বাংলাদেশের হস্তশিল্প বিশ্বজুড়েই প্রশংসিত। হাতে তৈরি বাঁশ, কাঠ, বেত, জামদানি, নকশিকাঁথা, হ্যান্ডমেইড গৃহসজ্জা সামগ্রী বা গিফট আইটেমগুলো শুধু দেশীয় ঐতিহ্যের বহন করছে না বরং আন্তর্জাতিক বাজারেও বহুল চাহিদাসম্পন্ন। সেই চিন্তা ধারা থেকে উমা মন্ডল এবং বিপ্রো দাস মন্ডল শুরু করেন হ্যান্ডমেড হস্তশিল্পের কাজ।
প্রোডাক্ট হতে হবে হ্যান্ড মেড এবং পরিত্যাক্ত কিংবা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এমন কোনো উপকরণ দিয়েই তৈরি হবে পরিবেশবান্ধব পণ্য। সেই চিন্তা থেকেই মংলা বন্দরে পড়ে থাকা জ্বালানি কিংবা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এমন কাঠ সংগ্রহ করেন বিপ্রো দাস এবং ফেলে দেয়া সেই অপ্রয়োজনীয় কাঠকে হাঁতের ছোঁয়ায় নতুন রূপ দিচ্ছেন।
বিপ্রো দাস বলেন, আমার ২৪ বছরের কর্পোরেট অভিজ্ঞতায় দেখেছি, সবাই ফ্যাশন সচেতন হলেও হোম ডেকর কিংবা ক্র্যাফটেড আইটেমগুলো অনেক বেশি উপেক্ষিত। এই সেক্টর নিয়ে কাজ করা উচিত কেননা এর সম্ভাবনা অনেক। আমি চাকরি ছেড়ে দিয়ে আমার সহধর্মিণীকে নিয়ে গ্রামে বাগেরহাটে পুরনো,ফেলে দেয়া কাঠ দিয়ে ক্র্যাফটেড পণ্য তৈরির জন্য বৌদির দেয়া এক টুকরো জমিতে একটি ছোট পরিসরে কারখানা দেই এবং সেই থেকে শুরু।
ফেলে দেয়া সেই কাঠ থেকে কোস্টার, চপিং বোর্ড, চিজ বোর্ড, বাটার নাইফ, ফোগ, স্পেচুলা, সালাদ মিক্সচার, ফটোফ্রেম, ক্যান্ডেল, জুয়েলারি, হ্যান্ড মেড পেপার, গিফটব্যাগ, পুরোনো শাড়ি থেকে স্টুল, রিসাইকেল – আপসাইকেল, ক্রোসেটসহ প্রায় ১২৫ থেকে ১৫০টি প্রোডাক্ট লাইন রয়েছে। সকল প্রোডাক্টই তৈরি হচ্ছে বাগেরহাটের সেই কারখানাটিতে এবং মাসে ৮ থেকে ৯ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করছেন এই উদ্যোক্তা দম্পতি।
২০২২ সালে ১ জনকে নিয়ে যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জনের একটি টিম রয়েছে রেডপেন্সিলে।
যাত্রা বিরতি, কে ক্র্যাফট, ইউনিমার্টের সকল আউটলেটসহ বিভিন্ন কর্পোরেটে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে রেডপেন্সিলের প্রোডাক্ট গুলো। এমনকি দেশের বাইরেও থার্ডপার্টির মাধ্যমে পণ্য পাঠাচ্ছেন তাঁরা। অদূর ভবিষ্যতে বৃহৎ আকারে দেশের বাইরে পণ্য রপ্তানির স্বপ্ন দেখছেন – এই উদ্যোক্তা দম্পতি।
উমা মন্ডল ঢাকা চারুকলা থেকে প্রিন্ট মেকিং নিয়ে অনার্স মাস্টার্স সম্পন্ন করেন এবং স্বপ্ন দেখতেন গ্রামে কিছু একটা করবেন। ২০২২ সালে, গ্রামে একজন অভিজ্ঞ কারপেইন্টার পেয়ে যান, তাকে নিয়েই শুরু হয় উমার রেডপেন্সিল এর জার্নি।
সেতু ইসরাত,
উদ্যোক্তা বার্তা