দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে নিজস্ব প্রযুক্তি উদ্ভাবনে তরুণদের নিয়োজিত হবার আহ্বান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে গত দশ বছরে ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তথ্যপ্রযুক্তি প্রদর্শনী ‘ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো ২০১৯’ উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতের অগ্রগতির এই প্রশংসা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের গবেষণা অনুযায়ী বাংলাদেশ এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্রুততম অর্থনীতির একটি। জাতিসংঘ বলছে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে গত দশ বছরে ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রণীত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ পরিকল্পনা বাংলাদেশকে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির দিকে এগিয়ে নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেন মোমেন।
আবদুল মোমেন বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক বাজার সম্প্রসারণের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্ব দরবারে নতুন পরিচয় পেয়েছে। যার পেছনে রয়েছে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা এবং সময়ভিত্তিক বাস্তবায়ন।
‘মেড ইন বাংলাদেশ’ স্লোগানে শুরু হলো তিন দিনব্যাপী দেশের সর্ববৃহৎ প্রযুক্তি প্রদর্শনী। ১৪ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া প্রদর্শনীটি চলবে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানে দেশীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রশংসা করে বক্তব্য রাখেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বছরে চার কোটি মোবাইল ফোন আমদানি করে। সরকারের ব্যবসায়বান্ধব নীতির কারণে গত এক বছরে ওয়ালটন, সিম্ফোনিসহ কোরিয়ান স্যামসাং আমাদের হাইটেক পার্কে সেট উৎপাদন করছে।
বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের মাধ্যমে নতুন প্রযুক্তি ব্যবসায় উদ্যোক্তাদের সরকার সহযোগিতা করে আসছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ।
তিনি আরো বলেন, ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপোর মাধ্যমে বাংলাদেশ নিজস্ব সক্ষমতা প্রদর্শন করা হবে যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, উদ্ভাবক এবং ব্যবসায়ীদের একই জায়গায় নিয়ে আসা হয়েছে।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের সংসদীয় কমিটির প্রধান এ কে এম রহমতুল্লাহ বলেন, প্রযুক্তিখাতে বাংলাদেশ বিশ্ব অর্থনীতিতে নিজস্ব জায়গা করে নিয়েছে।
রহমতুল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদের নেতৃত্বে দেশের প্রযুক্তি খাতে অসামান্য অগ্রগতি হয়েছে।
বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম বলেন, তরুণ উদ্ভাবকেরাই ডিজিটাল বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ায় মূখ্য ভূমিকা পালন করছে।
তিনি বলেন, আইসিটি বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে তরুণদের উদ্ভাবনী, ব্যবসায়ীক এবং সেবাভিত্তিক প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।
উইটসার মহাসচিব জেমস পয়জান্ট বাংলাদেশি তরুণদের স্থানীয় সমস্যা সমাধানে প্রযুক্তি উন্নয়নে মনোযোগী হবার আহবান জানান।
আইসিটি শিল্প সম্পর্কিত বিভিন্ন পণ্য এবং আইসিটি পরিষেবা তিন দিনব্যাপী এই এক্সপোতে একত্রে প্রদর্শন করে দেশের সাফল্যের কথা তুলে ধরবেন আইসিটি ইন্ডাস্ট্রির সব ব্যবসায়ী। এ ছাড়াও স্থানীয় এবং বিদেশিদের মধ্যে বিপুলসংখ্যক বিনিয়োগকারী এক্সপোতে অংশ নেবেন। যেখানে তারা স্থানীয় উদ্ভাবনগুলো দেখবেন এবং সেটি থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন। ইভেন্টের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশের দশ বছরের সাফল্যগুলো বিভিন্ন সেমিনার এবং ব্রেকআউট সেশনের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে।
বাংলাদেশ সরকারের এটুআই ইনোভেশন ল্যাব তাদের প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষিক্ষেত্র, কর্মসংস্থান, পরিবেশ, মেয়েদের ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্য, আইন, পর্যটন ইত্যাদি ক্ষেত্রে উদ্যোগগুলো প্রদর্শন করবে। দেশীয় উদ্যোক্তাদের তৈরি পণ্যদ্রব্যসমূহ প্রদর্শনের পাশাপাশি দেশের প্রযুক্তিতে আগ্রহী তরুণদের অংশগ্রহণকে এক্সপো চলাকালে সমানভাবে উৎসাহিত করা হবে।
অ্যাক্টিভেশন প্রোগ্রামগুলো বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিচালিত হবে, যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের পণ্যগুলো পিচ করার সুযোগ পাবে। অ্যাক্টিভেশন প্রোগ্রামগুলো থেকে নির্বাচিত সেরা ৩০টি উদ্ভাবন এক্সপোতে প্রদর্শিত হবে এবং প্রদর্শনীটি শেষ হওয়ার পরে শীর্ষ ১০ তরুণ উদ্ভাবককে বঙ্গবন্ধু উদ্ভাবনী অনুদান (বিআইজি) দিয়ে ভূষিত করা হবে।
ডেস্ক রিপোর্ট
ছবি: কোরবান আষাঢ়