২০১৬- বর্ষসেরা এস এমই উদ্যোক্তা কাজী সাজেদুর রহমান

রূপসার ক্ষরস্রোত আর সুন্দরবনের মাটির গন্ধে বেড়ে ওঠা বলেই হয়তো আমার দুরন্তপনার কারন। এমন কোন দিন ছিলোনা আমি শ্রেনীকক্ষের জানালা দিয়ে স্কুল পালাইনি। তাই বলে খুলনা জিলা স্কুলের ছাত্র হিসেবে সুনাম কম ছিলো না।

লেখাপড়াই শুধু না, স্কুলের ফুটবল টিমের অধিনায়ক থেকে শুরু করে ক্রিকেট মাঠেও বিচরণ আর সেই সাথে আমার সব থেকে প্রিয় ব্যাডমিন্টন খেলায় চ্যাম্পিয়ন যা কলেজ থেকে গড়িয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পর্যন্ত। দুষ্টুমির কারনে বাবা প্রথম বর্ষেই ঘর ছাড়া করেন। তারপরও থেমে থাকেনি চলার গতি। এজন্য বাবার উপর কোনো রাগও ছিলো না আমার, কারন ওটাই ছিলো আমার গড়ে ওঠার পেছনে সব থেকে বড় অনুপ্রেরণা।

উদ্যোক্তার স্বপ্নের পণ্য

কথিত আছে, প্রতিটি মানুষের জীবনে একজন আদর্শ থাকে। আমার আদর্শ আমার বাবা। আর আমার সফলতার পেছনে সবথেকে বেশি অবদান আমার মায়ের। যার দোয়া আমার স্বপ্ন পুরণের মূলমন্ত্র।

খুলনা থেকে ঢাকায় আসাটা ছিলো কষ্টের। পরিবারের ভালবাসা ও বন্ধুদের চোখের পানি উপেক্ষা করে সম্পুর্ণ অজানা এক গন্তব্য। ধানমন্ডি ১৫ নাম্বার, হাতেমবাগ মসজিদে ছাদের উপর চিলেকোঠার কামরায় ৪ জনের একজন আমি। ৪৭ টি নিয়মের মধ্যে এই হোস্টেলের নিয়ম বাঁধা। যার সার্বিক তত্ত্বাবধানয় করতেন সবার প্রিয় মহসিন ভাই। ২৪ ঘন্টা সময়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে পড়া থেকে শুরু করে ১০ ঘণ্টা বই পড়ার কঠিন অনুশাসন। বই পড়ার বিষয়টা আমার মত বাউন্ডুলে ছেলের জন্য কঠিন হওয়ায় পড়ার বইয়ের নীচে গল্পের বই পড়েই আমি নিয়মকে শ্রদ্ধা জানিয়েছিলাম। আর চৌকির ওপর তোষক কেনার টাকা না থাকায় গল্পের বই বিছিয়ে তাঁর উপর চাদর ছড়িয়ে দিয়ে ঘুমিয়েছি দীর্ঘ দিন। যেদিন যোগাড় হয়নি হোস্টেলের খাবারের মিলের টাকা চলে গিয়েছি বুয়েটের হলে বড় ভাইদের খাবারে ভাগ বসাতে।

কেপিসি পেপার কাপ

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার পাশাপাশি শ্রেনীকক্ষের বন্ধুদের পড়িয়ে যে টাকা আসতো তা দিয়ে দিন চলে যেতো। কিন্তু মনের ভিতরের সুপ্ত বাসনা ঠিকই বাকি থেকে যেতো।

দীর্ঘদিন মায়ের মুখ দেখতে না পাওয়ার বাসনা আর নিজেকে প্রমান করতে পারার স্পৃহা আমার অনুসন্ধানী মনকে কখনো শান্ত থাকতে দেয়নি।

চলবে…

তরুণ সফল উদ্যোক্তা কাজী সাজেদুর রহমান 
বর্ষসেরা এস এমই উদ্যোক্তা -২০১৬

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here