রাজধানীর যে বাজারে কৃষি উদ্যোক্তা সরাসরি পণ্য তুলে দেন ক্রেতার হাতে

0

ভেজাল ও কেমিক্যালমুক্ত শাক-সবজি শহরবাসীর কাছে পৌঁছে দিতে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে “কৃষকের বাজার” নামে বাজার চালু করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন ও হরটেক্স ফাউন্ডেশন। জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পাশ ঘেঁষ থাকা সেচ ভবন প্রাঙ্গণে বসে এ বাজার।

নগরবাসীকে নিরাপদ এবং সতেজ শাক-সবজি পৌঁছে দেবার লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের নেওয়া পদক্ষেপের অংশ হিসেবে চালু করা বাজারে কৃষক নিজের জমিতে চাষ করা পণ্য নিয়ে আসেন। বিক্রেতারা যেমন ন্যায্য দামে ভোক্তার কাছে পণ্য সরাসরি বিক্রি করতে পারেন, তেমনি ক্রেতারা পান সরাসরি জমি থেকে তুলে আনা টাটকা শাক-সবজি।

মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর থেকে আসা কৃষি উদ্যোক্তা সাঈদুর রহমান বলেন, ‘আমি ৫ বছর ধরে ২৫ বিঘা জমিতে কৃষিকাজ করছি। প্রায় আড়াই বছর যাবৎ পণ্য বিক্রি করছি কৃষকের বাজারে। এখানে সরাসরি ক্রেতাদের কাছে পণ্য বিক্রি করতে পেরে খুব ভালো লাগে।’

নওগাঁ জেলার সাপাহার থেকে আসা কৃষক দেলোয়ার হুসেন জানান, তিনি ১০৬ বিঘা জমিতে ড্রাগন, লেবু, কলা ও পেয়ারাসহ বিভিন্ন ধরনের ফলের চাষ করেন। তিনি বলেন, এ বাজারে ন্যায্যমূল্যে সরাসরি ক্রেতাদের পণ্য দিতে পারছি। এতে বাড়তি খরচ হয় না, ক্রেতারাও সন্তুষ্ট থাকছেন।

কৃষকের বাজারে কেনাকাটা করতে আসা ডা. শাহিন আরা পারভীন উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, “আমি আজই প্রথম এসেছি এই বাজারে। পণ্যগুলো টাটকা এবং দামটাও রিজনেবল।”

কেনাকাটা করতে আসা আরেক জন ক্রেতা আইজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, ‘কৃষকরা আমাদের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখে। তারা যদি তাদের উৎপাদিত পণ্যের সঠিক মূল্য পায় তাহলে আমাদের দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখার পাশাপাশি আমাদেরকে ফ্রেশ পণ্য সরবরাহ করতে পারবে। আমি চাই প্রতিটি শহরে এরকম কৃষকের বাজার চালু হোক।’

শুরুতে হাতে গোনা কয়েকজন কৃষক আসলেও এখন সেচ ভবনের পুরো প্রাঙ্গণ জমজমাট হয়ে যায়। আলু, টমেটো, চালকুমড়ো, লেবু, করলা, কাকরল, বেগুন, পেপেসহ বিভিন্ন শাক-সবজির পাশাপাশি নানা ধরনের সতেজ ফলমূলও পাওয়া যায় প্রতিদিন।

সবজি-ফল ছাড়াও ঘানি ভাংগা সরিষার তেল, আটা ও বিভিন্ন ধরনের অর্গানিক ড্রাই ফুডসহ ঘরে বানানো হরেক রকমের আচার পাওয়া যায় কৃষকের বাজারে। এছাড়াও নতুন সংযোজন মৎস্য অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ মাছের দোকান, গরুর মাংস ও দেশি মুরগি।

সকাল ৭টায় শুরু হয়ে দুপুর পর্যন্ত চলে কেনা বেচার ধুম। প্রতি শুক্র ও শনিবার সপ্তাহে দুই দিন চলে এই বাজার।

হাবিবুর রহমান,
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here