দেশের মুক্তপেশাজীবী বা ফ্রিল্যান্সারদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি লাঘবে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকারের আইসিটি বিভাগ। এখন থেকে ঘরে বসেই সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় একটি পোর্টালের মাধ্যমে নিজেদের ‘ভার্চুয়াল পরিচয়পত্র’ ডাউনলোড করতে পারবেন ফ্রিল্যান্সাররা। জাতীয় পরিচয়পত্রের অধীনে পরিচালিত এই পোর্টালে প্রয়োজনীয় পেশাগত (ডকুমেন্ট) সন্নিবেশ করে কোনো প্রকার ব্যয় বা ঝামেলা ছাড়াই এই পরিচয়পত্র পাওয়া যাবে।
রবিবার (২০ জুলাই) আইসিটি বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, পোর্টালটি এমনভাবে ডিজাইন করা হবে যেন ফ্রিল্যান্সাররা তাদের প্রাপ্য নগদ প্রণোদনা গ্রহণ এবং ব্যাংক-বীমার মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সেবাগুলো কোনো শাখায় না গিয়েই সম্পন্ন করতে পারেন।
আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আইসিটি ও টেলিকম বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
সভায় জানানো হয়, ২০২১ সালে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ৪ শতাংশ নগদ প্রণোদনার ঘোষণা দেওয়া হলেও, জটিলতার কারণে এখন পর্যন্ত একজন ফ্রিল্যান্সারও এই সুবিধা পাননি। এই অচলাবস্থা দূর করতেই পুরো প্রক্রিয়াটি স্বয়ংক্রিয় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও অন্যান্য সিদ্ধান্ত
সভায় আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়।
- এলডিসি পরবর্তী সহায়তা: স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর ২০২৬ সাল থেকে যখন বাংলাদেশ আর ফ্রিল্যান্সারদের নগদ প্রণোদনা দিতে পারবে না, তখন তাদের কীভাবে সহায়তা করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
- পেপ্যাল চালুর উদ্যোগ: দেশে পেপ্যালের মতো আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে চালুর বিষয়েও আলোচনা হয়।
- বাক্কোর সহায়তামূলক ভূমিকা: আইসিটি বিভাগের তালিকাভুক্ত ৫৫টি মার্কেটপ্লেসের বাইরে অন্য কোনো প্ল্যাটফর্ম বা আইটি ফার্ম থেকে অর্জিত অর্থ দেশে আনার ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সারদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সত্যায়নে সহায়তা করবে বাক্কো।
এই উদ্যোগগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশের কয়েক লক্ষ ফ্রিল্যান্সার পেশাগত স্বীকৃতি পাওয়ার পাশাপাশি আর্থিক লেনদেন এবং সরকারি সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।