শিক্ষকতা ছেড়ে উদ্যোক্তা হলেন তাছলীমা খানম

0

মেয়েদের সকল ধরনের লেডিস আইটেম নিয়ে কাজ করছেন উদ্যোক্তা তাসলিমা খানম। ২০১৫ সালে শিক্ষকতার পাশাপাশি মিরপুর, ইসলামপুর, গাউছিয়া থেকে পাইকারি পোশাক এনে পরিচিতদের মাঝে সেল করতেন। তারপর ২০২০ সালে করোনা কালীন সময়ে মাত্র ৩ জন কারিগর নিয়ে একটি ছোট্ট ফ্যাক্টরি দেন তিনি৷ সম্পূর্ন নিজের ডিজাইন এবং সেই সাথে কাস্টমাইজড ডিজাইন দিয়ে বিভিন্ন লেডিস আইটেম তৈরি শুরু করেন।

স্বল্প লাভে বিক্রি করায় বেশ ভালো সাড়া পান তিনি। তারপর তিনি ডিজিটাল প্রিন্টের মেশিন কিনেন সেখান থেকে শুরু তার নিজস্ব প্রোডাকশন। ২০২১ সালে ভাষানটেক দেওয়ানপাড়ায় একটি আউটলেট দেন, পাশাপাশি সেখানে রয়েছে তার ফ্যাক্টরি। শুধু নিজের নয়, নিজের পাশাপাশি নতুন উদ্যোক্তাদের জন্যেও তিনি কাজ করে থাকেন। তাদের দেয়া ডিজাইনে তাছলীমা প্রোডাক্ট তৈরি করে দেন অত্যন্ত সুলভ মূল্যে। এছাড়াও অনেক উদ্যোক্তা রয়েছেন যারা বিভিন্ন মেলায় তাছলীমা প্রোডাক্ট পাইকারি নিয়ে সেল করে থাকেন।

নতুন উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নিজের প্রেষণা থেকে কাজটা করতে হবে। কাজের প্রতি ভালো লাগা না থাকলে, ধৈর্য্য, সাহসিকতা, সততা এগুলো যদি নিজেদের মধ্যে না থাকে তাহলে কোনো উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা সম্ভব না। তাই উদ্যোক্তা হতে হলে কাজের প্রতি ভালোবাসা এবং ডেডিকেশন থাকাটা জরুরি।

স্বামী, সন্তান এবং পরিবার পরিজনদের সহযোগিতায় তাছলীমা খানম আজ একজন উদ্যোক্তা। তিনি মনে করেন পরিবারের সাপোর্ট ছাড়া একজন নারীর পক্ষে বেশিদূর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব না।

৩ জন কর্মী থেকে বর্তমানে ১০ জন কর্মী তাসলিমার সাথে কাজ করছে। ঢাকা, চিটাগং, শেরপুর, জামালপুর, যশোর, কুমিল্লা, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন জেলায় তাসলিমা পণ্য পৌঁছে গেছে। ইউকে, মালয়েশিয়া তেও তার প্রোডাক্ট গিয়েছে। কটনের উপর নানান নকশা এবং এক্সক্লুসিভ ডিজাইনের কারণে তাসলিমার পোশাকগুলো ক্রেতাদের নিকট বেশ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। তিনি বলেন, কটন নিয়ে কাজ করতে আমার ভালো লাগে। তাই কটনের উপর নতুন আঙ্গিকে নতুন ডিজাইনের ড্রেস তৈরির চেষ্টা করি। এক্সপোর্ট কোয়ালিটির কটনের সাথে চায়না টিস্যু কাপড়ের সংমিশ্রণে একটি ড্রেস তৈরি করি যা এ পর্যন্ত ২০ হাজার পিস সেল করেন।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে উদ্যোক্তা তাছলীমা খানম বলেন, আমার ইচ্ছা আছে আমার এই ফ্যাক্টরি টা গার্মেন্টসে পরিণত করতে এবং সারা বাংলাদেশে আমার পণ্য পৌঁছে দিতে চাই সেই সাথে বিদেশে রপ্তানি করার ইচ্ছা আছে।

সম্প্রতি উদ্যোক্তা তাসলিমা খানম আয়োজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ফেব্রুয়ারি এবং মার্চে ঢাকার সেনানিবাসের এম ই এস কনভেনশন হলে ২টি ইভেন্ট আয়োজন করে বেশ সাড়া পেয়েছেন তিনি।

শিক্ষকতা ছেড়ে এখন একজন পুরো দস্তর উদ্যোক্তা তাসলিমা খানম। নিজের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে আরো ১০ জনকে স্বাবলম্বী করেছেন সেই সাথে নতুন নতুন উদ্যোক্তাদের অনুপ্রেরণা দিচ্ছেন, তাদের উদ্যোগকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছেন।
মেলা আয়োজনের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের পণ্যের প্রসারেও কাজ করে যাচ্ছেন তাসলিমা খানম।

সেতু ইসরাত
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here