বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত শিল্পবান্ধব নীতির জন্য জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান বেড়েই চলেছে বলে জানিয়েছেন শিল্প সচিব মো. আবদুল হালিম।
রোববার রাজধানীর উত্তরায় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (স্কিটি) বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের বার্ষিক সম্মেলন-২০১৯ এ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের সরকার গৃহীত শিল্পবান্ধব নীতির জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান বেড়েই চলেছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বাংলাদেশ ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হয়েছে। প্রবৃদ্ধির সর্বশেষ এ চিত্র প্রমাণ করে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ কোনো স্বপ্ন নয়, এটি একটি অবশ্যম্ভাবী বাস্তবতা।
শিল্প সচিব বলেন, ইতিমধ্যে আমরা জাতিসংঘের মানদণ্ডে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে এবং বিশ্বব্যাংকের মূল্যায়নে নিম্ন-মধ্যম আয়ের রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি। জনগণের মাথাপিছু আয় বেড়ে ১৯০৯ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। ক্রয় ক্ষমতার বিবেচনায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৪৩কম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাম্প্রতিক মূল্যায়নে বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়।
আবদুল হালিম বলেন, দীর্ঘ ঐতিহ্যের পথ পাড়ি দিয়ে বিসিকের কৌশলী ভূমিকার ফলে জিডিপিতে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পখাতের অবদান ক্রমেই শক্তিশালী হচ্ছে। কর্মসংস্থান, রপ্তানি আয়,ভেলু এডিশন, পণ্য বৈচিত্রকারণসহ গুণগত শিল্পখাতের বিকাশে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প খাতের ভূমিকা বাড়ছে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষার-২০১৯ এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে জিডিপিতে ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পখাতে অবদান ২৮ দশমিক ২১ শতাংশ। এরমধ্যে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পখাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ২৬ শতাংশ।
বিসিকের পরিচালক (প্রযুক্তি) যুগ্ম-সচিব ড. মোহা. আব্দুস ছালাম বলেন, বিসিকের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সেবা এবং নীতি সহায়তায় বর্তমানে দেশে প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার ক্ষুদ্র শিল্প এবং ৮ লাখ ৫৫ হাজার কুটির শিল্প গড়ে ওঠেছে। এসব ক্ষুদ্র ও কটির শিল্পে এ পর্যন্ত ৩৮ লাখ ৬৪ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। পরোক্ষভাবে এর মাধ্যমে বহুলোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে । এলাকা ভিত্তিক শিল্প সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বিসিক দেশের বিভিন্ন স্থানে ইতিমধ্যে ৭৬টি শিল্পনগরী স্থাপন করেছে। শিল্পনগরীগুলোতে এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৭৩১টি শিল্প কারখানা স্থাপিত হয়েছে এবং ৫ লাখ ৯০ হাজার লোক কর্মরত আছেন।
তিনি বলেন, বিসিকি শিল্প নগরীর কারখানাগুলোতে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৫০ হাজার ৬৮২ কোটি টাকার পণ্য সমগ্রী উৎপাদিত হয়েছে। শিল্পনগরীগুলোতে এ পর্যন্ত ৯৪৬টি সম্পূর্ণ রপ্তানিমুখী শিল্প গড়ে উঠেছে। গত অর্থ বছরে এসব শিল্প প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত ২৪ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে। এছাড়া, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিসিক শিল্পনগরীর কারখানাগুলো থেকে সরকার ২ হাজার ৩৭ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছে।
খাদিজা ইসলাম স্বপ্না