ফ্রিল্যান্সিং থেকে আব্দুর রহমানের মাসে আয় প্রায় দেড় লাখ টাকা

0

ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিংয়ে নিয়মিত বৈদেশিক মু্দ্রা আয় করে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা আব্দুর রহমান।

ফ্রিল্যান্সিং থেকে মাসে আয় করছেন প্রায় দেড় লাখ টাকা। নিজের উপার্জন থেকেই কম্পিউটার এবং প্রয়োজনীয় ডিভাইস কিনে, সমৃদ্ধ একটি আইটি ফার্ম গড়েছেন। যেখান থেকে প্রতিবছর এক হাজার ২০০ ফ্রিল্যান্সার তৈরি হচ্ছে।

নিজে আউটসোর্সিং করতেন এবং ফেসবুক প্রোফাইল থেকে বন্ধুদের আহ্বান জানাতেন শেখার জন্য। পরে ব্যাপক সাড়া মিললে ২০১৬ তে নিজের জমানো মাত্র সাড়ে ১২ হাজার টাকার মূলধন নিয়ে রাজশাহীতে র‌্যাম আইটির যাত্রা শুরু করেন। বর্তমানে রাজশাহী শহরের জিরো পয়েন্টে র‌্যাম আইটি অবস্থিত।

র‌্যাম আইটির কোর্স এবং সার্ভিসগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে আব্দুর রহমান উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, ‘‘অনলাইন বেসিক, এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন), এসএমএম (সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং), ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন সহো আরো বেশ কিছু কোর্স আমরা করিয়ে থাকি এবং আমাদের সার্ভিস গুলোর মধ্যে আছে ‘ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট, সিকিউরিটি সলিউশন ইত্যাদি।’’

এছাড়াও তিনি আরও বলেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমরা একটি মেডিসিন অ্যাপ চালু করতে চলেছি। যেখানে আপনারা অনলাইনে কোন মেডিসিন যে কোন সময় অর্ডার করলে ড্রোনের মাধ্যমে তা মূহুর্তেই আপনার হাতে পৌঁছে যাবে।এছাড়াও আমরা টেলিকমিউনিকেশন এবং ই-কমার্স সেক্টরের বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করে থাকি।

কাউন্সিলর, প্রশিক্ষক, ফার্ম ইনচার্জ সহ প্রায় ৩০ জনের কর্মসংস্থান করেছেন আব্দুর রহমান। সকলের অক্লান্ত পরিশ্রমে আজ সাড়ে ১২ হাজার টাকার মূলধন থেকে ২৫ লাখ টাকা মূল্যমানের ব্যবসা পরিচালনা করছেন আব্দুর রহমান।

কোর্সের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘র‌্যাম আইটিতে তিন থেকে ছয় মাসের কোর্স করানো হয়। প্রতিটি কোর্সে ২০ থেকে ২৫ জন শিক্ষার্থী থাকে। বিভিন্ন শিফটে কোর্স গুলো করানো হয়। এভাবে বছরে প্রায় এক হাজার ২০০ জন ফ্রিল্যান্সার তৈরি হয় র‌্যাম আইটি থেকে। যারা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশকে অর্থনৈতিক দিক থেকে এগিয়ে নিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।’

কোন স্পৃহা আপনাকে প্রযুক্তি উদ্যোক্তা তৈরি করল এমন প্রশ্নের উত্তরে আব্দুর রহমান বলেন, ‘২০০০ সালের আগে বা কিছু বছর পরেও দেশে খুব একটা মোবাইলের প্রচলন ছিল না। বাবা ব্যবসায়ী হওয়ায় তার ফোন ছিল। আমি তখন গেম খেলা এবং ফোনের প্রতি আসক্ত হয়েছিলাম।শিক্ষার্থী জীবনেও আমি গেমসের নেশায় আসক্ত ছিলাম। তখন থেকেই বুঝতে পারি আমার আইসিটি সেক্টরের প্রতি ঝোঁক আছে। এভাবেই আমি আউট সোর্সিং, ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে ধারনা লাভ করি।এর পর আমি আউটসোর্সিং শুরু করি একটা সময় এটি নেশা হয়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘রাজশাহীতে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হয়ে সেখান থেকে পড়াশোনা করি। তখন থেকে আমি দু’একজন কে আউটসোর্সিং সম্পর্কে জানায় কি করে এটি করতে হয় এগুলো শেখায়। একটা সময় আমার মনে হলো আমার এই ভালো লাগার বিষয়কে নিয়ে এমন কিছু করবো যাতে আরো দশজন বেকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। এভাবেই আমার নেশাকে পেশায় পরিণত করলাম।’

তরুণদের উদ্দেশ্যে আব্দুর রহমান বলেন, ‘আপনারা যারা উদ্যোক্তা হতে চাচ্ছেন সেটা আইসিটি সেক্টর হোক বা অন্য কোন সেক্টর আপনারা আগে যথাযথ পরিকল্পনা করুন। এখনকার তরুণ সমাজের অনেকেই আপনারা পুঁজি সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভাবেন আমি বলবো পুঁজিকে গুরুত্বপূর্ণ না ভেবে পরিকল্পনা করুন, যে বিষয় বাছাই করলেন তা নিয়ে বিশদে জানুন, জ্ঞান অর্জন করুন। শ্রম দিয়ে যান সফলতা আসবেই।’

তামান্না ইমাম
রাজশাহী ডেস্ক ,উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here