Homeউদ্যোক্তা মেলাসফলভাবে শেষ হলো ৬ষ্ট পেপার টেক এক্সপো ২০২৫

সফলভাবে শেষ হলো ৬ষ্ট পেপার টেক এক্সপো ২০২৫

বাংলাদেশের কাগজ ও পাল্প শিল্পের অন্যতম বৃহৎ আয়োজন পেপার টেক এক্সপো ২০২৫ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার বসুন্ধরা (ICCB)-এর তিনটি হলে আয়োজিত এই মেলায় বিশ্বের ১৬ টি দেশের ৩৫০টি খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ও পণ্য প্রদর্শন করে।

বাংলাদেশ এক্সিবিশন প্রাইভেট লিমিটেড (BEPL)-এর আয়োজনে এবং বাংলাদেশ পেপার মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এই এক্সপোতে পাল্প, পেপার, টিস্যু, প্যাকেজিং, প্রিন্টিং এবং সংশ্লিষ্ট শিল্পের সর্বশেষ প্রযুক্তি তুলে ধরা হয়। অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, জার্মানিসহ আরও অনেক দেশ ছিল।

তিন দিনের এই এক্সপোতে কাগজ ও টিস্যু মিলের অত্যাধুনিক মেশিনারি, কেমিক্যাল রিকভারি প্ল্যান্ট, পরিবেশবান্ধব উৎপাদন প্রযুক্তি এবং স্মার্ট ম্যানুফ্যাকচারিং সিস্টেমের প্রদর্শনী দর্শনার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। বিশেষ করে, প্যাকেজিং সল্যুশন ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য কাঁচামালের প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়।

এবারের এক্সপো নিয়ে আয়োজকরা বেশ সন্তুষ্ট। বাংলাদেশ এক্সিবিশন প্রাইভেট লিমিটেড (BEPL)-

এর অপারেশন ম্যানেজার, হাবিবুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশের কাগজ ও পাল্প শিল্পকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যেতে আমরা এ ধরনের আয়োজন করে থাকি। এবারের এক্সপোতে দর্শনার্থী, ক্রেতা ও এক্সিবিটরদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। আগামী বছর আমরা আরও বড় পরিসরে এক্সপো আয়োজনের পরিকল্পনা করছি, যাতে আরও নতুন প্রযুক্তি ও সম্ভাবনার দুয়ার উন্মুক্ত হয়।”

এবারের এক্সপোতে অংশগ্রহণ করা প্রতিষ্ঠানগুলো বেশ ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। এক্সপোতে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বলেন, “আমরা আমাদের নতুন প্রযুক্তি ও মেশিনারিজ প্রদর্শনের জন্য এই প্ল্যাটফর্মকে খুবই কার্যকর মনে করছি। দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ পেয়েছি, যা আমাদের ব্যবসার প্রসারে সাহায্য করবে।”

তারা আরও বলেন,”বাংলাদেশের কাগজ শিল্পের উন্নয়নে এ ধরনের এক্সপো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এখানে আমাদের টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পণ্যগুলো প্রদর্শন করেছি, যা ভবিষ্যতে এই খাতের জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে।”

এই এক্সপোতে এসে নতুন প্রযুক্তি ও উৎপাদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরে। ক্রেতা ও দর্শনার্থীরাও এই এক্সপো নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত। ইকু পেপার মিলের সিইও মোঃ ইরফান আলম ইকু বলেন, “আমি এখানে নতুন কিছু সরঞ্জাম ও কাঁচামাল সম্পর্কে জানতে পেরেছি, যা আমার ব্যবসার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে। আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করার সুযোগও পেয়েছি।”

বিশ্বের অন্যতম বড় পেপার মেশিন রফতানিকারক দেশ চীনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এই এক্সপোতে অংশ নেয়। চীনের প্রতিনিধিরা বলেন, “বাংলাদেশের বাজার দিন দিন বড় হচ্ছে, এবং এখানকার শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো এখন উন্নত প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকছে। আমরা আমাদের অত্যাধুনিক পেপার মেশিনারি ও প্রযুক্তি এখানে প্রদর্শন করেছি এবং ভালো সাড়া পেয়েছি। আশা করি, ভবিষ্যতে এই বাজার আরও বিস্তৃত হবে।”

১০ই ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এই এক্সপো শেষ হয় ১৩ই ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭টায়। আয়োজকরা জানান, আগামী বছর আরও বড় পরিসরে এক্সপো আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে আরও আধুনিক প্রযুক্তি ও নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান যুক্ত হবে।

এই আয়োজন শুধু কাগজ শিল্পের উন্নয়নই নয়, বরং সবুজ প্রযুক্তি, টেকসই উৎপাদন ও নতুন ব্যবসায়িক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। আগামী এক্সপোর জন্য আগ্রহী দর্শনার্থী ও ব্যবসায়ীরা অপেক্ষায় রয়েছেন।

হাবিবুর রহমান, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments