বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতের অগ্রগণ্য প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন (Grameenphone) সম্প্রতি তাদের ফিক্সড ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড সেবা, জিপিফাই (GPFI) রাউটার চালু করেছে। উন্নত গতির ইন্টারনেট সেবা প্রদান এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য পূরণে এই উদ্যোগ গ্রামীণফোনের একটি বড় পদক্ষেপ। সহজ ইন্সটলেশন, সাশ্রয়ী প্যাকেজ এবং নির্ভরযোগ্য নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই সেবা দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
গ্রামীণফোন বাংলাদেশের মোবাইল অপারেটর খাতের পথিকৃৎ। ১৯৯৭ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে সেবা চালু করে। বর্তমানে এটি দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল অপারেটর, যার গ্রাহক সংখ্যা ৮ কোটির বেশি।
গ্রামীণফোনের মূল কোম্পানি হলো নরওয়ে ভিত্তিক টেলিনর গ্রুপ (Telenor Group), যা বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান।
তিনটি প্যাকেজের আওতায় গ্রামীণফোনের জিপিফাই রাউটারের সেবা দেওয়া হচ্ছে: ১০০০ টাকায় ২৫ এমবিপিএস স্পিডে ৫০০ জিবি ডেটা, ১,৩০০ টাকায় ৩০ এমবিপিএস স্পিড, ও ১,৯০০ টাকায় ৪০ এমবিপিএস স্পিডে আনলিমিটেড ডেটার সুবিধা রয়েছে।
প্রত্যেকটি প্যাকেজে দ্রুত ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে, যা অনলাইন স্ট্রিমিং, অফিস ওয়ার্ক এবং গেমিংয়ের জন্য উপযুক্ত। এছাড়া, থাকছে OTT প্ল্যাটফর্মে ফ্রি পাস: Bioscope, Chorki, Hoichoi, T Sports এবং SonyLIV এর মত জনপ্রিয় চ্যানেল।
জিপিফাই রাউটারের দুটি মডেল বাজারে এভেইল: ৪,০০০ টাকার রাউটার, সর্বোচ্চ ১০টি ডিভাইস সংযোগ, ৭,৫০০ টাকার জিপিফাই আনলিমিটেড প্রো রাউটার-এ ৩২টি ডিভাইস সংযোগ করা যাবে এবং ওয়াইফাই রেঞ্জও বেশি।
GPFI Unlimited (Huawei) এ থাকছে ১,২০০-১,৫০০ বর্গফুট কভারেজ, GPFI Unlimited (Tozed) এ থাকছে ১,৫০০ বর্গফুট কভারেজ এবং GPFI Unlimited Pro (Huawei) এ থাকছে ২,০০০-২,৫০০ বর্গফুট কভারেজ।
গ্রাহকরা মনে করছেন, গ্রামীণফোনের শক্তিশালী নেটওয়ার্কের কারণে ইন্টারনেট সংযোগ বেশ স্থিতিশীল। বিশেষ করে, শহুরে এলাকায় কাজের চাপ কমাতে এটি কার্যকরী। ব্যবহারকারীরা রাউটারের সহজ ইন্সটলেশন এবং দ্রুত কানেক্টিভিটির প্রশংসা করছেন।
অপরদিকে, কিছু গ্রাহক অভিযোগ করেছেন যে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নেটওয়ার্কের মান কিছুটা কম। এছাড়া, রাউটারের প্রাথমিক খরচ অনেকের জন্য উচ্চ।
গ্রামীণফোন বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ খাতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্রামীণফোনের এই উদ্যোগ দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। ডুয়াল এবং ট্রাই-ব্যান্ড রাউটার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার বিটিআরসি সিদ্ধান্ত -এর সঙ্গে এই রাউটারগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা ভবিষ্যতের চাহিদা পূরণে সক্ষম।
গ্রামীণফোনের জিপি রাউটার সেবা দেশের ডিজিটাল খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সহায়ক হতে পারে। যদিও কিছু সমস্যা রয়ে গেছে, তবে এর সম্ভাবনা অসীম। গ্রামীণফোনের মতো প্রতিষ্ঠান যদি গ্রাহকদের চাহিদা এবং প্রযুক্তির উন্নয়নে মনোনিবেশ করে, তবে এটি দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারের অভিজ্ঞতা বদলে দেবে।
হাবিবুর রহমান,উদ্যোক্তা বার্তা