বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনে ক্ষুদ্র উদ্যোগের বিকাশ অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সাবেক পরিচালক ড. সেলিম জাহান।
তিনি বলেন, ‘মানুষকে স্বপ্ন দেখাতে হবে, স্বপ্নকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সাহস জোগাতে হবে, স্বপ্নপূরণে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করতে হবে। তবেই দেশে উদ্যোগ উন্নয়ন কার্যক্রম বেগবান হবে, অর্থনীতি আরো শক্তিশালী হবে।’
বুধবার রাজধানীর পল্লি কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ভবনে আয়োজিত ‘স্মল ভেনচারস, বিগ ফিউচার: মাইক্রোএন্টারপ্রাইজ এ্যাজ ইঞ্জিন অব ইনক্লুসিভ গ্রোথ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. সেলিম বলেন, ক্ষুদ্রঋণ উদ্যোগ উন্নয়নের অন্যতম অনুষঙ্গ হলেও ক্ষুদ্র উদ্যোগ ও ক্ষুদ্রঋণ এক কথা নয়। ক্ষুদ্র উদ্যোগ উন্নয়নের জন্য লক্ষিত মানুষের ভাবনা ও চেতনার বিকাশ ঘটাতে এবং সুযোগের বৈষম্য দূর এবং উদ্যোগ উন্নয়নে সমাজের প্রান্তিক জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়নকে উন্নয়নের সমার্থক ভাবার প্রবণতা সঠিক নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন মানে শুধু শিশুদের স্কুলে ভর্তি বৃদ্ধি নয়, বরং তাদের জন্য মানসম্মত শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য সেই শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করাই আসল উন্নয়ন।’
তিনি আরো বলেন, সহিংসতা, সন্ত্রাসকে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করে এবং প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও সম্পদ বরাদ্দের মাধ্যমে দেশে উদ্যোগ উন্নয়নের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। ‘এ বিষয়ে সরকারকে ইতিবাচকভাবে তৎপর রাখতে আমাদের সবাইকে উচ্চকণ্ঠ হতে হবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে পিকেএসএফ চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান বলেন, পিকেএসএফ বর্তমানে দক্ষতা উন্নয়নের জন্য বিবিধ প্রকল্প ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক কর্তৃক সৌদি আরবে আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে পিকেএসএফ-এর একটি প্রকল্পের সাফল্য বিশেষভাবে প্রদর্শন করা হয়।
এছাড়া, জাতিসংঘের কৃষি উন্নয়ন তহবিল ইফাদ-অর্থায়িত পৃথিবীর প্রায় ৭শ’ প্রকল্পের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে পিকেএসএফ-এর আরেকটি প্রকল্প। এগুলো বিশ্বমঞ্চে দেশের সম্মান বৃদ্ধি করেছে।
স্বাগত বক্তব্যে পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের বলেন, দেশের প্রায় ৪০ লাখ ক্ষুদ্র উদ্যোগে অর্থায়ন করছে পিকেএসএফ। বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় অতিরিক্ত অর্থায়ন, কারিগরি সহায়তা ও প্রযুক্তি স্থানান্তরের মাধ্যমে ভ্যালু চেইন উন্নয়ন, মূল্য সংযোজিত সনদায়িত পণ্য উৎপাদন ও বিপণনে বিস্তৃত সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
‘দেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম করে তোলার জন্য ক্ষুদ্র উদ্যোগসমূহের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পিকেএসএফ এর উদ্যোগ উন্নয়ন কার্যক্রম সম্প্রসারণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।’ড
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন আইএনএম-এর নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তফা কে. মুজেরী, বিআইডিএস-এর গবেষণা পরিচালক ড. কাজী ইকবাল, এবং এমআরএ’র নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ ইয়াকুব হোসেন।





