দেশে ২৪তম বারের মতো আয়োজিত হতে যাচ্ছে ৩৭টি দেশের অংশগ্রহণে তৈরি পোশাকশিল্প ও বস্ত্র খাতের প্রদর্শনী। ১০ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে চার দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী হবে। প্রদর্শনীর আয়োজন করছে সেমস–গ্লোবাল।
সেমস–গ্লোবালের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাজধানী ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে প্রদর্শনীসমূহ আয়োজন সম্পর্কিত একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহেরুন এন ইসলাম।
তৈরি পোশাকশিল্প ও বস্ত্র খাতে নিয়ে এই প্রদর্শনীতে আলাদাভাবে ‘২৪তম টেক্সটেক বাংলাদেশ ২০২৫ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো’, ‘২৪তম ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইয়ার্ন অ্যান্ড ফেব্রিক শো ২০২৫-সামার এডিশন’ ও ‘৪৮তম ডাই অ্যান্ড কেম বাংলাদেশ ২০২৫ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো’—একই ভেন্যুতে মোট তিনটি প্রদর্শনী আয়োজিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এসব প্রদর্শনী সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ আয়োজিত টেক্সটাইল সিরিজ অব এক্সিবিশনের একটি অংশ। প্রতিবছর বাংলাদেশ, ব্রাজিল, মরক্কো, থাইল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কায় এই প্রদর্শনী হয়। এবারের প্রদর্শনীতে ৩৭টি দেশের ১ হাজার ৪৭৫টি কোম্পানি অংশ নেবে। টেক্সটাইল ও অ্যাপারেলস যন্ত্রাংশ, সুতা (ইয়ার্ন), কাপড় (ফেব্রিক), ট্রিমস (বোতাম, জিপার ও লেইসের মতো অলংকরণ), অ্যাকসেসরিজ (আনুষঙ্গিক উপকরণ), রং উপকরণ (ডাইস্টাফ) ও তৈরি পোশাক খাতে রাসায়নিকের (টেক্সটাইল কেমিক্যালস) নানা পণ্য নিয়ে প্রদর্শনী আয়োজিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সেমস–গ্লোবালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহেরুন এন ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের এই আয়োজন এশিয়ার মধ্যে তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের সবচেয়ে বড় পণ্য সংগ্রহ ও সরবরাহ প্রদর্শনীতে (সোর্সিং এক্সিবিশনে) পরিণত হয়েছে। ১৯৯৯ সালে সেমস–গ্লোবাল মাত্র ৩০টি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে যাত্রা শুরু করেছিল। এখন এই প্রদর্শনীতে এশিয়া, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।’
মেহেরুন এন ইসলাম আরও বলেন, ‘তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতে এই আয়োজন ব্যবসায়ী পর্যায়ে যোগাযোগের (বিটুবি) বড় সুযোগ। প্রদর্শনীতে ব্যবসায়ীরা সারা বছরের জন্য তাদের প্রয়োজনীয় ফেব্রিক, রাসায়নিক, মেশিনারি ও কাঁচামাল এখান থেকেই সংগ্রহ করতে পারছেন। আগে এসব পণ্যর জন্য বিভিন্ন দেশে যোগাযোগ করতে হতো। নমুনা আনাতে হতো। ফলে এখন সময় ও অর্থ—উভয়ই বেঁচে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকেরা জানান, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের পরিবেশবান্ধব কারখানার দিক থেকেও শীর্ষে। বিশ্বের সেরা ১০টি পরিবেশবান্ধব কারখানার মধ্যে ৭টি বাংলাদেশে। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে পরিবেশবান্ধব কেমিক্যাল, ডাই ও ফেব্রিক ব্যবহারের বিষয়টি এখন গুরুত্ব পাচ্ছে। তাই প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বেছে নেওয়ার সময়ও এ দিকটিও গুরুত্ব দেওয়া হয়।
আয়োজকেরা আরও জানান, চার দিনব্যাপী আয়োজনে থাকছে পাঁচটি আন্তর্জাতিক সেমিনার। ‘ফাইভ জি, ক্লাউড অ্যান্ড বিয়ন্ড: শেইপিং অ্যা সাসটেইনেবল আরএমজি ইন্ডাস্ট্রি’, ‘ইউএস রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ অ্যান্ড ইটস আফটারম্যাথ’, ‘ইন্টেগ্রিটিং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইনটু বাংলাদেশ আরএমজি অ্যান্ড ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি: অপরচুনিটিজ অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস’, ‘ফ্রম ওয়েস্ট টু ওয়েলথ: সার্কুলার ইকোনমি সলিউশন ফর দ্য টেক্সটাইল ভ্যালু চেইন’ ও ‘হাউ আলিবাবা ডটকম সাপোর্টস এক্সপোর্টার্স ইন রিচিং ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটস’ শীর্ষক এই সেমিনারগুলো প্রদর্শনীতে আয়োজিত হবে।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সেমস–গ্লোবাল গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস এস সারওয়ার, নির্বাহী পরিচালক তানভীর কামরুল ইসলাম ও পরি
চালক অভিষেক দাস।





