Homeস্মার্ট লকারে শহরের স্মার্ট ডেলিভারি—‘ডিজিটাল বক্স’ থেকে পণ্য, খাবার ও ব্যাংক সেবা

স্মার্ট লকারে শহরের স্মার্ট ডেলিভারি—‘ডিজিটাল বক্স’ থেকে পণ্য, খাবার ও ব্যাংক সেবা

মেট্রো স্টেশনের পাশে কিংবা ব্যস্ত নগরীর কিছু জায়গায় আপনি নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন ছোট ছোট বাক্সের সারি। দেখতে অনেকটা ব্যাংকের লকারের মতো। কিন্তু এগুলো আসলে এক নতুন ধরণের স্মার্ট সেবা—‘ডিজিটাল বক্স’।

কী এই ডিজিটাল বক্স?

স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান ডিজিবক্স দেশের নানা প্রান্তে বসিয়েছে এই ইন্টারনেট-চালিত স্মার্ট লকার। গ্রাহকরা নির্ধারিত সময়ে এই লকার থেকেই পণ্য, খাবার বা ব্যাংকিং সামগ্রী সংগ্রহ করতে পারেন—সরাসরি কাউকে না দেখে বা ফোন না করেই।

কে ব্যবহার করছে এই লকার?

বর্তমানে দারাজ বাংলাদেশ, ব্র্যাক ব্যাংক এবং ওয়ান থাউজেন্ড ফিক্স সার্ভিসেস এই স্মার্ট লকারের সুবিধা নিচ্ছে। গত দুই বছরে এসব লকারের মাধ্যমে গ্রাহকের হাতে পৌঁছেছে ৬ লক্ষাধিক পণ্য।

ডিজিবক্স মেট্রো স্টেশনসহ দেশের ৫২টি স্থানে দারাজের জন্য, ৫টি স্থানে ওয়ান থাউজেন্ড ফিক্স সার্ভিসেসের জন্য এবং ব্র্যাক ব্যাংকের জন্য আরও ১০০টি স্থানে লকার বসানোর পরিকল্পনা করছে।

কীভাবে কাজ করে এই সেবা?

দারাজ থেকে কেনাকাটার সময় গ্রাহক চাইলে ‘ডিজিটাল বক্স’ সিলেক্ট করতে পারেন।তিন দিনের মধ্যে পণ্য পৌঁছে দেওয়া হয় নির্ধারিত লকারে। গ্রাহকের ফোনে একটি পাসওয়ার্ড পাঠানো হয়। লকারের পাশে থাকা টাচস্ক্রিনে সেই পাসওয়ার্ড টাইপ করলেই খুলে যাবে লকার, মিলবে পছন্দের পণ্য।

কেন এই সেবা জনপ্রিয় হচ্ছে?

ব্যস্ত নগরজীবনে অনেকেই বাড়িতে ডেলিভারি নিতে পারেন না। এই স্মার্ট লকারে রাখা পণ্য যেকোনো সময় সংগ্রহ করা যায় (স্টেশনের সময়সীমার মধ্যে) ঝামেলাবিহীন এবং নির্ভরযোগ্য।

বিশেষ অ্যাপ্লিকেশন: ব্যাংক ও সার্ভিসিং সেবা

ব্র্যাক ব্যাংক এই লকার ব্যবহার করছে চেকবই, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড পৌঁছানোর জন্য।

ওয়ান থাউজেন্ড ফিক্স সার্ভিসেস লকার ব্যবহার করছে আইটি পণ্য (কম্পিউটার, ল্যাপটপ) মেরামতের জন্য—গ্রাহক রেখে যান, প্রতিষ্ঠান মেরামত করে আবার লকারেই রেখে দেয়।

খাবার ডেলিভারিতেও ‘ডিজিফুডস’

ডিজিবক্স সম্প্রতি খাবারের ডেলিভারিও চালু করেছে।ফখরুদ্দিন বিরিয়ানির সঙ্গে অংশীদারিত্বে প্রতিদিন সরবরাহ হচ্ছে প্রায় ১,০০০ প্যাকেট খাবার। লক্ষ্য: তা দশ হাজার প্যাকেটে পৌঁছানো।

স্থানীয় উদ্ভাবন, বিশ্বমানের সুবিধা

ডিজিবক্সের চেয়ারম্যান মোরশেদুল আলম চাকলাদার জানান,‘প্রথমে কাঠের লকার দিয়ে শুরু করেছিলাম, পরে স্টিলের ডিজিটাল বক্স তৈরি করি। সফটওয়্যারসহ সবকিছুই এখন দেশীয় প্রযুক্তিতে হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই সেবা মানুষের সময়, শ্রম ও ঝামেলা বাঁচাচ্ছে—আমরা প্রতিটি জেলায় এই পরিষেবা পৌঁছে দিতে চাই।’

এই ডিজিটাল লকার ব্যবস্থা শুধু ডেলিভারিকে সহজ করছে না, বরং নগরবাসীর জীবনযাত্রাকে আরও স্মার্ট ও প্রযুক্তিনির্ভর করে তুলছে। বাংলাদেশের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে ভবিষ্যতের নগর ব্যবস্থার একটি উদাহরণ হয়ে উঠছে।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments