আজ ২০ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ২০২৪, ঢাকা বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজ প্রাঙ্গনে দুই দিন ব্যাপী “আদিবাসী খাদ্য ও শস্য মেলা-২০২৪ ” উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ফরিদা আখতার, উপদেষ্টা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন মহাপ্রজ্ঞা এডুকেশন ট্রাস্টের সভাপতি ভদন্ত প্রজ্ঞানন্দ মহাথের।
উক্ত অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস এবং ড,দিলিপ কুমার বড়ুয়া, উপাচার্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়।
অনুষ্ঠানে উদ্ধোধকের বক্তব্যে ফরিদা আখতার বলেন, আমাদের বেঁচে থাকার জন্য ভেজাল মুক্ত খাদ্য খাওয়া খুবই প্রয়োজন। বর্তমানে মানুষের ক্যান্সারসহ যে জটিল রোগ সৃষ্টি হচ্ছে তার মধ্যে খাদ্য থেকেই প্রধান লক্ষ্য করা যায়।একজন মানুষ সুষ্ঠভাবে বেঁচে থাকতে বিশুদ্ধ খাদ্য খুবই প্রয়োজন। আমাদের দেশে যে খাদ্যশস্য উৎপাদন হয় তার মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম অন্যতম।
তিনি আরো বলেন, রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে প্রায় ৮২ প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়।আর দেশে যে পরিমাণ শাক-সবজি উৎপাদন হয় তার মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামে বেশি বিশুদ্ধ শাক-সবজি উৎপাদিত হয়। তাই আমরা যারা বৃহৎ জনগোষ্ঠী আছি আমাদের দায়িত্ব পাহাড়ি মানুষের খাদ্য, সংস্কৃতিকে রক্ষা করা। সর্বশেষ তিনি বলেন, বাজারে ভেজাল খাদ্য বিক্রি বন্ধ করার জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে এবং আজকে এই আদিবাসী খাদ্য ও শস্য মেলায় আসতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে জাকির হোসেন বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে বাঙালিসহ ৫৪টির বেশি জনগোষ্ঠী বসবাসরত আছে। তার মধ্যে বাঙালি ভিন্ন অন্যান্য আদিবাসী জাতিসমূহের যে সংস্কৃতি, ভাষা,খাদ্যভাস ও বিশেষ কৃষি সেগুলো রক্ষায় সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ভদন্ত প্রজ্ঞানন্দ মহাথের বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ আর্থসামাজিক ভাবে এখনো পিছিয়ে আছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে খুব অল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী ঢাকায় পড়াশোনা করতে পারে, তাই আদিবাসীদের কথা ভেবে ঢাকায় আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। তিনি আরো বলেন, বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজর মাধ্যমে আদিবাসীদের সাথে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর সেতুবন্ধন রচিত হয়েছে এবং সর্বশেষ সকলের সমন্বিত পদক্ষেপের মধ্যে দিয়ে আদিবাসীদের খাদ্যভাসের সাথে সবাই পরিচিত লাভ করুক এই আশা ব্যক্ত করেন |
রোবায়েত ফেরদৌস তার বক্তব্য বলেন, পৃথিবীতে ৭০ কোটি মানুষ খাদ্যের অভাবে থাকে। বাংলাদেশে যে পরিমাণ খাদ্য অপচয় হচ্ছে যা উন্নত বিশ্বে তেমন লক্ষ্য করা যায় না। আজকে যে পরিমাণ খাদ্য ও শস্য নষ্ট করা হচ্ছে তা কখনো কাম্য নয়। তিনি আরো বলেন, খাদ্য অপচয় না করে যারা খাদ্য পাচ্ছে না তাদের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা করতে হবে। আজকে আমাদের বাংলাদেশে জায়গায় দখল হচ্ছে, আবাদি জমি,কৃষি জমি নষ্ট করা হচ্ছে। তার মধ্যে আদিবাসীদের জায়গা জমি সবসময় আজ দখলদারদের চোখে পড়ছে।
ড, দিলিপ কুমার বড়ুয়া তার বক্তব্য বলেন,বর্তমানে খাদ্যের মধ্যে আজ নানান ভাবে বিষ মেশানো হচ্ছে। পাহাড়ী খাদ্য হচ্ছে ভেজাল মুক্ত খাদ্যের মধ্যে অন্যতম। তিনি আদিবাসী খাদ্য ও শস্য মেলার সফলতা কামনা করেন এবং এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের সব জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে পারস্পরিক এক সম্পর্ক সৃষ্টি হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।