সফল নারী উদ্যোক্তা-উম্মে হাবিবা নীলা

পেপারে একটা ছোট্ট বিজ্ঞাপণ দেখলেন মেশিন বিক্রয়ের। উৎসাহ নিয়ে কল করলেন নীলা। কিন্তু তার ফোন কলে কোন রকম আগ্রহ প্রকাশ করছিলেন না মেশিন বিক্রেতা। সাহস করে বারবার কল করে উম্মে হাবিবা নীলা বিক্রেতাকে বোঝাতে সক্ষম হলেন, তিনি মেশিনটা কিনবেন।

মেশিন কেনা হলো সাতটি। ছোট্ট করে ফ্যাক্টরি দিলেন।
প্রয়োজন হলো মূলধনের। লোনের জন্য অনেক ব্যাংকের দ্বারস্থ হলেন, সাড়া পেলেন না। সাড়া না পেলেও সাহস হারাননি নীলা।

উদ্যোক্তা নিজ কারখানায় কাজ দেখছেন।

ব্যাংকেবল প্রোজেক্ট তৈরি করে ট্রাস্ট ব্যাংকের নতুন শাখা। ফ্যাক্টরি ভিজিট করলো ট্রাস্ট ব্যাংক এবং কোনো জামানত ছাড়াই ১০ লক্ষ টাকা লোন পেলেন নীলা। লোন পেয়েই নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করলেন উদ্যোক্তা।

তিনি বলেন, “আমার জীবনে প্রথম যেদিন আমি আরামবাগে যাই, সেখানকার ফ্যাক্টরিগুলো দেখে আমি অভিভূত হই এবং আমার কাজের গতিটা আরো বেড়ে যায়। তখন থেকেই চিন্তা হয় যে, আমি একটা অফসেট ফ্যাক্টরি নিজের মত করে দেব। অফসেট ফ্যাক্টরি দিয়েই আমি আমার কর্মজীবন শুরু করবো।”

মেশিনে প্রিন্টিং এর কাজ চলছে।

‘আমার ফ্যাক্টরি আছে, আমাকে কাজ দিন’, বিভিন্ন অফিসে গিয়ে এভাবেই বলেছেন উদ্যোক্তা উম্মে হাবিবা নীলা। এমন মনোবল আর কাজ করবার দৃঢ় প্রত্যয় দেখে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান উদ্যোক্তাকে কাজ দিতে শুরু করলো। নিজেকে কাজের যোগ্য বলে বারবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে  প্রমান করতে চেয়েছেন নীলা এবং প্রতিবারই কাজের গুণগত মানের পাশাপাশি সঠিক সময়ে ডেলিভারী দিয়ে নিজেকে প্রমান করেছেন।

তিনি বলেন, “মনের ইচ্ছেই সবচেয়ে বড় ব্যাপার। প্রবল ইচ্ছে শক্তিই মানুষকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়। পাশাপাশি মূলধনও লাগবে, কিন্তু মনের ইচ্ছাটাই বড়।

কর্মব্যস্ত কর্মীগণ

খুব অল্প সময়ে যোগ্যতা প্রমান করেছেন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে। প্রতিটি জায়গায় অনেক কষ্টকরে কাজ আনতে হয়েছে নিজেকেই, মার্কেটিংও করেছেন নিজে।

নিজের কাজ আর দক্ষতা দিয়ে এসএমই ফাউন্ডেশনের বর্ষসেরা উদ্যোক্তা পুরষ্কার-২০১৭ জয়ী হয়েছেন উম্মে হাবিবা নীলা।

মাত্র এক যুগে ৩৮টির ওপর স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান উদ্যোক্তার প্রতিষ্ঠান ‘অপাস সাইন’ এর সম্মানিত ক্লায়েন্ট হয়েছে। যার মাঝে আছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এবং বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান।

অর্ডারকৃত প্রিন্ট পেপার প্রস্তুতকরণ

ডিজিটাল প্রিন্টিং এ আজ উদ্যোক্তার কাজ বিলবোর্ড, লাইট বক্স, ফিন্যান স্টিকার, ওয়ান ওয়ে ভিশন, গ্লাস ব্রান্ডিং, ব্যাকড্রপ, সাইনবোর্ড, ব্যানার, ফস্টেট পেপার, কাটিং স্টিকার, সেফটি সাইনেজ, রিফ্লেকটিভ স্টিকার, নিয়ন সাইনে অফসেট প্রিন্টিং, ভিজিটিং কার্ড, প্রসার ম্যাগাজিন, ক্যালেন্ডার, আইডি কার্ড, ভিউকার্ড, স্টিকার এবং লিটারেচার আজ উদ্যোক্তার স্বপ্নের ভুবনকে আলো করে জানান দিচ্ছে উদ্যোক্তার সফলতার কথা।

মাত্র ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যাত্রা শুরু করে বর্তমানে দুটি ফ্যাক্টরিতে ৩৫ জন কর্মী সফলতার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করছেন উদ্যোক্তা উম্মে হাবিবা নীলা।

খুরশিদা পারভীন সুমী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here