চাকরি করতেন ছাত্র জীবন থেকে। কিন্তু মনে হতো ইশ আমার যদি একটা প্রতিষ্ঠান থাকত তবে আমি কিছু মানুষের কর্মসংস্থান করতে পারতাম। এমনটাই ভাবতেন উদ্যোক্তা রাখি। ব্যবসা করার জন্য শুনেছেন অনেক কটু কথা। এসব কথা না শুনে নিজের মতো চলে হয়েছেন সফল নারী উদ্যোক্তা।
রাখি আলমাজি পড়াশোনা করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্ট বিভাগে থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। শুরুটা বেশ কঠিন হয় রাখির জন্য। আমাদের দেশের মেয়েদের বাইরে আর ঘরে, যে কোন কাজ শুরু করাটা অনেক কঠিন হয়ে ওঠে । ২০১৭ সালে মাত্র ৪ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করেন ব্যবসা। পার্টনার হিসেবে পেয়েছেন মিরাজুল ইসলাম নয়নকে। ক্র্যাফট নিয়ে কাজ করছেন তাই নামটাও দিলেন ‘কারুকালয়’। বর্তমানে মূলধন ৫/৬ লাখ এর কাছাকাছি ।
কারুকালয়ে পাওয়া যায় বাংলাদেশের হ্যান্ডমেড জুয়েলারি এবং ক্র্যাফটস আইটেম এর সব কাঁচামাল। ক্র্যাফটিং এর জন্য যা কিছু প্রয়োজন সব পাবেন কারুকালয়ে। যার মূল্য মাত্র ২ টাকা থেকে ২ হাজার টাকার ও জিনিসপত্র পাওয়া যায়।
রাখি উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, প্রথমত পুঁজির সমস্যা ছিল। কেউ আমাকে সাহায্য করেনি পুঁজির যোগান দিতে। এই ক্রাফট আইটেমগুলো সহজলভ্য জিনিসপত্র নয়। তাই সংগ্রহ করা কঠিন, সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন বাজারে যেতে হয়। সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপারটিও অনেক বড় বাধা।
সহায়তা পেয়েছেন ভাই রাসেল এবং খালাতো ভাই নয়ন এর কাছ থেকে। এরা সব সময় পাশে ছিল এবং আছে। অনেকে আত্মীয় পরিচয় দিতেও লজ্জাবোধ করেন। তাই অনেক কিছু মোকাবেলা করেই কাজ করছেন রাখি।
যুদ্ধ করে কাজ করে স্বপ্ন দেখেন অনেক বড় শো-রুম হবে। সবাই এসে নিজের পছন্দ মত ম্যাটেরিয়াল কিনবে, গহনা বানাবে। বর্তমানে রাখির সাথে ৬-৭ জন কাজ করে, তখন আরো অনেক মেয়েরা কাজ করবে এমনটি স্বপ্ন রাখির। বাংলাদেশে হ্যান্ডমেড জুয়েলারি এবং ক্র্যাফটিং এর প্রচার বাড়াতে চান এই উদ্যোক্তা।
প্রথম দিকে তেমন সাড়া পাননি । কারণ ক্র্যাফট জগৎ এখনো তেমন ভাবে প্রচারিত নয় আমাদের দেশে। কিন্তু বর্তমানে অল্প অল্প করে এগুচ্ছে ক্র্যাফটের কাজ।
তেমন কোন ট্রেনিং নেননি রাখি। তবে, কিছুদিন আগে উইমেন এন্ড ই-কর্মাস ফোরাম (উই) তে ক্র্যাফটিং এর উপর একটি ওয়ার্কশপ করেছেন । আর এই জন্য কৃতজ্ঞতা জানান, উই এর সাথে জড়িত রাজিব আহমেদ, নিশা এবং ক্র্যাফটিং এর ট্রেইনার তানজিলা অমিকে।
নতুনদের উদ্দেশে বলেন, যদি কাজ করতে চান আগে মানসিকভাবে ঠিক করুন, আসলেই কি আপনি ব্যবসা করবেন কি না। ধৈর্য রাখতে হবে, হতাশ হওয়া যাবে না। চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে, যত বাধা আসবে আপনি তত নতুন কিছু শিখবেন। লক্ষ্য ঠিক থাকলে সফলতা আসবেই ইনশাআল্লাহ।
খাদিজা খাতুন স্বপ্না