২৩ নভেম্বর, শনিবার ধানমন্ডির WVA অডিটোরিয়ামে গৃহসুখন মহিলা সমিতির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো দিনব্যাপী হস্তশিল্প মেলা এবং ঐতিহ্যবাহী খাবারের প্রতিযোগিতা।
ঐতিহ্যবাহী খাবার প্রতিযোগিতায় হারানো দিনের খাবার গুলো তুলে ধরা হয় এই আয়োজনে।
হস্তশিল্প মেলায় ১৬ জন উদ্যোক্তা এবং খাবার প্রতিযোগিতায় ১৬ জন মোট ৩২ জন অংশ নেন এই আয়োজনে।
গৃহসুখন এর ৩৪ বছর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে খাবার প্রতিযোগিতা ও হস্তশিল্প মেলা এবং শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তা অ্যাওয়ার্ড প্রোগ্রামের আয়োজন করেন গৃহ সুখন এর চেয়ারম্যান রিমা জুলফিকার।
প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন মোসাম্মদ নিলুফার রহমান উপপরিচালক (প্রশাসন) মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, বিশেষ অতিথি ছিলেন WEA প্রেসিডেন্ট এবং ফেইথ বাংলাদেশ এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর নিলুফার করিম এবং আরো অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রথম পর্বে ফিতা কেটে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন অতিথিবৃন্দ। এরপর ঐতিহ্যবাহী খাবার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের খাবারের স্বাদ নিয়ে বিচারক হিসেবে খাবারের স্বাদ, মান এবং পরিবেশনার উপর ভিত্তি করে ৩ জন বিজয়ী নির্বাচন করা হয় এবং তাদের পুরস্কৃত করা হয়।
হস্তশিল্প মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন উদ্যোক্তারা। তাদের পণ্যের মান, স্টল সাজানো এবং সর্বোচ্চ বিক্রি করে সেরা ৩টি স্টলকে পুরস্কার দেয়া হয় এই আয়োজনে।
এছাড়াও শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তা হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন গৃহ সুখনের প্রশিক্ষক সুকন্যা ট্রেনিং সেন্টার এর সিইও দেলোয়ারা খানম, ওয়ার্লড অ্যাসোসিয়েশন মাস্টার শেফ অফ বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট শাহিদা ইয়াসমিন, বাণী’স ক্রিয়েশন এর তাহমিদা আহমেদ বাণী, এভিবেড বাই রোমানা এর চেয়ারপার্সন রুমানা পারভীন, সুনিপুণ কুকিং অ্যাসোসিয়েশন এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান তানিয়া শারমিন এবং ভ্যারাইটিকালেকশন এর ফাহিমা সুলতানা পারভীন ও রাইয়ান।
সকাল ১০ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান ৩টি পর্বে অনুষ্ঠিত হয়। অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকে অনেক উপভোগ করেন। সবাই আনন্দে উল্লাসে সারাদিন কাটিয়ে দেন এবং সাংস্কৃতিক আয়োজনও করা হয় সেদিন।
আয়োজন প্রসঙ্গে গৃহসুখন এর চেয়ারম্যান রিমা জুলফিকার বলেন,আমাদের উদ্দেশ্যটা এটাই ছিল যে আমরা নারীরা যেন একসাথে হতে পারি এবং উদ্যোক্তারা একসাথে হয়ে যেন একটা মিলনমেলার মত হয় যেহেতু আমরা রান্নার উপরে কাজ করি, তার মানে নারী উদ্যোক্তা কিভাবে তৈরি হবে এবং নারীরা কিভাবে এগিয়ে যাবে এই জিনিসগুলোর উপরে আমরা সব সময় উৎসাহ দিয়ে থাকি।
তিনি আরো বলেন, গৃহসুখন থেকে মেলার আয়োজনগুলো করে থাকি যেন নারীদের তৈরি পোশাক খাবার এবং তাদের বিজনেস কিভাবে আরো ভাল করতে পারবে – এই মেলার মাধ্যমে অনেক নারী একসাথে হয়ে তাদের ডিজাইন, খাবারের মান আরো ভালোভাবে কিভাবে করা যায় বিজনেস কোন দিক দিয়ে করলে কিভাবে করে ভালো হবে এই জিনিসগুলো তারা মেলার মাধ্যমে জানতে পারে।
উল্লেখ্য, Griha sukhan Women entrepreneurship development নিয়ে রিমা জুলফিকার কাজ করছেন ১৯৯০ সাল থেকে। ১৯৯০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই দীর্ঘ সময়ে তিনি প্রায় ৭৩০০০ নারীকে ট্রেনিং দিয়েছেন। গৃহসুখন নারী উদ্যোক্তা উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে এই শ্লোগান নিয়ে ‘প্রশিক্ষণ নিন ,আয় করুন। দীর্ঘদিন গৃহসখন নেসলে বাংলাদেশ সাথে কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করছে। বিভিন্ন অর্গানাইজেশন রূপচাঁদা ,রাঁধুনি, রান্না এখন খেলা এই ইভেন্ট গুলোর সাথে কাজ করেছে। ইউএনডিপি, কেয়ার ,ওয়ার্ল্ড ভিশন ,আইওএম ,সুইচ কন্টাক্ট দীর্ঘদিন অনেক সুবিধা বঞ্চিত নারীদেরকে নিয়ে কাজ করেছে গৃহ সুখন।
গৃহসুখনে রান্নার স্পেশালিস্ট হিসেবে রিমা জুলফিকার কাজ করেছেন দীর্ঘ ৩৪ বছর। এছাড়াও নেসলের সাথে রান্নার উপরে ট্রেনিং দিয়েছেন ৬ মাস এবং বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের রান্নার বিচারক হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে রান্না বিষয়ক ট্রেনিং এর উপরে তিনি প্রথম পুরস্কার অর্জন করেন।
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে ২০০২ সাল থেকে রান্নার উপরে ট্রেনিং এবং হস্তশিল্পের উপর প্রশিক্ষণ দেন এবং ‘প্রশিক্ষণ নিন আয় করুন’ দীর্ঘদিন এই স্লোগান নিয়ে কাজ করে যান এবং পুরস্কৃত হন। গৃহসুখন এর চেয়ারম্যান রিমা জুলফিকার বলেন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে নারীদের রেজিস্ট্রেশন করা দরকার।
নারী উন্নয়নে আগামীতে এধরনের আয়োজনসহ আরো নতুন নতুন অনেক বিষয় নিয়ে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন রিমা জুলফিকার। নারীদের দক্ষ করে তুলতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বিভিন্ন মেলা সহ আরো বড় পরিসরে অনেক বিষয় নিয়ে গৃহসুখন আগামীতে কাজ করবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।