উদ্যোক্তা- ইসরাত জাহান

ছোটবেলা থেকেই ইসরাত জাহানের সকল আগ্রহ হস্তশিল্পকে ঘিরে। প্রতিবেশীদের সুঁই সুতায় তৈরী নানান জিনিসপত্র বানাতে দেখে, বাবা যখন বাসায় থাকতো না তখন লুকিয়ে নিজেই চেষ্টা করতেন। বাবা চাইতেন মেয়ে ডাক্তার হোক, পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকুক সারাদিন।

স্কুলের টিফিনের টাকা জমিয়ে সেই টাকায় কাপড় কিনে নিজের পোশাক নিজেই তৈরি করতেন তিনি। অর্ডার নিয়ে অন্যদেরও পোশাক তৈরী করে দিতেন।

কাজের প্রশিক্ষণে কর্মীদের সাথে ব্যস্ত উদ্যোক্তা

শুরুতে পারিশ্রমিক না নিলেও ক্রমেই কাজের চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি হস্তশিল্পের কাজ শিখতে অন্যদের আগ্রহ দেখে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কাজ শেখানো শুরু করেন ইসরাত জাহান।

বিয়ের পর নানান প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছেন জানিয়ে ইসরাত বলেন, “আমার কোনো মূলধন ছিলো না। আমি আমার বাসায় একটা রুম নিয়ে ‘নকশা হ্যান্ডিক্রাফট’ নামে একটা প্রতিষ্ঠান দেই। সেখানে হস্তশিল্পের কাজ শেখানোর পাশাপাশি পণ্য বিক্রয় করতাম। বাসায় বসেই কাজ করতাম বিধায় পরিবার থেকেও আর খুব বেশি বাধার সম্মুখীন হতাম না।

প্রশিক্ষণার্থীদের সাথে উদ্যোক্তা ইসরাত জাহান

পোশাক তৈরির পাশাপাশি ক্লে দিয়ে বিভিন্ন পণ্য তৈরির কাজে যুক্ত হন উদ্যোক্তা ইসরাত জাহান। বিভিন্ন ডিজাইনে, পশু-পাখি, ফুল-ফল, গাছ ইত্যাদির আদলে তৈরি করতে থাকেন ক্লে পণ্য। ঘর সাজানোর জন্য ক্লে দিয়ে তৈরি শো পিস গুলোর অনেক ক্রেতার দেখা মিললো উদ্যোক্তার সাথে এবং অনেকেই ক্লে দিয়ে পণ্য তৈরির কাজ শিখতে ট্রেনিং নিতে আসেন উদ্যোক্তার কাছে।

তিনি জানান, “আমার তৈরী পণ্য প্রতিবেশীরা কিনে নিয়ে ইতালি, কুয়েত, দুবাইতে ব্যবসা করতো। সেখান থেকে যা আয় হতো তা খরচ না করে আমি জমিয়ে রাখতাম।”

উদ্যোক্তার তৈরি পণ্য

দেশব্যাপী বিভিন্ন এসএমই পণ্য মেলাতে অংশগ্রহণ করেছেন উদ্যোক্তা। পাশাপাশি অনলাইন পেইজের মাধ্যমেও পণ্য বিক্রয় করছেন তিনি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে উদ্যোক্তা সম্মাননা মিলেছে বেশ কয়েকটা।

নিজের কাজে আর কোনো বাধা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, “বর্তমানে আমি আমার বাসার ২য় তলায় ফ্ল্যাট নিয়ে অফিস করে আমার ব্যবসা পরিচালনা করছি। যেখানে স্থায়ীভাবে ২০ জন এবং অস্থায়ী ২৫-৩০ জন কর্মী কাজ করছে। ঢাকার বাইরেও আমার কর্মীরা কাজ করে। কাজ শেষে তারা পণ্যগুলো কুরিয়ারের মাধ্যমে আমার কাছে পাঠিয়ে দেয়।

উদ্যোক্তার তৈরি বিভিন্ন ধরণের ক্লে পণ্য

তিনি বলেন, আমি মনে করি প্রতিটি নারীকে স্বাবলম্বী হতে হবে। কিছু করবো বললে হবে না, সব বাধা বিপত্তি এড়িয়ে আগে কাজ শুরু করতে হবে, আর সেক্ষেত্রে নিজের ইচ্ছাশক্তিই সবচেয়ে বড় শক্তি।

 

ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তাবার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here