সমাজে বিদ্যমান চিরাচরিত নিয়মের শৃঙ্খল ভেঙে নতুন কিছুর স্বপ্ন দেখতেন সাদিয়া ইসলাম। গ্রামে বড় হওয়া আর নতুন কিছু শেখার তীব্র আকাঙ্খার সুবাদে পরিবার এবং প্রতিবেশীদের দেখে রান্নাবান্না থেকে শুরু করে বাহারি রঙের পাটের শিকা, নকশি কাঁথাসহ সেলাইয়ের নানারকম কাজে বেশ পারদর্শী হয়ে উঠেছিলেন।
পড়াশোনার তাগিদে একসময় গ্রাম ছাড়েন স্ব-পরিবারে। পড়াশোনার পাশাপাশি হাত খরচের টাকা জমিয়ে নিজের জামা নিজেই বানাতেন নানারকম ডিজাইনে। সবসময়ই চাইতেন ব্যাতিক্রমী কিছু করতে।
২০১০ সালে সোনালী পাতি আর পুথি’র সংমিশ্রণে ধুপিয়ান কাপড়ে প্রথম কারচুপির কাজ করেন সুঁই সুতো দিয়ে। যেহেতু নিজে কিছু করার তীব্র আকাঙ্খা ছিলো তাই একটা মোক্ষম সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন বহুদিন।
ব্যবসার উদ্দেশ্যে ২০১৩ সালে ফেসবুকে পেইজ খুললেও সফল হননি। তারপর দীর্ঘদিন হন্যে হয়ে খুঁজেছেন দিক নির্দেশনা, মূলধন জোগানের সহায়তা। কিন্তু তাতেও সফল হননি। পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্থ হবে ভেবে পরিবারও সায় দেয়নি।
২০১৭ সালে জমানো টাকায় অনেকটা জেদের বশেই অনলাইনে যাত্রা শুরু করেন বাহারিকা’র। অদম্য ইচ্ছাশক্তিই ছিলো তার বড় পুঁজি। প্রায় দেড় বছর ধরে নিজের উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে চলেছেন উদ্যোক্তা।
উদ্যোক্তার নিজের ডিজাইনে তৈরী পণ্যের মধ্যে রয়েছে হ্যান্ডপেইন্ট, কারচুপি, এমব্রয়ডারি, ব্লক, বাটিক, স্ক্রিণপ্রিন্ট, হাতে তৈরী গয়না, হাতে আঁকা টিপ, সৌখিন আসবাবপত্র, ক্যানভাস, ওয়াল পেইন্ট, ক্রাফটিং, ওয়াল মেট, ওয়েস্টার্ন টপ্স, কুর্তি, বাচ্চাদের ড্রেস, ওয়েডিং গাঊন,লেহেঙ্গা, শাড়ী, পাঁটজাত দ্রব্য, লেদার, গামছা, মসলিন, জামদানী, সুতি ইত্যাদি। এছাড়া ক্রেতাদের অর্ডার অনুযায়ীও পণ্য তৈরী করেন উদ্যোক্তা।
বর্তমানে বেশকিছু কর্মী বাহারিকা’র হয়ে কাজ করছেন। এর পাশাপাশি সৃষ্টিশীল কাজে আগ্রহী এমন কর্মীদের নিয়ে আরো একটি টিম গঠন করেছেন উদ্যোক্তা।
তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে সাদিয়া ইসলাম বলেন, “মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। বাঁধা বিপত্তি থাকবেই, কিন্তু হতাশ হওয়া যাবে না। পাছে লোকে অনেক কিছুই বলবে, এদের কথায় কান দিতে নেই।”
জেবুননেসা প্রীতি
এসএমই করেস্পন্ডেন্ট ,উদ্যোক্তা বার্তা