চাকরিজীবনের বাধাধরা নিয়ম এবং সীমিত উপার্জনে খুশি ছিলেন না কিষাণীর রাণী আফসানা আশা। শূন্য থেকে শুরুর গল্পই যেন বাস্তবে রুপ পেলো মোঃ আনসার আলী খন্দকার এবং আঞ্জুমান আরা বেগম দম্পতির মেয়ে আশার জীবনে।
নওগাঁ জেলার আত্রাই থানার নন্দিগ্রামের কন্যা আফসানা আশা। গ্রামের স্কুলে মাধ্যমিক দেওয়ার পর ভাই কে নিয়ে পাড়ি জমালেন শহরে উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্যে। আশার ‘আশা’ ঠিকই পূর্ণ হলো, ভালোভাবেই শেষ শিক্ষাজীবন। চাকরি করলেন রাজশাহীর শহরের দুটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে।

যে হবে রাণী, তাকে কি আর বাধাধরা নিয়মে, সীমিত বেতনে আটকে রাখা যায়? ‘আমের শহরে যার অবস্থান, তিনি কি নিয়ে কাজ করবেন তা নিয়ে চিন্তা করা কিন্তু একটু বোকামিই বটে, এমনটিই বক্তব্য আফসানা আশার। নিজের ভাবনা এবং এক শুভাকাঙ্খীর পরামর্শে কাজ শুরু হলো আম নিয়ে। কিন্তু এই ভেজালের জমানায় সবাইকে শুধু ফরমালিনমুক্ত আম খায়িয়েই ‘আশার আশা’ পূরণ হলো না। তার স্বপ্ন আরো উঁচুতে। তিনি ভাবলেন ক্রেতাদের তিনি আরো অনেক বিশুদ্ধ পণ্য পৌঁছে দেবেন।

ইংরেজি সাহিত্যে পড়াশোনা শেষ করা কন্যা আজ কিষাণীর রাণী। আমের পর তার পণ্যের তালিকায় যুক্ত হয়েছে গাঁওয়া ঘি, সরিষার তেল, খাঁটি মধু, শ্রীমঙ্গলের চা, নারকেলের তেল, চুইঝাল, কুমড়ো বড়ি, খেজুরের গুড় ইত্যাদি। ইংরেজি সাহিত্যে পড়াশোনা শেষ করা মেয়েটি আজ নিজে কর্মীদের সঙ্গে থেকে তার তত্বাবধানে সকল পণ্য প্রস্তুত করেন।

নিজ গ্রামের অসহায় মহিলাদের পাশে দাঁড়াবেন বলে গ্রামেই কারখানা গড়লেন। ১৫ জন মহিলার জীবিকার ব্যবস্থা নিশ্চিত হলো তার মাধ্যমে। এই ভাবেই এগিয়ে চলছেন আফসানা আশা। কৃষাণী যেন বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে এই স্বপ্ন পূরণের আশায় ছুটে চলছেন কিষাণীর রাণী আফসানা আশা।
তামান্না ইমাম
রাজশাহী ডেস্ক, উদ্যোক্তা বার্তা