দেশীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে দৃশ্যমানতা নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। বিশেষ করে ঐতিহ্যবাহী ও ভৌগোলিক নির্দেশক (GI) পণ্যের উৎপাদকরা আরও বড় পরিসরে ক্রেতার কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
এই সীমাবদ্ধতা শুধু উদ্যোক্তাদের আয় নয়, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও শিল্পকর্মকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের দক্ষ কারুশিল্পী ও উৎপাদকরা জাতীয় পর্যায়ের মেলা ও প্রদর্শনীর সুযোগ পেলেই তাদের বিক্রয় বৃদ্ধি পায়, নতুন বাজার তৈরি হয়, এবং পণ্যের পরিচিতি ছড়িয়ে পড়ে।
এ বাস্তবতায় বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) আয়োজন করেছে “বিসিক বিজয় মেলা–২০২৫”। আজ সকাল ১১টায় বিসিক ভবন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে মেলার উদ্বোধন করেন বিসিক চেয়ারম্যান জনাব মোঃ সাইফুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিসিকের সম্মানিত পরিচালকবৃন্দসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মেলায় এবার দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মোট ৬০ জন উদ্যোক্তা অংশ নিয়েছেন। এখানে প্রদর্শিত হচ্ছে জামদানি, শতরঞ্জি, মনিপুরী শাড়ি, নকশী কাঁথা—এসব ঐতিহ্যবাহী GI পণ্যের আকর্ষণীয় সংগ্রহ। একইসাথে রয়েছে চামড়াজাত, পাটজাত, বস্ত্রজাত সামগ্রী, হস্ত ও কারুশিল্প পণ্য, গহনা, বুটিক্স সামগ্রীসহ নানান উদ্ভাবনী পণ্য।
দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে বিশেষ শীতকালীন খাবারের আয়োজন—পিঠা-পুলি, খাঁটি মধু, সরিষার তেল, ঘি, ঘরে তৈরি আচারসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাদ্য।
মেলার মাধ্যমে উদ্যোক্তারা তাদের পণ্যের ব্র্যান্ডিং, সরাসরি ক্রেতার সাথে যোগাযোগ, বাজার সম্প্রসারণ এবং নতুন ব্যবসায়িক সুযোগ তৈরির সম্ভাবনা পাচ্ছেন। পাশাপাশি দর্শনার্থীরা পাচ্ছেন বাংলাদেশের গ্রামীণ শিল্প, ঐতিহ্য ও কারুশিল্পকে কাছ থেকে দেখার ও কেনার সুযোগ।
বিজয়ের মাস উদযাপনের অংশ হিসেবে আয়োজন করা এই মেলা ০১–০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত।
দেশীয় শিল্পকে এগিয়ে নিতে এবং উদ্যোক্তা বিকাশে ভূমিকা রাখতে বিসিক সকলকে মেলায় এসে আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।





