একটি ছোট শহর, একটি বড় স্বপ্ন—আর সেই স্বপ্নের পথে এক অদম্য যাত্রা। দিনাজপুর থেকে যাত্রা শুরু করে গুগলের তাইওয়ান অফিসে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন রিচিতা খন্দকার রিফাত, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী। আগামী ১৮ আগস্ট, রিচিতা আনুষ্ঠানিকভাবে গুগলে যোগ দেবেন।
রিচিতার শৈশব কেটেছে দিনাজপুর শহরে। দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি শেষ করার পর তিনি ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছোটবেলা থেকেই কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের প্রতি আগ্রহ ও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সাহসী অভ্যাসই তাঁকে পৌঁছে দিয়েছে এই অনন্য উচ্চতায়। স্কুলজীবন থেকেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াড ও প্রোগ্রামিং কনটেস্টে অংশগ্রহণ করে আসছেন রিচিতা। বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই অভ্যাস আরও গভীর হয়েছে। একক ও দলগত উভয় পর্যায়েই তিনি জয় করেছেন বহু পুরস্কার—আর সেসব অর্জনই তাঁকে গড়ে তুলেছে এক আন্তর্জাতিক মানের প্রতিভা হিসেবে।
বিশ্বাস করবেন কি না, গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানে সুযোগ পাওয়ার জন্য রিচিতা কোনো বিশেষ কোচিং বা বড় প্রস্তুতি নেননি। বরং নিজের দক্ষতা, সমস্যার সমাধান করার ক্ষমতা, এবং আত্মবিশ্বাসের উপর ভর করেই এগিয়েছেন। সাক্ষাৎকারের ধরনটা বুঝে নিয়েই তৈরি হয়েছিলেন—কীভাবে প্রশ্ন আসে, কীভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে হয়। বর্তমানে কাজ করছেন বাংলাদেশ স্যামসাং আইআইটি ইনস্টিটিউটে। এই অভিজ্ঞতাও তাঁর আত্মবিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করেছে।
তরুণদের উদ্দেশে রিচিতার বার্তা অত্যন্ত স্পষ্ট ও শক্তিশালী:
“শেখার কোনো বিকল্প নেই।”
তিনি মনে করেন, “স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়—যে পর্যায়েই থাকি না কেন, প্রতিটি মুহূর্ত থেকে শেখার চেষ্টা করতে হবে। কারণ সেই শিক্ষাই একদিন আমাদের বড় স্বপ্ন ছুঁতে সাহায্য করবে।”
রিচিতার এই সাফল্য শুধু তাঁর একার নয়—এটি বাংলাদেশের হাজারো তরুণ-তরুণীর স্বপ্নপূরণের প্রতীক। তাঁর গল্প প্রমাণ করে দেয়, মেধা, পরিশ্রম আর আত্মবিশ্বাস থাকলে কোনো স্বপ্নই দূর নয়।