রাজধানীতে আগামী শুক্র ও শনিবার (২০ ও ২১ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘আদিবাসী খাদ্য ও শস্যমেলা’। মিরপুর–১৩ নম্বরের বনফুল আদিবাসী গ্রিনহার্ট কলেজ প্রাঙ্গণে এ মেলা আয়োজন করা হবে। সকাল ১০টায় শুরু হয়ে মেলা চলবে রাত ৯টায় পর্যন্ত।
আয়োজকদের সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় খাবার নিয়ে অনেক স্টল থাকবে মেলায়। থাকছে পাহাড়ের জনপ্রিয় বাঁশ কোঁরোল, কলাপাতায় রান্না করা বিভিন্ন পদের খাবার। পাহাড়ি মুরগি, কাপ্তাই হ্রদের মাছসহ নানা জুমিয়া সবজিও থাকবে মেলায়। পার্বত্য অঞ্চলের জনপ্রিয় খাবার পাজনের স্বাদ নিতে পারবেন মেলায় আগত দর্শনার্থীরা।
সমতলের আদিবাসীদের বৈচিত্র্যময় খাবারের পসরা সাজিয়ে বসবেন মণিপুরি, গারো ও রাখাইনরা। কালো ও সাদা বিনি চালের বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক পিঠা নিয়ে হাজির হচ্ছেন রাখাইন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা। থাকছে এ সময়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা অনেক ধরনের মুন্ডি। এবারের মেলার বিশেষ অকর্ষণ থাকছে পাহাড়ের বাঁশের হুঁকা, যা ‘বাঁশদাবা’ নামে বেশি পরিচিত। থাকবে নানা ধরনের টাটকা ফলের ঝাল খাবার। এটি ‘লাকসো’ নামে অধিক পরিচিত।
বেসরকারি সংগঠন নাগরিক উদ্যোগ এবং বঞ্চিত আদিবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য গড়ে ওঠা মহা প্রজ্ঞা এডুকেশন ট্রাস্টের যৌথ আয়োজনে হচ্ছে এই মেলা।
আয়োজকদের পক্ষে রেলী চাকমা বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মেলার স্টল বরাদ্দের বিষয়টি প্রচার হওয়ার পর থেকে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। পাবর্ত্য অঞ্চলের পাশাপাশি সমতলের মান্দি, মণিপুরি ও রাখাইন সম্প্রদায়ের অনেক উদ্যোক্তা এরই মধ্যে স্টলের জন্য বুকিং দিয়েছেন।
আদিবাসী খাদ্য ও শস্যমেলায় পাওয়া যাবে এমন পিঠা আদিবাসী খাদ্য ও শস্যমেলায় পাওয়া যাবে এমন পিঠাছবি: সিএইচটি কুলিনারির সৌজন্যে
মেলায় শাকসবজি, ফলমূল, বৈচিত্র্যপূর্ণ নানা জাতের কৃষিপণ্যের সমাহার এবং শুঁটকির পসরা নিয়ে অনেক উদ্যোক্তা উপস্থিত থাকবেন।
নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন বলেন, দেশের শহুরে নাগরিক জনগোষ্ঠীকে আদিবাসীদের বৈচিত্র্যময় সমৃদ্ধ জুম কৃষির বিভিন্ন শস্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য এই মেলার আয়োজন।
মহা প্রজ্ঞা এডুকেশন ট্রাস্টের সদস্য ধীরেন মাহাতো বলেন, ‘আমাদের দেশে বহুত্ববাদী সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবার।’ এই বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবারের সঙ্গে দেশের বাঙালি জনগণের খাদ্যাভ্যাসের মেলবন্ধন ঘটানোর জন্য মেলার মধ্য দিয়ে তাঁরা সেই প্রয়াস চালাচ্ছেন।
মেলা চলার সময় শুক্রবার আদিবাসী শিল্পীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় আদিবাসী নারীদের জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘এফ মাইনর’ অংশ নেবে।
মেট্রোরেলে মিরপুর-১০ স্টেশন থেকে রিকশায় মাত্র ৫ মিনিটে মেলায় পৌঁছা যাবে। মেলার স্থান বনফুল আদিবাসী গ্রিনহার্ট কলেজের পাশেই রয়েছে স্কলাস্টিকা এবং এসওএস শিশুপল্লী। বিপরীতে রয়েছে বিআরটিএর কার্যালয়।