দেশের আটটি বিভাগে হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল পালন করাসহ হ্যান্ডলুমের জন্য আলাদা করে দিবস কিংবা সপ্তাহ চান আয়োজকরা।
বুধবার বিকেলে হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথি পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের উপস্থিতিতে এই ইচ্ছা প্রকাশ করেন এ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনার্স অব বাংলাদেশের (এএফডিবি) প্রেসিডেন্ট মানতাশা আহমেদ। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
তিনি বলেন, হেরিটেজ ফেস্টিভ্যালের দ্বিতীয় আসর এটা, এখানে বিভিন্ন প্রকার দেশীয় ডিজাইনার এবং উদ্যোক্তারা সমবেত হয়েছে। আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই। আমরা এ মেলার মাধ্যমে সরকারের কাছে ৫ টি বিষয়ের জন্য অনুরোধ করতে চাই, তা হলো আমরা এই মেলা যেন আমরা জাতীয় পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। দেশের আটটি বিভাগে যেন আমরা এই মেলা পালন করতে পারি, এরসঙ্গে সরকারিভাবে আমরা হ্যান্ডলুম দিবস বা সপ্তাহ চাই।
মানতাশা আহমেদ বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে যেন তাঁতপণ্য সাজানো থাকে৷ যাতে করে বিদেশি পর্যটক যখন দেশে আসে তখন বিষয়টি তাদের আকৃষ্ট করবে এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বড় হবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিন আর দ্বিতীয়ত বাংলাদেশের অর্ধ-শত বছরে পর্দাপণ। তাই বাংলার এই ঐতিহ্য যেন পুরো বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বাহিরে গিয়ে সমৃদ্ধতা অর্জন করতে পারে তার জন্য সরকারী সহায়তা চাই।
মানতাশা আহমেদের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করে বিশেষ অতিথি শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার তার বক্তব্যে বলেন, বিমান বন্দরে দেশীয় পণ্য প্রচারণার জন্য পরিকল্পনা করতে হবে। প্রত্যেকটা বিভাগীয় পর্যায়ে দেশীয় পণ্য নিয়ে কাজ করতে হবে। বিদেশে এই পণ্য ছড়িয়ে দিতে হবে। আগামী বাজেটে এই ধরনের একটা পরিকল্পনা থাকা উচিত।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সফিকুল ইসলাম সূচনা বক্তব্যে বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় ৭০ থেকে ৮০ লাখ লোক এই পেশায় জড়িত। এখান থেকে মূল জিডিপির প্রায় ২৫ % আসে। উদ্যোক্তা ছাড়া কখনও দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আমরা সরকারের কাছে একটি বাণিজ্যিক প্লট চেয়েছি। সেটা পেলে সারা বছর উদ্যোক্তারা মেলা করতে পারবে।
ফেস্টিভ্যালটি সবার জন্য উন্মুক্ত। ফেস্টিভ্যাল প্রতিদিন সকাল ১০ টা হতে রাত ৮ টা পর্যন্ত চলবে। শুধুমাত্র বৃহস্পতিবার মেলার দ্বিতীয় দিন সকাল ১০ টা হতে দুপুর ২ টা পর্যন্ত শুধুমাত্র বিদেশী মিশনের কূটনীতিক ও বিদেশী অতিথিদের জন্য নির্ধারিত থাকবে।
এবারের হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল-২০১৯ এ ৪৫ টি স্টলে ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন ধরনের তাঁত ও কারুপণ্য যেমন: নকশি কাঁথা, বেনারসি শাড়ি, টাঙ্গাইল শাড়ি, জামদানি শাড়ি, সিরাজগঞ্জ শাড়ি-লুঙ্গী-গামছা, মণিপুরী কাপড়, রাঙ্গামাটির চাকমাসহ অন্যান্যদের কাপড়, খাদি, রাজশাহী সিল্ক, পাটজাত পণ্য, শতরঞ্জি পণ্য, বাঁশ-বেত পণ্য, পটচিত্র প্রদর্শিত ও বিক্রয় করা হচ্ছে।
তাঁতিদের উৎপাদিত পণ্যের পাশাপাশি দেশের শীর্ষস্থানীয় চিত্রশিল্পী ও ডিজাইনারদের তৈরি অত্যন্ত আকর্ষণীয় দৈনন্দিন ব্যবহার্য পণ্য ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শন করা হবে। প্রদর্শনীর পাশাপাশি এসব পণ্যের বুনন প্রক্রিয়াও প্রদর্শিত হচ্ছে।
এ ফেস্টিভ্যালের মাধ্যমে তাঁত পণ্য প্রস্তুতকারক, শীর্ষস্থানীয় ডিজাইনার এবং ক্রেতাদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
হৃদয় সম্রাট