হালাল ব্যবসায়েই প্রসার এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত হলো কওমি উদ্যোক্তাদের নিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় সামিট “কওমি উদ্যোক্তা সম্মেলন ২০২৫”।
২,৫০০ প্রান্তিক উদ্যোক্তার উপস্থিতিতে রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় এই ব্যতিক্রমী আয়োজন।
উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক প্রশিক্ষণ, অভিজ্ঞতা বিনিময়, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং নেটওয়ার্কিং বৃদ্ধির সুযোগ এনে দেওয়ায় আয়োজনটি উদ্যোক্তাদের মনে বড় প্রভাব ফেলেছে। ইংলিশ থেরাপি প্রেজেন্টস এবং পাওয়ার্ড বাই অনলাইন টেক একাডেমি, উদ্যোগটি সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছে।
বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে কওমি উদ্যোক্তাদের এই গুরুত্বপূর্ণ আয়োজনে প্রানবন্ত হয়ে উঠে। সভাপতি হিসাবে উপস্থিতি ছিলেন, কওমি উদ্যোক্তার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা রোখন রাইয়ান, প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, ধর্ম উপদেষ্টা ড. আহমদ খলিল হোসেন, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, রহিম আফরোজ গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নিয়াজ রহিম, এবং বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক, ইংলিশ থেরাপির ফাউন্ডার ও সিইও সাইফুল ইসলাম, অনলাইন টেক এর ফাউন্ডার মুজাহিদুল ইসলাম, হ্যাপিনেস কোচ এর কোচ কাঞ্চন, জনপ্রিয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ও বিজনেস এনালিস্ট নাফিস সেলিম সহ আরও অনেকে
আয়োজনের সূচনা বক্তব্যে কওমি উদ্যোক্তার কো-ফাউন্ডার মমিনুল ইসলাম অংশগ্রহণকারীদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, “এই প্ল্যাটফর্ম উদ্যোক্তাদের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। নতুন ব্যবসায়িক দিকনির্দেশনা, নেটওয়ার্কিং এবং উদ্ভাবনী চিন্তাধারার প্রসারই আমাদের লক্ষ্য।”
প্রধান অতিথি ধর্ম উপদেষ্টা ড. আহমদ খলিল হোসেন, তার বক্তব্যে হালাল ব্যবসার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “হালাল ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি এবং সামাজিক উন্নয়ন একে অপরের সাথে সম্পর্কিত। আমাদের বিশ্বাস, যে ব্যবসা সমাজের উপকারে আসে এবং ইসলামী শাস্ত্র অনুযায়ী পরিচালিত হয়, তা শুধু লাভজনক নয়, বরং আধ্যাত্মিক শান্তি ও কল্যাণও বয়ে আনে।”
তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের সম্মেলন উদ্যোক্তাদের জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করে, যার মাধ্যমে তারা শুধু পুঁজি বা কৌশলই নয়, বরং মানবিক মূল্যবোধ এবং ধর্মীয় নৈতিকতা অনুসরণ করে ব্যবসা পরিচালনা করতে সক্ষম হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে “মাওলানা রোখন রাইয়ান” উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে বলেন, “বিশ্বায়ন ও ডিজিটালাইজেশনের এই যুগে উদ্যোক্তা হওয়া একটি বড় চ্যালেঞ্জ, তবে আপনি যদি সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি নিয়ে কাজ করেন, তাহলে সফলতা আসবেই।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “এই সম্মেলন আমাদের উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়িত করার একটি চমৎকার সুযোগ। নতুন উদ্যোক্তারা আমাদের থেকে শেখার সুযোগ পাচ্ছেন এবং এটি তাদের নিজেদের ব্যবসায় নতুন দিগন্ত উন্মোচনে সহায়ক হবে।”
কওমি উদ্যোক্তা সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল নেটওয়ার্কিং, যেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের উদ্যোক্তারা এসে অফলাইনে সরাসরি সাক্ষাৎ করতে পেরেছেন। এটি তাদের একে অপরের সম্পর্কে জানার এবং ভবিষ্যতে সহযোগিতা ও সঙ্গী হয়ে কাজ করার সুযোগ দিয়েছে। সম্মেলনটি একটি বিশাল নেটওয়ার্ক তৈরি করার সুযোগ তৈরি করেছে, যা ভবিষ্যতে উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
দিনব্যাপী এই আয়োজনে, দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রশিক্ষকরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর বক্তব্য রাখেন। কিভাবে ইনভেস্ট পাওয়া যাবে এবং কিভাবে সেই টাকা ব্যয় করতে হবে।এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করা হয়। এছাড়াও, অনলাইনের এই যুগে কীভাবে ব্যবসা আরও প্রসারিত করা যায়, প্রযুক্তিতে ভবিষ্যতের ব্যবসা,কন্টেন্ট মেকিং এবং আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়। এই সেশনগুলো উদ্যোক্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং নতুন ধারণা তৈরি করতে সহায়ক হয়েছে।
সারা দেশ থেকে আগত উদ্যোক্তা ও অতিথিরা বলেন, “এ ধরনের আয়োজন আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের অনুপ্রাণিত করে এবং নতুন নতুন ব্যবসায়িক দিকনির্দেশনা প্রদান করে।”
আয়োজকদের মতে, আগামী বছরগুলোতে এই সম্মেলন আরো বড় পরিসরে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে আন্তর্জাতিক উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণও নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া, নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য আরও প্রশিক্ষণ, কর্মশালা এবং সহযোগিতার সুযোগ সৃষ্টি করার পরিকল্পনাও রয়েছে।
হাবিবুর রহমান,উদ্যোক্তা বার্তা