HomeUncategorizedলেদার শিল্পকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরছেন উদ্যোক্তা রিগান

লেদার শিল্পকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরছেন উদ্যোক্তা রিগান

বাবা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, পরিবারের ইচ্ছা ছিল লেখাপড়া শেষ করে ছেলে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় একটা চাকরি করবে। কিন্তু রিগানের ঝোঁকটা ছিল ব্যবসার প্রতিই। তাই সরকারী তিতুমীর কলেজে সমাজকর্মে অনার্স আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকল্যাণে মাস্টার্স করার পরও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন উদ্যোক্তা হিসেবে।

ব্যবসা যেহেতু করবেন তাই শুরুতে উত্তরার ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প থেকে উদ্যোক্তা উন্নয়নে উপর কোর্স সম্পন্ন করেন, ওখান থেকেই ব্যবসা শুরুর কলাকৌশল শিখেন।

লেদার শিল্প বাংলাদেশের অনেক সম্ভাবনাময় শিল্প। ক্রেতারা নিত্য নতুন জুতা ব্যবহার করে। নতুন নতুন ডিজাইনের জুতা পড়তে পছন্দ করে। তাইতো উদ্যোক্তা শাহিদুল হক রিগান গড়ে তুললেন
‘ভিজিক্স লেদার কালেকশন’।

কেন লেদার ব্যবসায় আসলেন? জানতে চাইলে উদ্যোক্তা বার্তাকে রিগান বলেন: আমাদের দেশে ফুটওয়ারের যে সেক্টর আছে,তার সম্ভাবনাময়। কোরবানীর ঈদে দেখা যায় একজন ব্যক্তি এক লাখ টাকা দিয়ে পশু কিনে কোরবানীর পর সেই চামড়া বিক্রি হয় চার থেকে পাঁচশত টাকায়। অথচ সেই চামড়া দিয়ে এই যে জুতা তৈরি করা হয় তার দাম হয় তিন থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত বা জায়গা ভেদে আরো বেশি হয়।এই চিন্তা থেকেই মাথায় চিন্তা আসলো ফুটওয়ারের পণ্য গুলো তৈরি করব।

প্রথমে ছোট্ট একটা শোরুম দিলেন উদ্যোক্তা,প্রথমে সাপ্লাইয়ারের কাছ থেকে পণ্য নেওয়ার শুরু করেন তিনি। কিন্তু তারা তেমন একটা পণ্য কোয়ালিটি ধরে রাখতে পারেন না। পরে নিজেই প্রোডাকশন শুরু করলেন ছোট্ট একটা কারখানা দিলেন বেশ কিছু দক্ষ- অদক্ষ কারিগর নিয়োগ দিলেন এতে প্রোডাকশনের অবস্থা আরো ভালো দাঁড়ালো।

জুতার এতো প্রোডাকশন হয় এতে করে একটা শোরুম দিয়ে চালানো কঠিন হয়ে পড়ে উদ্যোক্তার,দ্বিতীয় শাখা উদ্বোধন করেন। প্রথম শাখা ভাটারার নতুন বাজারে আর দ্বিতীয় শাখা শাহজাদপুরে।

বর্তমানে তার কারখানাতে ৩০ জন কর্মী আছে।তারা দক্ষতার সাথে কাজ করে চলেছে,পাশাপাশি তিনি নিজেও নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন।তাদের হাতের ছোঁয়ায় লেদার শিল্প এগিয়ে যাচ্ছে।

দুই শোরুমে কর্মরত সেলসম্যান আছেন ১২ জন। সবকিছু মিলিয়ে ব্যবসার ভালো অবস্থান।বাজারে চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা বেশি তাই উদ্যোক্তা চেষ্টা করছে আরও একটা আউটলেট দেওয়ার জন্য।

রিগান উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, ‘‘লেদার নিয়ে আরো পরিকল্পনা আছে এটা শুধু ঢাকা শহরের মাঝে সীমাবদ্ধ রাখতে চান না, বিভাগীয় শহরেও আউটলেট চালু করতে চান।’’

উদ্যোক্তার বিশাল লেদার ভূবনে তৈরি হয় যে পণ্য তৈরী হয়- খাঁটি চামড়ার সু,বেল্ট, লোফার জুতা,
নারীদের হ্যান্ড ব্যাগ মানিব্যাগ, ছেলেদের অফিয়াল ব্যাগ, নারীদের বিভন্ন ধরনের জুতা, বাচ্চাদের জুতা, ছোট বড় ম্যানি ব্যাগ, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ছেলে-মেয়ে দের বিভিন্ন ধরনের জুতা,নতুন নতুন ডিজাইনের জুতা, ম্যানি ব্যাগ, উদ্যোক্তার শোরুমের ডিসপ্লে তে শোভা পাচ্ছে।ঈদকে সামনে রেখে এক্সক্লুসিভ পণ্যও আছে উদ্যোক্তার ভান্ডারে।

লেদার দিয়ে জুতা তৈরিতে রং গাম নিজস্ব গবেষণা করেছেন উদ্যোক্তা রিগান। যারা লেদার নিয়ে কাজ করেন তাদের সঙ্গেই আলোচনা করেছেন।

‘ভিজিক্স লেদার কালেকশন’ এ জুতার প্রোডাকশনে ভালো মানের গাম ব্যবহার করে, এছাড়াও ছয় মাসের মধ্যে জুতা কোন কিছু হলে রিকভারি করে দেওয়া হয়।

ক্রেতা আলী আহমেদ উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন,ভিজিক্স কালেকশনে বারবার আসি নিজের ও পরিবারের জুতা কিনতে।এখানকার প্রোডাক্টের গুণগত মান এবং অনেক ভালো টেকসই।

নতুন উদ্যোক্তার প্রতি রিগান জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের চামড়াজাত পণ্যের শক্ত অবস্থানে আছে এটা অনেক সম্ভাবনাময় ব্যবসা আর যারা নতুন উদ্যোক্তা আছে তাদের যদি সরকারী-বেসরকারী সাহায্য সহযোগিতা পায় তাহলে তাদের ব্যবসা ভালো অবস্থান হবে।

তিনি বলেন, দেশীয় পণ্য নিয়ে কাজ করার মধ্যে একটা আনন্দ আছে একটা ভিন্নতা আছে দেশীয় পণ্যের চাহিদা বেশি তাই কাজ করতে ও ভালো লাগে।আর যদি বিদেশ থেকে পণ্য ইমপোর্ট করে নিয়ে আসতাম তাহলে দেশীয় পণ্য কিছুটা বাজার হারাতো এতে কিছু অর্থও বাহিরের দেশে চলে যেত।

‘‘যেহেতু আমাদের দেশীয় পণ্য আমাদের উৎপাদিত পণ্য, দেশের টাকা দেশেই রয়ে গেল এতে দেশ লাভবান হলো, এর সাথে উদ্যোক্তাদের হাত শক্তিশালী হচ্ছে যা দেশের অর্থনীতির জন্য বড় ব্যাপার।’’

কোরবান আষাঢ়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments