‘শীর্ষ বাজার’ ও ‘শীর্ষ এ্যাপারেলস’ নিয়ে স্বাবলম্বী ইফফাত

0
উদ্যোক্তা- ইফফাত সোলায়মান লুবনা

এস,এস,সি ছিলো যশোর বিভাগ থেকে,এইস,এস,সি রাজশাহী বিভাগ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বর্তমানে প্রভাষক হিসাবে সিরাজগঞ্জের রিভারভিউ আইডিয়াল কলেজে কর্মরত। তবে নিজেকে একজন উদ্যোক্তা বলতেই তিনি বেশী ভালোবাসেন।

স্বাধীন ভাবে কাজ করার একটা আলাদা আনন্দ সেটাকে উপলব্ধি করতে চান উদ্যোক্তা। নিজের উদ্যোগে স্বাধীন ভাবে কাজ করার যে ব্যাপার সেটা তার খুবই ভালো লাগে। পরিশ্রম করতে কষ্ট হলেও বরং ভালোলাগে সেই পরিশ্রম টাও। এমনটাই জানান এই উদ্যোক্তা। কাজকে ভালোবেসে কাজ করেন। চাকরি অনেকেই করে, নিয়মবাধা এই কাজের মাঝে নিজেকে প্রকাশ করার তেমন কোনো জায়গা থাকেনা।

নিজের প্রতিভা, কাজকে তুলে ধরার জন্য, নিজের আলাদা পরিচয় তৈরী করার জন্য উদ্যোক্তা জীবনের কোনো বিকল্প নেই।

উদ্যোক্তা বার্তা

প্রতিকূলতা পেরিয়ে এগিয়ে যাওয়াটা কষ্টকর হলেও ক্রেতার রিভিউ পেলে মন ভরে যায়,গর্বে ভরে ওঠে বুক। নারীরা এখন আর অবহেলার পাত্রী নয়। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও সব কাজ করছে এবং দেখিয়ে দিচ্ছে নারীরাও পারে।

এমনটাই জানাচ্ছিলেন উদ্যোক্তা। একজন নারী উদ্যোক্তা হিসাবে তিনিও গর্বিত।

তার উদ্যোগ শুরু হয় ২০০০ সাল থেকে। প্রথমে ছাগল পালন,তারপর গরু, মুরগী, কাপড়ের শোরুম, বর্তমানে অনলাইনে একটি পেজ আছে যার মাধ্যমে সিরাজগঞ্জের ঘি, গরুর ঘানিতে ভাঙানো খাঁটি সরিষার তেল, কালোজিরার তেল, গুড়া মশলা,শাড়ি, গামছা, থ্রি পিস লুঙ্গি সেল করছেন। উদ্যোক্তার একটি মিনি গার্মেন্টসও আছে যেখানে নরমাল লুঙ্গি থেকে স্মার্ট লুঙ্গি ও পাঞ্জাবী তৈরি করা হচ্ছে। সেই উদ্যোগের বয়স ২ বছর।

উদ্যোক্তার যখন বিয়ে হয় তখন তিনি দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন।তার স্বামীও ছিলো ছাত্র। বছর না ঘুরতেই তিনি মা হয়ে যান।তাই অর্থের প্রয়োজনেই উদ্যোক্তা জীবন শুরু করেন।

উদ্যোক্তা বার্তা

উদ্যোক্তার স্বপ্ন “শীর্ষ বাজার”ও “শীর্ষ এ্যাপারেলস”একদিন একটা ব্র্যান্ড হবে।
উদ্যোক্তা সিরাজগঞ্জ থেকে কাজ করছেন দেশি গরুর দুধ থেকে তৈরী খাঁটি গাওয়া ঘি,গরুর ঘানিতে ভাঙানো খাঁটি সরিষার তেল, কালোজিরার তেল, গুড়া মসলা, শাড়ি, থ্রি পিস, গামছা নিজস্ব কারখানায় তৈরি পাঞ্জাবী, কূর্তি নরমাল লুঙ্গি ও স্মার্ট লুঙ্গি নিয়ে।

উদ্যোক্তা জানান তার প্রথম বাধা ছিলো তার পরিবার।ঘরের বউ চাকরি করবে সেটা মেনে নিলেও শাড়ি,কাপড় বিক্রি করবে,বাজারে গিয়ে কাঁচামাল কিনবে সেটা মোটেও ভালোভাবে নিত না পরিবারের লোকজন। তার পরিশ্রম,সেল ও ধৈর্য্য ধরে লেগে থাকতে দেখে, তার একটু একটু করে এগিয়ে যেতে দেখে এখন তার পরিবারের সকলেই তার পাশে আছেন শক্তি হয়ে।

বর্তমানে উদ্যোক্তা কর্মচারীর সংখ্যা ১১ জন। তার পণ্য সারাদেশেই যায় এমনকি দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও গিয়েছে। আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, আরব আমিরাত,লন্ডনেও গিয়েছে। কোরিয়ার মার্কেটে উদ্যোক্তার শীর্ষ এ্যাপারেলসের স্মার্ট লুঙ্গি ও পান্জাবী বিক্রি হচ্ছে।

উদ্যোক্তা বার্তা

আজ তিনি যতটা সফলতা পেয়েছেন তার পুরো কৃতিত্ব উইমেন অ্যান্ড ই কমার্স গ্রুপ (WE) এর।উইয়ের মাস্টারক্লাসগুলোতে তিনি শিখেছেন কি করে ক্রেতা সামলাতে হয়। কি করে ধৈর্য্য ধরে লেগে থাকতে হয়,তার পণ্যের টার্গেট কাস্টমার কারা। কিভাবে নিজের পণ্যকে আকর্ষণীয় করে ক্রেতার কাছে তুলে ধরতে হয় ইত্যাদি। উইয়ের পর উদ্যোক্তা পরিবার এখন আমার পাশে আছেন।

উদ্যোক্তা তার “শীর্ষ বাজার”কে একটি ব্র্যান্ড হিসাবে দেখতে চান। তার শীর্ষ এ্যাপারেলসকে আরো বড় করতে চান। অসহায় মেয়েদের ভরসা হয়ে পাশে থাকবে উদ্যোক্তার শীর্ষ বাজার এটাই উদ্যোক্তার প্রত্যাশা।

মাসুদা শারমিন সুমি
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here