হালকা প্রকৌশল শিল্প ও এবং মোটরসাইকেল শিল্পের উন্নয়নে সবাইকে সাথে নিয়ে নীতিমালা তৈরি ও বাস্তবায়ন করবে সরকার।

মোটরসাইকেল শিল্পের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ উন্নয়ন প্রেক্ষিত ওয়েবিনারের আয়োজন করে এসএমই ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শিল্পসচিব কে এম আলী আজম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (শুল্ক নীতি ও আইসিটি) সৈয়দ গোলাম কিবরীয়া এবং বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক) এর মহাপরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী। ওয়েবিনারে প্যানেল আলোচক হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতি’র সভাপতি মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, মোটরসাইকেল ম্যানফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাফিজুর রহমান খান এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ সেলিম উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সফিকুল ইসলাম।

মূল প্রবন্ধে বিটাক-এর পরিচালক ড. সৈয়দ এহসানুল করিম বলেন, দেশে ২১শ’ কোটি টাকার মোটর সাইকেলের বাজারের মধ্যে দেশীয় শিল্পের দখলে মাত্র ২০ কোটি টাকার বাজার। প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হলে মাত্র ৫ থেকে ৭ বছরে ২১শ’ কোটি টাকার পুরোটাই দেশীয় শিল্পের দখলে আনা সম্ভব।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পসচিব কে এম আলী আজম বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এজন্য শিল্পায়নের কোন বিকল্প নেই। তাই সবাইকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন শিল্পের নীতি তৈরি ও বাস্তবায়ন এবং সহায়তা করতে চায় সরকার। হালকা প্রকৌশল শিল্পকে গুরুত্ব দিয়েছেন বলেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই শিল্পকে ২০২০ সালের বর্ষপণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছেন। দেশের শিল্প খাতের বিকাশে সরকারের এই ঘোষণা ও বিভিন্ন উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

বিশেষ অতিথি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (শুল্ক নীতি ও আইসিটি) সৈয়দ গোলাম কিবরীয়া বলেন, শুল্ক ও আমদানি পর্যায়ে সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতাসমূহ নিয়ে মোটরসাইকেল অ্যাসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করতে পারেন। শিল্প ও বাণিজ্য খাতকে ন্যায়সঙ্গত সব ধরনের নীতি সহায়তা দিয়ে প্রস্তুত আছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

বিশেষ অতিথি বিটাক মহাপরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, মোটরসাইকেল শিল্পে দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে বিটাক। এর ফলে এই খাতের কারিগরি সক্ষমতা বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের সভাপতি এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, বর্তমানে দেশের প্রয়োজনীয় হালকা প্রকৌশল খাতের ৭০ হাজার কোটি টাকার পণ্যের চাহিদার মাত্র তিন ভাগের এক ভাগ দেশীয় শিল্পসমূহ সরবরাহ করে থাকে। আগামী পাঁচ বছরে দেশের মোটরসাইকেলের বাজার দ্বিগুণেরও বেশি বাড়তে পারে। তাই এই খাতের বিভিন্ন সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে দেশের শিল্পায়নকে এগিয়ে নেয়ার আহবান জানান তিনি।

ওয়েবিনারে জানানো হয়, বর্তমানে দেশে উদীয়মান বৃহৎ শিল্পসমূহের মধ্যে মোটরসাইকেল অন্যতম। দেশে ৭টি স্থানীয় ও ৮টি আন্তর্জাতিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসহ মোট ৩৮টি মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী ও সংযোজনকারী শিল্প রয়েছে। এ শিল্পের বার্ষিক উৎপাদন আনুমানিক ৪ লাখ ৪০ হাজার ইউনিট, যা মোট চাহিদার ৮০%। এ শিল্পের উন্নয়নে ইতোমধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় মোটরসাইকেল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা ২০১৮ প্রণয়ন করেছে। কিন্তু এখনো এ শিল্পের অধিকাংশ উপকরণ যেমন- মোটরসাইকেল চেসিস, চাকা, হ্যান্ডেল বার, ব্রেক সিস্টেম, ফুয়েল ট্যাংক, প্লাস্টিকের পণ্য (মাড গার্ড, ফেন্ডার, সাইড কভার) ইত্যাদি বিদেশ থেকে আমাদনি করতে হয়। দেশীয়ভাবে এসব উপকরণ উৎপাদন সম্ভব হলে একদিকে যেমন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, অন্যদিকে উৎপাদন ব্যয় হ্রাস ও বিপণন বৃদ্ধির মাধ্যমে বাড়বে সরকারের রাজস্ব আয়।

ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here