শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী নারীদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে ব্র্যাক ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফেডারেশন অব দ্য ডেফ (বিএনএফডি) যৌথভাবে একটি সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করেছে। এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের আওতায় ২০২৫ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ নারীকে প্রশিক্ষিত করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
গত ৩০ জুন ঢাকার বিজয়নগরে বিএনএফডি’র প্রধান কার্যালয়ে এই উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ব্র্যাক ব্যাংকের হেড অব কমিউনিকেশন ইকরাম কবীর এবং বিএনএফডি’র প্রশাসক মোঃ মোশাররফ হোসেন নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন।
এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি ব্র্যাক ব্যাংকের অন্যতম সিএসআর কর্মসূচি ‘অপরাজেয় আমি’-এর অংশ হিসেবে বাস্তবায়িত হয়েছে। বিশেষভাবে শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী নারীদের উপযোগী করে কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়েছে, যাতে তাঁরাও দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পারেন।
প্রশিক্ষণ সফলভাবে সম্পন্ন করার পর প্রতিটি অংশগ্রহণকারীকে একটি করে সেলাই মেশিন প্রদান করা হবে। এতে করে তাঁরা ঘরে বসেই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু করতে পারবেন, অথবা তৈরি পোশাক শিল্পে চাকরির সুযোগও পেতে পারেন। এর ফলে তাঁরা আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পাশাপাশি সমাজের মূল স্রোতে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।
ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও (কারেন্ট চার্জ) তারেক রেফাত উল্লাহ খান বলেন,“সত্যিকারের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি তখনই সম্ভব, যখন আমরা সমাজের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়াতে পারি। এই অংশীদারিত্ব শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী নারীদের দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে সহায়ক হবে, যাতে তাঁরা নিজেরাই নিজের ভবিষ্যৎ নির্মাণে এগিয়ে যেতে পারেন।”
বিএনএফডি’র প্রশাসক মোঃ মোশাররফ হোসেন বলেন,“এই উদ্যোগ আমাদের কমিউনিটির জন্য বাস্তব দক্ষতা ও আয়ের সুযোগ তৈরি করবে। ব্র্যাক ব্যাংককে ধন্যবাদ আমাদের সক্ষমতাকে আরও বিস্তৃত করার জন্য। এই প্রকল্পটি দীর্ঘমেয়াদে শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী নারীদের ক্ষমতায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, পোশাক শিল্পে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ কর্মী হিসেবে এই নারীদের অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী দুই প্রতিষ্ঠানই। এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি তৈরি পোশাক খাতে এক নতুন ধারা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।
সামাজিক উন্নয়ন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনে ব্র্যাক ব্যাংকের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন হচ্ছে ‘অপরাজেয় আমি’। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বাস করে, সমাজের প্রতিটি মানুষ সম্ভাবনার সঠিক বিকাশের সুযোগ পেলে একটি অর্থবহ জীবন যাপন করতে পারেন।