রাজধানীর বেইলি রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সে চলমান ‘পার্বত্য মেলা ও তারুণ্যের উৎসব’ আজ চতুর্থ ও শেষ দিনে পৌঁছেছে। গত তিন দিনের মতো আজও মেলায় দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
মেলায় ৮৩টি স্টলে তিন পার্বত্য অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী পণ্য, হস্তশিল্প, পোশাক, খাদ্যদ্রব্যসহ নানা সামগ্রী প্রদর্শন করা হয়েছে, যা দর্শনার্থীদের পার্বত্য সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে তুলা থেকে সুতা উৎপাদনের প্রদর্শনী, যা পার্বত্য অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী শিল্পের পরিচয় তুলে ধরছে। পাশাপাশি, তিন পার্বত্য অঞ্চলের পণ্যের বিশেষ প্রদর্শনী মেলায় দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে।
বিশেষ করে জুম চাষের বিভিন্ন অর্গানিক পণ্য ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে পাহাড়ি গোল আলু, মিক্স সবজি, হাঙ্গর শুঁটকি, বাঁধাকপি, মিষ্টি কুমড়ো, বরবটি, পুঁই শাক ও মুলা। এছাড়া, ঐতিহ্যবাহী পাজন রান্নার উপকরণ মেলায় পাওয়া যাচ্ছে, যা অনেকের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
মেলায় আসা ক্রেতা দর্শনার্থী রুহুল আমীন বলেন, “পার্বত্য সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের এত কাছাকাছি আসার সুযোগ খুব কমই পাওয়া যায়। এখানকার খাবার ও হস্তশিল্পও অনন্য। বিশেষ করে জুম চাষের অর্গানিক পণ্যগুলো একদম ভিন্ন স্বাদের ও স্বাস্থ্যকর, যা শহরের বাজারে সচরাচর পাওয়া যায় না।”
প্রতিদিনের ন্যায় শেষ দিনের বিশেষ আয়োজনে রয়েছে পার্বত্য অঞ্চলের নৃত্য ও সংগীত পরিবেশনা। মেলার আয়োজকরা জানান, চার দিনের এই উৎসব পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও ব্যবসাকে শহরের মানুষের কাছে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছে।
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, মেলায় অংশগ্রহণ করে তারা দারুণ সাড়া পেয়েছেন। উদ্যোক্তা উখাই সিং বলেন, “এই মেলার মাধ্যমে আমাদের পণ্য অনেক মানুষের কাছে পৌঁছেছে। শহরের মানুষ পার্বত্য পণ্য ও খাবারের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন, যা আমাদের জন্য ভালো সুযোগ।”
উল্লেখ্য, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঐতিহ্যবাহী বাঁশি ও বাদ্য বাজায়ে এবং মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বালন করে ‘পার্বত্য মেলা ও তারুণ্যের উৎসব’-এর উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
চার দিনের এই প্রাণবন্ত মেলা আজ শনিবার রাত ১০টায় শেষ হবে। উদ্যোক্তা ও দর্শনার্থীরা শেষ দিনের আনন্দ উপভোগ করছেন এবং বিশেষ ছাড়ে পণ্য কেনার সুযোগ নিচ্ছেন। আয়োজকরা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতেও এমন আয়োজন চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
হাবিবুর রহমান,
উদ্যোক্তা বার্তা