১লা জানুয়ারি শুরু হচ্ছে ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা, বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার, পূর্বাচলে।
অন্তর্বর্তী সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা আগামীকাল সকাল ১০:৩০ টায় ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)- ২০২৫ উদ্বোধন করবেন।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) পূর্বাচলে মেলা প্রাঙ্গণে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন Dhaka International Trade Fair 2025 এর নানান তথ্য উপস্থাপন করেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম উদ্দিন, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুর রহিম খান।
এবারের বাণিজ্য মেলায় প্রথমবারের মতো অনলাইনে বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টল/প্যাভিলিয়ন স্পেস বরাদ্দ দেয়া হয়েছে:
– মেলায় প্রথমবারের মতো ই-টিকেটিং (অন-স্পট টিকেট ক্রয় ব্যবস্থার পাশাপাশি অনলাইনে টিকেট ক্রমপূর্বক কিউআর কোড স্ক্যান করে মেলায় প্রবেশ)-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
– দেশের তরুণ সমাজকে রপ্তানি বাণিজ্যে উদ্বুদ্ধকরণার্থে তৈরি করা হয়েছে ইউথ প্যাভিলিয়ন,
– মেলায় সম্ভাবনাময় সেক্টর/পণ্যভিত্তিক সেমিনার আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে,
– বিদেশী উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের সুবিধার্থে থাকছে স্বতন্ত্র সোর্সিং কর্ণার, ইলেক্ট্রনিক্স ও ফার্নিচার জোন:
-বয়সভিত্তিক দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে তৈরি করা হয়েছে প্রযুক্তি কর্ণার, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য সিটিং কর্নার।
– শিশুদের নির্মল চিত্তবিনোদনের জন্য মেলায় থাকছে শিশু পার্ক;
– পণ্য প্রসার ও বিপণনের জন্য মেলায় থাকছে উন্মুক্ত সাংস্কৃতিক কেন্দ্র,
– মহিলা, প্রতিবন্ধী, সুবিধা বঞ্চিত ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠী, কুটির/তাঁত/বস্ত্র/হস্ত শিল্পের উদ্যোক্তাদের সংরক্ষিত স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে:
– এছাড়া, তারুণ্যের শক্তি ও উদ্ভাবনী উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে মাসব্যাপী মেলায় থাকছে বিভিন্ন আয়োজন।
বাণিজ্য মেলার লে-আউট প্ল্যান অনুযায়ী বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৩৬১টি প্যাভিলিয়ন/স্টল/রেস্টুরেন্ট দেশীয় উৎপাদক-রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানসহ সাধারণ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশি প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পেয়েছে।
দেশিয় বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিক্স এ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল এ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্সস, ফার্নিচার, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহ সামগ্রী, চামড়া/আর্টিফিসিয়াল চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর ইত্যাদি পণ্য মেলায় প্রদর্শিত হতে যাচ্ছে।
সেন্টারের দক্ষিণ-পূর্ব পার্শ্বে জুলাই চত্বর, দক্ষিণ-পশ্চিম পার্শ্বে কালচারাল সেন্টার, টেকনোলজি কর্নার, রিক্রিয়েশনাল কর্নার এবং সেন্টারের উত্তর-পূর্ব (৬ একর) পার্শ্বে শিশু পার্ক ও উত্তর-পশ্চিম পার্শ্বে ছত্রিশ চত্বর ও (মসজিদ) নামাজ ঘর স্থাপন করা হয়েছে।
মেলার সার্বিক নিরাপত্তা এবং দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণার্থে মেলা প্রাঙ্গণে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবে।
প্রবেশ গেইট, পার্কিং এরিয়া এবং সংশ্লিষ্ট সকল এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া, মেলার প্রবেশ গেইটে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একইভাবে যে কোন ধরনের অগ্নি দুর্ঘটনা প্রতিরোধে মেলায় সার্বক্ষনিক নিয়োজিত থাকবে ফায়ার ব্রিগেড।
মেলা প্রাঙ্গণের বিভিন্ন গেট, এক্সিবিশন হলের অভ্যন্তর ও বহিরাঙ্গণসহ বিভিন্ন স্পটে দর্শনার্থীদের মধ্যে মেলা সংক্রান্ত তথ্যাদি আদান-প্রদানে সহযোগিতার পাশাপাশি মেলা প্রাঙ্গণে শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে মেলা চলাকালীন প্রতিদিন ৫০ জন বিএনসিসি ক্যাডেট নিয়োজিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
এবারের মেলায় পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি অধিকতর গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণ পরিস্কার- পরিচ্ছন্ন রাখার জনা শতাধিক পরিচ্ছন্নতা কর্মী সার্বক্ষনিক নিয়োজিত থাকবে।
মেলায় খাদ্য দ্রব্যের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ গঠিত টিম মেলা চলাকালীন প্রতাহ ভেজাল বিরোধী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।
মেলায় আগত দর্শনার্থীদের জন্য সার্বক্ষনিক চিকিৎসক ও পেশেন্ট কেয়ার এটেনডেন্ট উপস্থিত থেকে ফ্রি প্রাথমিক চিকিৎসা ও চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান করবে।
মেলায় ৫ শতাধিক গাড়ি পার্কিং সুবিধা সংবলিত দ্বিতল কার পার্কিং বিল্ডিং ছাড়াও এক্সিবিশন হলের বাইরে ৬ একর জমিতে বিস্তর পার্কিং এর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
মেলার সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিং এর জন্য মেলায় স্থাপন করা হয়েছে একটি অস্থায়ী সচিবালয় ও দর্শনার্থীদের সকল প্রকার তথ্য প্রদানের জন্য একটি তথ্য কেন্দ্র।
ব্যাংকিং সার্ভিসের জন্য মেলায় থাকবে পর্যাপ্ত সংখ্যক ব্যাংক বুথ। মা ও শিশুদের জন্য মেলায় থাকবে মা ও শিশু কেন্দ্র। এছাড়া, অন্যান্য প্রয়োজনীয় সেবার মধ্যে রক্ত সংগ্রহ কেন্দ্র, মসজিদ, দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য আরামদায়ক ও শোভন চেয়ার/বেঞ্চ, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য সিটিং কর্ণার ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মেলায় সাধারণ দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে কুড়িল বিশ্বরোড, ফার্মগেট (খেজুর বাগান/খামার বাড়ী), নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী হতে প্রতিদিন সকাল ০৮:০০ টা থেকে বাণিজ্য মেলার উদ্দেশ্যে বিআরটিসির ২০০টির বেশি ডেডিকেটেড শাটল বাস চলবে এবং মেলা প্রাঙ্গণ থেকে শাটল বাসের সর্বশেষ ট্রিপ ছাড়বে রাত ১১.০০ টায়।
মেলার টিকিটের মূল্য (জন প্রতি) টা: ৫০.০০ (প্রাপ্ত বয়স্ক) এবং শিশুদের (১২ বছরের নীচে) ক্ষেত্রে টা: ২৫.০০ (পঁচিশ)। তবে মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধিগণ তাঁদের কার্ড প্রদর্শনপূর্বক বিনামূল্যে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন।
বাংলাদেশ ব্যতীত মোট ০৭টি দেশের (ভারত, পাকিস্থান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়া) মোট ১১টি প্রতিষ্ঠান এবারের মেলায় অংশগ্রহণ করছে। গত বছরের মেলায় মোট ৩০৪টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে যার মধ্যে ০৫টি বিদেশি রাষ্ট্রের ০৯টি প্রতিষ্ঠান ছিল।
পূর্বের ন্যায় মেলাটি মাসব্যাপী সকাল ১০.০০ টা হতে রাত ১.০০ টা পর্যন্ত চলবে (সাপ্তাহিক ছুটির দিনসমূহে রাত ১০:০০ টা পর্যন্ত)।