অঢেল সম্পদের মালিক হলেও অনেকটা আড়ালেই থাকতে পছন্দ করেন আর্নল্ট। তাই জেফ বেজোস, বিল গেটস, গৌতম আদানি কিংবা ইলন মাস্ককে একনামে সবাই যেভাবে চেনেন, আর্নল্টকে সেভাবে হয়তো চেনেন না অনেকেই। তা সত্ত্বেও এবারের ধনীদের তালিকায় নিজের স্থানটি ঠিকই নিশ্চিত করেছেন তিনি।
ফ্রেঞ্চ বিলাসবহুল শৌখিন পণ্যের প্রতিষ্ঠান এলভিএমএইচ-এর চেয়ারম্যান আর্নল্ট ব্লুমবার্গ ফোর্বস ম্যাগাজিন ২০২৫ সালের বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছেন এবং তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১৩৯.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। (139.7 billion USD (2025) Forbes
ফরাসি ধনকুবের বার্নার্ড আর্নল্ট; কে তিনি?
১৯৪৯ সালে ফ্রান্সের উত্তরে রুবেইক্সে জন্মগ্রহণ করেন আর্নল্ট। প্যারিসের বিখ্যাত প্রকৌশল স্কুল ইকোল পলিটেকনিক থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর পারিবারিক ব্যবসায়ে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু হয় তার। ব্যবসায়ে ধারাবাহিক পদোন্নতির মাধ্যমে ১৯৭৮ সালে পারিবারিক প্রতিষ্ঠান ফেরেট-স্যাভিনেল (নির্মাণ সামগ্রীর কোম্পানি)-এর চেয়ারম্যান হন তিনি।
এর বছর ছয়েক পরে, আর্নল্ট ফরাসি সরকারের কাছ থেকে দেউলিয়া ঘোষিত টেক্সটাইল কোম্পানি বুসাক সেন্ট-ফ্রেস কিনে নেন। দেউলিয়া ঘোষিত এই টেক্সটাইল গ্রুপ ছিল ফ্রান্সের বিখ্যাত ফ্যাশন হাউজ ক্রিশ্চিয়ান ডয়েরের মালিক। ফলে এই প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণও চলে আসে আর্নল্টের হাতে।
দেনায় জর্জরিত গ্রুপটি আর্নল্টের নেতৃত্বে ধীরে ধীরে তীরে উঠতে শুরু করে এবং এক সময় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিলাসবহুল পণ্যের কোম্পানি হিসেবে জায়গা করে নেয়। লুই ভিটন, ক্রিশ্চিয়ান ডয়ের, হাবলট, লে পার্সিয়ানের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো আর্নল্টের প্রতিষ্ঠান এলভিএমএইচের অন্তর্ভুক্ত।
১৯৮৭ সালে লুই ভিটন এবং মোয়েট হেনেসি নিয়ে এলভিএমএইচ গ্রুপ গঠিত হওয়ার বছর দুয়েক পর, ১৯৮৯ সালে আর্নল্ট এই কোম্পানির শেয়ারের উল্লেখযোগ্য অংশ কিনে নেন। তখন থেকেই তিনি এলভিএমএইচ-এর চেয়ারম্যান ও সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
তিন দশকের বেশি সময় ধরে আর্নল্ট এলভিএমএইচ-কে বিলাসবহুল শৌখিন পণ্যের পাওয়ার হাউসে পরিণত করেছেন। শেম্পেইন, ওয়াইন, ফ্যাশনেবল পোশাক, চামড়াজাত পণ্য, ঘড়ি, গয়না, প্রসাধনী ও পারফিউম পণ্যের এক বিরাট সম্ভার এলভিএমএইচ। বর্তমানে সারাবিশ্বে এলভিএমএইচের সাড়ে ৬ হাজার ৩০৭টি আউটলেট রয়েছে।
শুধু ইউরোপ নয় ১৯৯২ সালে চীনের বেইজিংয়ে লুই ভিটনের শোরুম খুলে এশিয়ার বৃহত্তম বাজারেও নিজের আধিপত্য জানান দেন ইউরোপের এই ধনকুবের।
ব্যক্তিজীবনে বার্নার্ড আর্নল্ট দুবার বিয়ে করেছেন; তার ৫ সন্তান রয়েছে। ব্লুমবার্গের তথ্য অনুসারে, আর্নল্টের পরিবারের প্রত্যেকেই তার প্রতিষ্ঠান এলভিএমএইচ বা এর অন্তর্ভুক্ত কোনো ব্র্যান্ডের ব্যবসায়িক কর্যক্রমের সঙ্গে জড়িত।