সাড়া ফেলল জামদানির ব্যাগ

0
উদ্যোক্তা লুৎফুন্নেসা মেঘনা

ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছেন মা-খালারা পারিবারিক অনুষ্ঠানে বেশিরভাগ সময় জামদানি পরেন। সেই থেকেই জামদানির প্রতি মেঘনার এক অন্যরকম ভালোবাসা। জীবনের একটা পর্যায়ে এসে যখন সিদ্ধান্ত নেন উদ্যোক্তা হবেন, তখন জামদানিকেই বেছে নেন প্রধান পণ্য হিসেবে।

উদ্যোক্তা লুৎফুন্নেসা মেঘনা ইডেন মহিলা কলেজে পড়াশোনার সময় প্রথমে পাইওনিয়ার ও পরে মার্কেন্টাইল ব্যাংকে চাকরি করেছেন। বিয়ের কয়েক বছর পর একটা কন্যাসন্তানের জন্ম হয় । তাকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন তিনি। তারপর একটা ছোট উদ্যোগ নেন। চোখে তখন তার অপার স্বপ্ন, আর মনে দৃঢ় প্রত্যয়। সংসারের যাবতীয় কাজের পাশাপাশি একটু একটু করে তিনি তার কন্যা আর স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। মেয়েকে নিয়ে যেহেতু স্বপ্ন, তাই তার নামেই নিলেন উদ্যোগ “Rafia Fashion House.

লুৎফুন্নেসা মেঘনা বলেন: জামদানি শাড়ি নিয়ে অনেকেই কাজ করেন। কিন্তু আমি চেয়েছি জামদানিটাকে একটু অন্যভাবে সবার সামনে তুলে ধরতে। সে কারণেই ঢাকাই জামদানি দিয়ে তৈরি করি বিভিন্ন ডিজাইনের পার্স, টিস্যু বক্স, গহনা, জুতাসহ এরকম পণ্য।

বতর্মানে এই উদ্যোক্তার ছোট একটা কারখানা রয়েছে। পাঁচ-ছয়জন সহযোদ্ধা আছেন তার। তারা নানা বৈচিত্র্যপূর্ণ জামদানি পণ্য তৈরি করেন।

মেঘনা বলেন, “একটা সময় জামদানি বলতে শুধু শাড়িকেই বোঝানো হতো। তবে এখন জামদানি থেকে তৈরি হচ্ছে অনেক কিছু। দেশের প্রায় সবখানে আমি আমার পণ্য বাজারজাত করে থাকি। প্রথমে নিজের সামান্য পুঁজি দিয়ে প্রডাক্ট বানানো শুরু করি। এখন গড়ে মাসে আমার সেল হয় ৫০ হাজারের মতো। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশে ব্যক্তিগত উদ্যোগে আমাদের পণ্য যাচ্ছে।”

স্বামীসহ পরিবারের সবাই মেঘনাকে তার উদ্যোগে সহযোগিতা করছেন। উদ্যোক্তা হিসেবে নারীদের জন্য পরিবেশ কেমন হওয়া উচিত জানতে চাইলে মেঘনা উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন: আসলে প্রতিটি কাজই পরিশ্রমের। নারী উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিটি নারীরই উচিত তার মেধাকে ঘরের মধ্যে বন্দী না রেখে কাজের মাধ্যমে প্রকাশ করা। যেকোন ভালো কাজের ক্ষেত্রেই আসতে পারে শত বাধা-বিপত্তি। বিশেষ করে নারী হয়ে কিছু করতে গেলে সমাজ-সংসারের সঙ্গে অনেক লড়াই করতে হয়। এসব বিষয় নিয়ে এখন আর আলাদাভাবে ভাবি না। আমি বিশ্বাস করি দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করলে অবশ্যই সফলতা আসবে।

তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে মেঘনা বলেন, এস এম ই ফাউন্ডেশনসহ অনেক সরকারি ট্রেনিং সেন্টার আছে যেগুলো থেকে তরুণ উদ্যোক্তাদের ট্রেনিং নেওয়া উচিত। লক্ষ্য স্থির রেখে পরিশ্রম করে এগিয়ে যাওয়া উচিত।

জামদানি পণ্য নিয়ে উদ্যোক্তা মেঘনা তার স্বপ্নের বিষয়ে বলেন: রাফিয়াকে নিয়ে আমি স্বপ্ন দেখি আমার পণ্য একদিন বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। আমরা সেই ইতিহাসের অংশীদার হবো। আমাদের শক্তি হিসেবে আছেন ক্রেতা এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরা। সবাই আমাদের পাশে থাকবেন সেই আশা করি। আশা করি, স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে অনেক দূর এগিয়ে যাবে রাফিয়া।

আফসানা অভি
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here