Homeবিদেশি উদ্যোক্তামোবাইল ফোন যাকে বানালো বিলিয়নিয়ার

মোবাইল ফোন যাকে বানালো বিলিয়নিয়ার

১৬ বছর বয়সে মাধ্যমিক স্কুল থেকে ড্রপ আউট হন। টিনেজার বয়সে কারখানায় কর্মী হিসেবে কাজ করেন। এরপর শুরু করেন নিজের ব্যবসা। সেই ব্যবসা থেকে তিনি এখন বিলিয়নিয়ার। শুধু তাই নয়, তিনি বিশ্বের সেলফ মেড ধনীদের মধ্যে অন্যতম। এই মুহুর্তে তার সম্পদের পরিমাণ ৬.৯ বিলিয়ন ডলার বা ৬৯০ কোটি ডলার। তাঁর নাম ঝাউ কুনফেই। ফোর্বসের তথ্যমতে, বিশ্বের তাবৎ বিলিয়নেয়ারদের মধ্যে তার অবস্থান ৪৭৭ তম। 

বিখ্যাত এই চীনা উদ্যোক্তার জন্ম হয়েছিল ১৯৭০ সালে, চীনের হুনান এর শিয়াংজিয়াং অঞ্চলে এক দরিদ্র পরিবারে। তিন সন্তানের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। শ্রমিক পিতা ফ্যাক্টরিতে কাজ করার সময় দুর্ঘটনায় আংশিক দৃষ্টিশক্তি হারান। ঝাউ এর বয়স যখন মাত্র ৫ বছর, তিনি মা’কে হারান।

১৬ বছর বয়সে বাবাকে হারানোর পর একটি ঘড়ির কারখানায় কাজ নেন। রাতের বেলা একাউন্টিং ও অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ের মতো সাবজেক্টের ক্লাসে যোগ দিতে থাকেন শেনঝেন ইউনিভার্সিটিতে। এর পাশাপাশি কম্পিউটার পরিচালনা, কাস্টমস এবং বাণিজ্যিক যানবাহন ড্রাইভিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন ঝাউ।

মাত্র ২৩ বছর বয়সে ১৯৯৩ সালে ঝাউ নিজের জমানো ২,৫০০ ডলার আর আগের চাকরি থেকে প্রাপ্ত মূল্যবান কারিগরি দক্ষতা দিয়ে ঘড়ির লেন্স তৈরীর ব্যবসা শুরু করেন। ১০ বছরে কর্মী সংখ্যা বেড়ে ১০০০ এ। ২০০৩ সালে ঝাউ এর কোম্পানির জন্য সবচেয়ে বড় সুযোগটি আসে। মোবাইল কোম্পানি মোটোরোলা থেকে গ্লাস স্ক্রিন তৈরীর কন্ট্রাক্ট পায় ঝাউ। এই সফলতা থেকে ২০০৩ সালে জন্ম নেয় টাচস্ক্রিন তৈরির একটি বিশেষায়িত কোম্পানি, “লেন্স টেকনোলজি”।

মোটোরোলার সাথে বিজনেস ডিলটি অন্যান্য বড় বড় কোম্পানিকে ঝাউ এর কোম্পানির প্রতি আকৃষ্ট করে। এইচটিসি, নোকিয়া ও স্যামসাং এর মত প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির জন্য কাজ করতে শুরু করে লেন্স টেকনোলজি। তারপর ২০০৭ সালে যখন অ্যাপল যাত্রা শুরু করে, লেন্স টেকনোলজি আইফোনের টাচস্ক্রিন তৈরি করার কাজ পায়, যা তারা এখনো করে আসছে। ধীরে ধীরে ঝাউ এর ক্লায়েন্ট লিস্টে এড হতে থাকে এলজি, মাইক্রোসফট, হুয়াওয়ে এবং টেসলা। টেকজায়ান্টদের যন্ত্রাংশ সাপ্লাই দিয়ে থাকে।

২০১৫ সালে আইপিও’তে রেকর্ড করা ৯০,০০০ কর্মীর লেন্স টেকনোলজির গল্প হচ্ছে, শত প্রতিকূলতার মুখে ঝাউ এর টিকে থাকার গল্প। লেন্স টেকনোলজিকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় টাচ স্ক্রিন কোম্পানির একটি হিসাবে গড়ে তোলাই হচ্ছে ঝাউ কুনফেই এর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় সাফল্য। অবিশ্বাস্য সফলতার জন্য অনেক নতুন উদ্যোক্তাদের কাছে বিশেষ করে তথ্য প্রযুক্তি সেক্টরে কাজ করা নারীদের জন্য ঝাউ একজন রোল মডেল।
ক্যারিয়ারে অবিশ্বাস্য সফলতার কারণে ঝাউ অসংখ্য পুরস্কার এবং সন্মাননা পেয়েছেন। ফোর্বসের বিচারে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবানদের একজন এবং অন্যতম ধনী সেল্ফ মেড নারী বিলিয়নিয়ার। ফরচুন এর দৃষ্টিতে তিনি এশিয়া-প্যাসিফিক এর সবচেয়ে ক্ষমতাশালী নারীর স্বীকৃতিও অর্জন করেছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments