যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের লস আলতোস শহরে এক মা তার গ্যারেজ থেকেই শুরু করেছিলেন ছোট একটি উদ্যোগ, যা আজ $১ বিলিয়ন আয়কারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এই ধরনের ব্যবসায় উদ্যোগকে ইংরেজিতে বলা হয় “side hustle” বা মূল চাকরির বাইরে, নিজের সময় ও পরিশ্রম দিয়ে আয় করার উপায়।
স্যান্ড্রা ওহ লিন কর্মজীবনে ইবে তে সাত বছর কাজ করেন যেখানে তিনি পেপ্যাল মোবাইল লঞ্চ করেন এবং ইবে ফ্যাশন ব্যবসার নেতৃত্ব দেন। তারপর ২০১১ সালে KiwiCo শুরু করার আগে ফ্যাশন-সম্পর্কিত একটি স্টার্টআপ আইডিয়ায় কাজ করেন।
এখন প্রশ্ন হলো Kiwico কি?
KiwiCo মূলত শিক্ষামূলক এবং হ্যান্ডস-অন (hands-on) ক্রিয়েটিভ প্রজেক্ট ক্রেট তৈরি করে, যা শিশুদের সৃজনশীলতা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা এবং STEM/STEAM (Science, Technology, Engineering, Art, Math) শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে সাহায্য করে। Kiwicoর কিছু প্রধান ধরনের পণ্য
প্রধান পণ্যের ধরন:
STEM/STEAM ক্রেট: রোবোট বানানো, বিজ্ঞান পরীক্ষা, ইলেকট্রনিক্স প্রজেক্ট।
Art & Craft ক্রেট: ছবি আঁকা, হ্যান্ডমেড জুয়েলারি, কাগজ-ও-কাপড়ের শিল্পকর্ম।
Engineering & Tinker ক্রেট: ছোট যন্ত্রাংশ বা কাঠামো তৈরি করা।
সাবস্ক্রিপশন ক্রেট: মাসিক কিট, বয়স অনুযায়ী আলাদা সিরিজ।
Activity Kits: ঘরে বসে শিক্ষামূলক খেলনা ও DIY প্রজেক্ট।
সাধারণভাবে, KiwiCo-এর সব প্রোডাক্টই শিশুদের হাতে কিছু তৈরি করার মাধ্যমে শেখার অভিজ্ঞতা দেয় এবং তাদের আত্মবিশ্বাস ও সৃজনশীলতা বাড়ায়।
Kiwicoর প্রতিষ্ঠাতা স্যান্ড্রা বলেন, “আমার সন্তানরা যখন ছোট, আমি চেয়েছিলাম তারা কল্পনাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে সমস্যা সমাধানের দক্ষতা শিখুক। হাতে কলমে কিছু তৈরি করার অভিজ্ঞতা শিশুদের আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলে, শেখার আনন্দ দেয়। নিজের শৈশবেও আমি মায়ের সঙ্গে এমন আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করেছি, যা আজও আমাকে অনুপ্রাণিত করে।”
“শুরুটা ছিল আমার সন্তানদের জন্য হ্যান্ডস-অন প্রকল্প তৈরি করা। পরে তা বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে শেয়ার করি। সবাই এত উচ্ছ্বসিত হয়ে অংশগ্রহণ করেছিল যে, আমি দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিই এটিকে ব্যবসায় পরিণত করার। বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলাপ করে ১০ মিলিয়ন ডলারের ভেঞ্চার ফান্ডিং পাই। এর পর আমরা লাভজনক ও নিজস্ব অর্থসঞ্চয়ের মাধ্যমে কোম্পানিকে আরও এগিয়ে নিতে সক্ষম হই।”
গ্যারেজ থেকে শুরু হওয়া KiwiCo ইতিমধ্যেই ৪০টিরও বেশি দেশে ৫০ মিলিয়নেরও বেশি ক্রেট পাঠিয়েছে। ১,৫০০-এর বেশি শিক্ষামূলক পণ্য তৈরি করা হয়েছে, এবং তাদের ক্রেটগুলো টার্গেট ও বার্নস অ্যান্ড নোবলেও বিক্রি হচ্ছে।
স্যান্ড্রা বলেন, “প্রথম শিপমেন্টে মাত্র ১৯টি ক্রেট পাঠাতে আমাদের ৫জনের একটি টিমের বক্স এবং শিপমেন্ট করতে পুরো ১টি দিন লেগেছিল। তারপরও সাপ্লাই চেইনের চ্যালেঞ্জ পার হয়ে আমরা ধীরে ধীরে বড় হতে সক্ষম হই।”
স্যান্ড্রার মতে, KiwiCo-এর সাফল্যের পেছনে রয়েছে ধৈর্য, সৃজনশীলতা এবং কৌতূহল। স্যান্ড্রার সন্তানরা কেবল kiwicoর পণ্য ব্যবহারই করে না, তারা পণ্য তৈরিতেও অংশ নেয়।
এ গল্প প্রমাণ করে, ছোট একটি পার্শ্ব উদ্যোগ কিংবা সাইড বিজনেসও সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি ও পরিশ্রমের মাধ্যমে বড় সাফল্যে পরিণত হতে পারে।
 

 
 

