পুষ্টিগুণের পাওয়ার হাউস বলা হয় ড্রাই ফ্রুটসকে। শুকনো ফল ও বাদামই ড্রাই ফ্রুটস নামে পরিচিত। এরকম অনেকগুলো প্রাই ফ্রুটস যখন সমন্বয় করে একসঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া হয় অধিকতর পুষ্টির নিশ্চয়তায় একেই মিক্সড ড্রাই ফ্রুটস বলা হয়ে থাকে।
মিক্সড ড্রাই ফ্রুটসে আয়রন, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, বিভিন্ন ভিটামিন, এসেন্সিয়াল ফ্যাট এবং অন্যান্য বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের চমৎকার একটি উৎস।
একাধিক রোগ থেকে মুক্তি দেয় ড্রাই ফ্রুটফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টসে ভরপুর থাকে ড্রাই ফ্রুটস। যা প্রতিদিনের ডায়েটে থাকলে ডায়াবেটিস ও ওবেসিটির মতো রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ড্রাই ফ্রুট অন্ত্রের সমস্যা বা ক্যানসারের মতো রোগ থেকে দূরে রাখে।
বর্তমান সময়ে খাবারে ভেজাল ও কেমিক্যাল বিহীন পাওয়া খুব কঠিন ও কষ্টসাধ্য ব্যাপার। ভালো খাদ্যপণ্যের সরবারাহের জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতোকত্তর সম্পন্ন করা ফরহাদ হোসেন রাজুর এই যাত্রা।
দুটি চাকরির করেও মন টিকাতে পারেননি। তাইতো উদ্যোক্তা জীবন বেছে নিয়েছেন। ‘ফ্রেশমেটজ’ নামে উদ্যোক্তার অনলাইনে একটি পেইজ আছে।
কেনো উদ্যোক্তা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন জানতে চাইলে উদ্যোক্তা বার্তাকে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘‘উদ্যোক্তা হয়েছি ভালো খাদ্যের সরবারাহের উদ্দেশ্যে। ভালো খাই, ভালো খাওয়াতে চাই। আমার উদ্যোগের স্লোগান ‘ফ্রেশমেটজ যা দেয়, তাই বলে’। আমি চাই বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ ভালো, হালাল, খাঁটি পণ্য নিয়ে এগিয়ে যাবে। খাদ্যাভ্যাসের ক্ষেত্রে খাঁটি পণ্যের ব্যবহার করবে। ড্রাই ফ্রুটস মিক্সড যেহেতু আমাদের শারিরীক ও মানসিক বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, সেই জন্য প্রথমে এই পণ্য নিয়ে কাজ শুরু করি।’’
উদ্যোক্তা আরও বলেন, ‘‘উদ্যোগের প্রথম থেকেই চিন্তা ছিলো হালাল ও খাঁটি পণ্যের সরবারাহ করা। সেই অনুযায়ী উদ্যোগের প্রথমে মিক্সড ড্রাই ফ্রুটস নিয়ে শুরু করি,ফুডগ্রেডের বোতলে রেখে দেখলাম ২ মাস পরেও ঠিক আছে, নিজেই খেলাম, সব কিছু ঠিক থাকার পরিপ্রেক্ষিতে ড্রাই ফ্রুটস মিক্সড নিয়ে যাত্রা শুরু করি।’’
উদ্যোক্তা ফরহাদের জন্ম যশোরের কেশবপুর উপজেলাতে হলেও বাবার চাকরিসূত্রে তার বেড়ে ওঠা নড়াইল জেলাতে। বর্তমানে তিনি ঢাকা থেকে তার উদ্যোগ পরিচালনা করছেন। তার প্রতিষ্ঠানে দুইজন মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
কী কী পণ্য নিয়ে কাজ করছেন জানতে চাইলে উদ্যোক্তা বলেন, ‘‘ড্রাই ফ্রুটস মিক্সড, সকল ধরনের শুকনো জাতীয় বাদাম, খাঁটি নারিকেল তেল, কাঠের ঘানিতে ভাঙ্গানো সরিষার তেল, কালোজিরা তেল, আজওয়া ও মরিয়ম খেজুর, ক্যালিবার ডেটস(বাদাম খেজুর) ইত্যাদি নিয়ে কাজ করছি। ’’
এখনো বিদেশে রপ্তানি না করলেও বাংলাদেশের ৫১টি জেলাতে তার পণ্য পৌঁছে গেছে। মাত্র ৩০০০ টাকা পুঁজি দিয়ে প্রথম যাত্রা শুরু করেন উদ্যোক্তা ফরহাদ আহমেদ রাজু। পণ্যের চাহিদার উপর নির্ভর করে পণ্য উৎপাদন করেন। একটি সুপার শপেও নিয়মিত পণ্য দেন উদ্যোক্তা। বর্তমানে মাসে ৫০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করছেন উদ্যোক্তা।
ভবিষ্যতে নিজের উদ্যোগ নিয়ে বড় কিছু পরিকল্পনা আছে উদ্যোক্তা রাজুর। সব সময় খাঁটি পণ্যের সরবারাহের ব্যবস্থা করতে চান। পাশাপাশি কিছু মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে চান।
তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে উদ্যোক্তা ফরহাদ বলেন, ‘‘যে পণ্য নিয়েই কাজ করা হোক না কেন সেই পণ্যের ব্যাপারে ভালো পড়াশোনা, জ্ঞানার্জন করতে হবে। পণ্যের ভালো সোর্সিং থাকতে হবে। পাশাপাশি বাজার ব্যবস্থার উপর ভালো খেয়াল রাখতে হবে। পণ্য নিয়ে ভালো রিসার্চ করতে হবে, তাহলে অনেক তাড়াতাড়ি ভালোভাবেই এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।’’
সাইদ হাফিজ
উদ্যোক্তা বার্তা, খুলনা