বাংলাদেশে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পর্যটন ও অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা কাজে লাগাতে মিশরের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
সোমবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে মিশরের বিপ্লব দিবসের ৭৩তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। রিজওয়ানা হাসান বলেন, “বাংলাদেশের ব্যবসা ও বিনিয়োগ পরিবেশ দিনদিন উন্নত হচ্ছে। এই সময়ে মিশরের উদ্যোক্তারা যদি এগিয়ে আসেন, তাহলে দুই দেশেরই লাভ হবে। অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, পর্যটন ও আতিথেয়তা খাতে এখন বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।”
মিশরের জাতীয় দিবসে সে দেশের সরকার ও জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ও মিশরের বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের। আমাদের এই সম্পর্ক ইতিহাস, সংস্কৃতি ও পারস্পরিক আস্থার ওপর গড়ে উঠেছে।”
নিজের মিশর সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “মিশরের জাদুঘর, ঐতিহ্য এবং নীল নদের সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি বিশ্বাস করি, প্রতিটি মিশরীয় নাগরিক তাদের গৌরবময় ইতিহাস নিয়ে গর্ব করতে পারেন।” তিনি আরও বলেন, “শিক্ষা, কৃষি, জ্বালানি ও বাণিজ্যসহ নানা খাতে দুই দেশের মধ্যে আরও সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে। সরাসরি বিমান যোগাযোগ চালু হওয়ায় মানুষে-মানুষে সম্পর্ক আরও মজবুত হবে।”
গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, “২০২৫ সালের জুলাই-আগস্টে যে রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটেছে, তা একটি নতুন জাতীয় সংলাপের পথ খুলে দিয়েছে — যা হবে ন্যায্যতা, মর্যাদা ও বৈষম্যহীনতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা।” তিনি মিশরীয় দূতাবাসের সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং উল্লেখ করেন ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে কায়রোতে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সফর এবং ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের কথা।
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য মিশরের প্রস্তাবিত বৃত্তির জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক মঞ্চেও, যেমন জাতিসংঘ বা ওআইসি, দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও জোরদার হবে বলে আমি আশাবাদী।” তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন মিশরের জনগণের শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত মিশরের রাষ্ট্রদূত ওমর মোহি এলদিন আহমেদ ফাহমি। এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক সংস্থার শীর্ষ প্রতিনিধি, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ এবং সমাজের বিশিষ্টজনেরা।