বাণিজ্যিক খামারে বার্ড ফ্লুর প্রাদুর্ভাব নিশ্চিত হওয়ার পর ব্রাজিলকে ঘিরে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে। ১৬ মে, শুক্রবার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর চীন দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে ব্রাজিল থেকে মুরগির মাংস আমদানিতে জাতীয় পর্যায়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
দক্ষিণ ব্রাজিলের একটি খামারে বার্ড ফ্লুর প্রাদুর্ভাবটি শনাক্ত হয়েছে, যা ব্রাজিলের ভাইব্রা ফুডস নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে মুরগি সরবরাহ করে আসছিল। ভাইব্রা ফুডস একটি ব্রাজিলিয়ান কোম্পানি, যা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক খাদ্যপ্রতিষ্ঠান টাইসন ফুডসের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে। বিষয়টির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত দুটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ভাইব্রা ও টাইসন ফুডস এর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া প্রশ্নের জবাবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। ভাইব্রা ফুডসের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির গোটা ব্রাজিলজুড়ে ১৫টি প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র রয়েছে এবং তারা বিশ্বের ৬০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
২০২৪ সালে ব্রাজিল ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের (১ হাজার কোটি ডলার) মুরগির মাংস রপ্তানি করেছে, যা বিশ্ব বাণিজ্যের প্রায় ৩৫ শতাংশ। এই রপ্তানির বড় অংশই এসেছে প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান বিআরএফ এবং কেবিএস’র কাছ থেকে। প্রতিষ্ঠান দুটি বিশ্বের ১৫০টি দেশে মাংস রপ্তানি করে।
ব্রাজিল সবচেয়ে বেশি মুরগির মাংস রপ্তানি করে- চীন, জাপান, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে।
ব্রাজিলের কৃষিমন্ত্রী কার্লোস ফাভারো শুক্রবার জানান, বিদ্যমান চুক্তি ও প্রটোকল অনুযায়ী, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং দক্ষিণ কোরিয়া ব্রাজিল থেকে মুরগির আমদানি ৬০ দিনের জন্য বন্ধ করেছে। অন্যদিকে চুক্তি অনুযায়ী জাপান, আরব আমিরাত এবং সৌদি আরব শুধু আক্রান্ত রাজ্য থেকে মুরগির মাংস আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ব্রাজিলের কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশের সর্ব দক্ষিণের রাজ্য রিও গ্রান্ডে ডো সুলের মন্টিনিগ্রো শহরে বার্ড ফ্লুর প্রাদুর্ভাব সনাক্ত করা হয়েছে। জাতীয় পশুসম্পদ ও হাঁস-মুরগি সংস্থা এবিপিএ’র ২০২৪ সালের জুলাইয়ের তথ্যানুযায়ী এই রাজ্যটি ব্রাজিলের মোট হাঁস-মুরগি উৎপাদন ও রপ্তানির ১৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে।
দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পশু চিকিৎসকরা মন্টিনিগ্রোর প্রাদুর্ভাব কবলিত এলাকায় আইসোলেশন কার্যক্রম শুরু করেছেন এবং প্রটোকল অনুযায়ী আক্রান্ত মুরগি নিধন করেছেন।
সূত্রঃ রয়টার্স