চায়ের রাজধানী খ্যাত পর্যটন এলাকা মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ‘হারমোনি ফেস্টিভ্যাল’। পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করতে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে ২৬টি জনগোষ্ঠীকে নিয়ে শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) শুরু হয় ‘হারমোনি ফেস্টিভ্যাল’।
শ্রীমঙ্গলের কাকিয়াছড়া চা বাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুখ্য সচিব বলেন, ‘প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের মাঝে এখানে মানুষের যে বৈচিত্র্য আছে, তার একটা মেলবন্ধন তুলে ধরে এখানে পর্যটনকে বিকশিত করা যেতে পারে। পৃথিবীজুড়ে যেখানে এমন প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য আছে সেখানে “ইকো ট্যুরিজম” নামে একটা বিশেষ নাম আছে। অর্থাৎ প্রকৃতি নির্ভর ট্যুরিজম এবং এটা সম্প্রদায়ভিত্তিক (কমিউনিটি বেইজড)। তাই প্রকৃতির মাঝে যে মানুষরা থাকেন, তাদের সম্পৃক্ত করতেই মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এই ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করা হয়েছে।’
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোহাম্মদ জাবেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন– বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মিজ নাসরিন জাহান, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা উন নবী, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায় প্রমুখ।
তিন দিনব্যাপী ফেস্টিভ্যালে ৪০টি স্টলে মণিপুরী, খাসিয়া, গারো, ভূমিজ, ত্রিপুরাসহ ২৬টি নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর জীবনাচার, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যসহ উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য স্থান পেয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের সম্মানে রাধারমণের গানে ধামাইল নৃত্য পরিবেশন করেন শিল্পীরা। পাশাপাশি গারো ও খাসিয়া সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী নৃত্যও পরিবেশন করা হয়।
খাসিয়া জনগোষ্ঠীর পান নিয়ে পরিবেশনা, ত্রিপুরাদের কোমর তাঁত, মণিপুরীদের লাইভ তাঁত, চা ও রাবার প্রসেসিং, হোমস্টে, কুমারদের লাইভ মাটির জিনিসপত্র উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ।
দেশ-বিদেশের ভ্রমণপিপাসুদের কাছে মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি, তাদের ব্যবহৃত পণ্য প্রদর্শন ও বিপণনের লক্ষ্যে এ মেলা আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার শুরু হওয়া হারমোনি ফেস্টিভ্যাল আগামীকাল রোববার সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।