহ্লো’-তে গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত হলো দিনব্যাপী বিশেষ প্রদর্শনী ‘সেলিব্রেটিং জামদানি- টেক্সটাইল হেরিটেজ এক্সিবেশন’। ঐতিহ্যবাহী জামদানিকে নতুন আঙ্গিকে তুলে ধরতে এই ব্যতিক্রমী আয়োজন করা হয় যা বেশ প্রশংসিত ছিল।
জামদানী – বাঙালির ঐতিহ্যের গর্ব, বুননের শিল্পে এক অনন্য নাম। শতাব্দী পেরিয়ে আজও এই নিখুঁত হাতে বোনা কাপড় মুগ্ধ করে বিশ্বের ফ্যাশন সচেতন মানুষকে। তবে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে এবং উদ্যোক্তাদের হাত ধরে ঐতিহ্যবাহী এই জামদানীতে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা – ফিউশন ডিজাইন ও আধুনিক কাট। ঐতিহ্য ও আধুনিকতার এই মেলবন্ধন জামদানীকে দিয়েছে নতুন পরিচয়, নতুন বাজার।
সেই জামদানিকে ঘিরেই নারীর জন্য প্রতিষ্ঠান শান্তিবাড়ি আয়োজন করে ঐতিহ্যবাহী জামদানি শিল্প ও নারী উদ্যোক্তাদের বিশেষ প্রদর্শনী ‘Celebrating Jamdani’ – A textile heritage Exhibition. – এই প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও গর্ব জামদানী শাড়ি, ডিজাইনার পোশাক, হাতে তৈরি গহনা, ঘর সাজানো সামগ্রী ও রিসাইকেলড আপসাইকেলড পণ্য প্রদর্শনী হয় যা ছিল সবই জামদানি কেন্দ্রীক।
শান্তিবাড়ির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, শারমিন শামস্ উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, শান্তিবাড়ি নারীদের নিয়ে কাজ করে এবং সব সময় চেষ্টা করে ভিন্ন কিছু করার। জামদানি আমাদের ঐতিহ্য, এই ধরনের আয়োজন জামদানি শিল্পকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করতে এবং নারী উদ্যোক্তাদের অনুপ্রাণিত করতে সহায়ক হবে বলে মনে করি।
বৈচিত্র্যময় জামদানী পণ্য নিয়ে এই এক্সিবিশনে ছিলেন বেনে বৌ, পালং খিয়ং এবং বুনিয়া বাই অন ক্লাউড নাইন এন্ড হাফ – এর ৩ উদ্যোক্তা।
মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে শুক্রবার বেলা ১১টায়, দিনব্যাপী এই আয়োজনের উদ্বোধন করেন ইউনেস্কোর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ সুসান ভাইজ ও হেড অব কালচার কিজি তাহনিন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ফ্যাশন ডিজাইনার বিপ্লব সাহা। উপস্থিত ছিলেন সঙ্গীত শিল্পী ও মিউজিক ডিরেক্টর নির্ঝর চৌধুরী।
৪ জুলাই, শুক্রবার – লালমাটিয়ার শান্তিবাড়ির কার্যালয়ে জামদানির এই বিশেষ এক্সিবিশনটির আয়োজন করা হয়। এই আয়োজনের অংশ হতে পেরে উদ্যোক্তারা বেশ আনন্দিত এবং শান্তিবাড়ির এমন আয়োজনকে স্বাগত জানান তারা৷
জামদানীর এই নতুন রূপ শুধু পোশাকে নয়, প্রকাশ পাচ্ছে মানুষের রুচি ও আত্মপরিচয়ে। ফিউশনের ছোঁয়ায় পুরনো ঐতিহ্য হয়ে উঠছে নতুন প্রজন্মের গর্ব ও স্টাইল স্টেটমেন্ট। তবে এই ঐশ্বর্যের ধারাবাহিকতা টিকিয়ে রাখতে হলে দরকার কারিগরের সম্মান, ন্যায্য মূল্য এবং শিল্পের প্রতি সম্মিলিত দায়িত্ববোধ।
সেতু ইসরাত, উদ্যোক্তা বার্তা