মহিদুলের হাত ধরে বাংলাদেশে প্রথম স্টাডি ক্যাফের যাত্রা শুরু

0

পশ্চিমা দেশগুলোতে স্টাডি ক্যাফে বেশ প্রচলিত এবং বেশ জনপ্রিয়। বাংলাদেশে আধুনিক লাইব্রেরির প্রচলন থাকলেও স্টাডি ক্যাফে সচরাচর দেখা যায় না।

নিরিবিলি পড়াশোনা, গুরুত্বপূর্ণ মিটিং,দীর্ঘ কর্মঘণ্টার পর অথবা ক্লাশ শেষে এবং ব্যক্তিগত জীবনের দৈনন্দিন অবসাদে নিজের জন্য কিছুটা সময় খুঁজতেই স্টাডি ক্যাফের আর্বিভাব।

বাংলাদেশের প্রথম স্টাডি ক্যাফে ‘ভাইভ’ নিয়ে বেশ সাড়া ফেলেছেন তরুণ উদ্যোক্তা মহিদুল আলম। ‘ভাইভ’ এর প্রতিষ্ঠাতা মহিদুল আলম পড়াশোনা করছেন আবুধাবির নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্টাডি ক্যাফে ধারণাটি পৃথিবীর অনেক দেশেই জনপ্রিয়। মহিদুল আলম যখন যুক্তরাষ্ট্রের ছিলেন, তখন এমন অনেক রেস্টুরেন্ট দেখেছেন, যেখানে মানুষ খাবারের পাশাপাশি তাদের পড়াশোনার জন্য সময় কাটায়। সেই জায়গা থেকেই স্টাডি ক্যাফের ধারণাটি নেন তিনি। এছাড়া কোরিয়ান চলচ্চিত্রে দেখানো ক্যাফেগুলোও তার অনুপ্রেরণা ছিলো।

এটিই তার প্রথম উদ্যোগ নয়। ভাইভ এর আগে অ্যাপস ভিত্তিক ইংরেজি শেখার প্লাটফর্ম ‘এডভাইভ’ প্রতিষ্ঠা করেন। পড়াশোনার জন্য বা প্রয়োজনীয় কাজ করতে একটি নিরিবিলি জায়গার প্রয়োজন। সেই চিন্তা থেকেই ২০২৩ এর আগস্টের ২০ তারিখে এই ক্যাফের যাত্রা শুরু হয়।

নগরীর হাতিরঝিলের মহানগর ২ নম্বর গেটে ভাইভ স্টাডি ক্যাফে এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে নাগরিক বইপ্রেমীদের জীবনে। সঙ্গে রয়েছে চা-কফি আর মজাদার সব খাবারের ব্যবস্থা।

স্টাডি ক্যাফের ইন্টেরিয়রের নান্দনিকতা যে কাউকে মুগ্ধ করবে। ‘ভাইভ’ এ ঢুকতেই চারপাশ থেকে থেকে স্বাগত জানায় বই। অসংখ্য বইয়ের পাতা দেয়ালে সেঁটে স্প্রে পেইন্ট দিয়ে নান্দনিকভাবে লেখা রয়েছে ভাইভ কথাটি।

অন্যদিকটায় বড় একটি টেবিলের পাশ ঘেঁষে রাখা একটি বইয়ের তাক। টেবিলের ওপরেও বইয়ের স্তুপ। এক পাশের দেয়ালে টাঙানো রয়েছে একটি হোয়াইট বোর্ড। এসব দেখে বিভ্রান্ত হবেন যে কেউ; এটি কি লাইব্রেরি নাকি কোন ক্যাফে? ভাইভ আসলে দুটোই! এটি এমন এক ক্যাফে যেখানে খাবার বিক্রির চেয়ে গুরুত্ব পায় পাঠকের জন্য পড়াশোনার মনোরম একটি পরিবেশ নিশ্চিত করা।

ভাইভে রয়েছে একটি কফি কর্নার। হালকা শীতের আবহে এসপ্রেসোর কড়া গন্ধে জেগে উঠতে পারে মনের ভেতরে লুকিয়ে থাকা লেখক বা অবচেতন মনের কোনো চিন্তার প্রকাশ। ঢোকা মাত্রই আপনাকে স্বাগত জানানো হবে ওয়েলকাম ড্রিংকস দিয়ে। কফির পাশাপাশি আইসক্রিম, ওয়াফেল, মোহিতো, স্যান্ডউইচ, চাসহ আরো বেশকিছু আইটেম রয়েছে ক্যাফেতে।

ভেতরের দিকে একটি কক্ষের নাম সাইলেন্ট জোন। হাতিরঝিলের আশপাশে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় আহ্‌ছানউল্লা, ইস্ট ওয়েস্ট, সাউথইস্ট, বুটেক্স বা ব্র্যাকের শিক্ষার্থীরা এখানে আসেন গ্রুপ স্টাডি করতে। সেই সঙ্গে স্ন্যাকস আর অন্যান্য খাবারসহ বাড়তি পাওনা হিসেবে আছে আরামদায়ক পরিবেশ।

ভাইভে এসে যে কেউ বই পড়তে পারবেন, ল্যাপটপ নিয়ে অফিসের বা নিজের কাজ করতে পারবেন, অফিস শেষে কলিগ বা বন্ধুদের নিয়ে ঘণ্টাখানেক ভালো সময় কাটাতে পারবেন বা পরিবার–পরিজন নিয়ে এখানে মজার সব খাবার খেয়ে যেতে পারবেন। রয়েছে ফ্রি ওয়াই–ফাইয়ের ব্যবস্থা।

প্রতিষ্ঠার অল্প কিছুদিনের মধ্যেই মানুষের আকর্ষণ কেড়েছে ক্যাফেটি। তরুণ এক উদ্যোক্তার ব্যতিক্রমী উদ্যোগ এবং কয়েকজন স্বপ্নবাজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর নিরলস পরিশ্রমের ফল এই ক্যাফে।

সেতু ইসরাত
উদ্যোক্তাবার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here