Homeউদ্যোক্তা মেলাপাহাড়ি ফল ঐতিহ্যের অংশ: উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা

পাহাড়ি ফল ঐতিহ্যের অংশ: উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, পাহাড়ি ফল মেলা শুধু একটি বাণিজ্যিক আয়োজন নয়, বরং এটি পাহাড়ি জীবনের সঙ্গে নগরবাসীর একটি আত্মিক সংযোগ। পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ প্রাকৃতিক খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত এবং অর্গানিক ফল আমাদের ঐতিহ্যের অংশ। এই মেলার মাধ্যমে আমরা সেই ঐতিহ্যকে তুলে ধরেছি।

আজ রাজধানীর বেইলি রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত পাহাড়ি ফল মেলা’র সমাপনী অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এসব কথা বলেন।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের টেকসই উন্নয়ন ও গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার যে দৃষ্টিভঙ্গি, তারই প্রতিফলন ঘটেছে পাঁচ দিনব্যাপী পাহাড়ি অর্গানিক ফল মেলায়।  অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ও সাবেক রাষ্ট্রদূত জনাব সুপ্রদীপ চাকমা। সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের সভাপতি জনাব মো. আব্দুল খালেক।

উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা প্রধান অতিথির বক্তব্যে আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার, বিশেষ করে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস-এর নেতৃত্বে, গ্রামীণ অর্থনীতি ও নারীর ক্ষমতায়নের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। পাহাড়ি নারীরা অর্গানিক ফল চাষে যে নিষ্ঠা ও শ্রম দিয়ে ভূমিকা রাখছেন, তা সত্যিই অনুকরণীয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের নারী উদ্যোক্তাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী ও  উৎসাহিত করতে মন্ত্রণালয় তাঁদের পাশে আছে এবং প্রশিক্ষণ, প্রণোদনা ও বাজার সংযোগে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে বলে জানান উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।

উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীর জন্য আমরা কোয়ালিটি এডুকেশন, লাইভলি হুড ডেভেলপমেন্ট, নারীর ক্ষমতায়ন ও পরিবেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে চাই। তিনি বলেন, সম্প্রতি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দিয়েছেন যে, চলতি বছরের মধ্যেই পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্তত ১০০টি স্কুলে স্টারলিংক সংযোগের মাধ্যমে ই-লার্নিং চালু করা হবে। এর মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি বিপ্লবী পরিবর্তন আসবে। এটি শুধু শিক্ষার মান উন্নয়ন নয়, বরং সামাজিক ন্যায়বিচার, প্রযুক্তিগত অন্তর্ভুক্তি ও টেকসই উন্নয়নের পথ খুলে দেবে বলে জানান উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।

উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই পাহাড়ি ফল মেলা শুধু ভোক্তা ও কৃষকের সংযোগ নয়, বরং একটি সমন্বিত শিক্ষা, পরিবেশ ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মঞ্চ। উপদেষ্টা  বলেন, আমরা চাই, রাজধানীবাসী পাহাড়ি সংস্কৃতিকে শুধু দেখবে না, অনুভব করবে। এই আয়োজন একটি টেকসই ভবিষ্যতের পথে আমাদের অগ্রযাত্রার প্রতীক।

আয়োজক পক্ষ জানায়, এই আয়োজন স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত ফলের প্রতি জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাজার সম্প্রসারণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। মেলার প্রতিটি স্টল যেন ছিল একটি গল্পের জানালা- যেখানে ফলের স্বাদ ছাপিয়ে উঠে এসেছে পাহাড়ি জীবনের রঙ, ঘ্রাণ ও আত্মার ছোঁয়া।

সন্ধ্যায় আয়োজিত এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের শিল্পীরা পরিবেশন করেন ঐতিহ্যবাহী সংগীত ও নৃত্য, যা দর্শনার্থীদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উদ্বাস্তু পুনর্বাসন সংক্রান্ত টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান সুদত্ত চাকমা, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. রাশিদা ফেরদৌস,  মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন সংস্থাসমূহের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।

ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা 

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments